Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কার্ড থাকলেই শিল্পীদের সুবিধা

কেন্দ্রীয় সরকারের বস্ত্র মন্ত্রকের উদ্যোগে হস্তশিল্পীদের একদিনের সচেতনতা শিবির হয়ে গেল মঙ্গলবার কেন্দা থানার রাজনওয়াগড় গ্রামে। পশ্চিমবঙ্গ শবর খেড়িয়া কল্যাণ সমিতির অফিস চত্বরের ওই শিবিরে হুড়া, বান্দোয়ান, কেন্দা, পুঞ্চা, বোরো প্রভৃতি থানা এলাকার হস্তশিল্পীরা এবং বস্ত্র মন্ত্রক ও জেলা শিল্প কেন্দ্রের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজনওয়াগড় শবর সমিতির অফিসে চলছে প্রদর্শনী।—নিজস্ব চিত্র।

রাজনওয়াগড় শবর সমিতির অফিসে চলছে প্রদর্শনী।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকারের বস্ত্র মন্ত্রকের উদ্যোগে হস্তশিল্পীদের একদিনের সচেতনতা শিবির হয়ে গেল মঙ্গলবার কেন্দা থানার রাজনওয়াগড় গ্রামে। পশ্চিমবঙ্গ শবর খেড়িয়া কল্যাণ সমিতির অফিস চত্বরের ওই শিবিরে হুড়া, বান্দোয়ান, কেন্দা, পুঞ্চা, বোরো প্রভৃতি থানা এলাকার হস্তশিল্পীরা এবং বস্ত্র মন্ত্রক ও জেলা শিল্প কেন্দ্রের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ দিন প্রায় ৩০০ জন শিল্পী পরিচয়পত্রের ফর্ম পূরণ করেন। দু’-তিন মাস পরে এখানেই তাঁদের হাতে পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এ দিন সচেতনতা শিবিরে কলকাতার গুরুসদয় মিউজিয়ামের দুই কিউরেটর বিজন মণ্ডল ও দীপক বড়পণ্ডা এবং শবর সমিতির প্রকল্প আধিকারিক প্রশান্ত রক্ষিত, জেলার সাংসদের প্রতিনিধি হিসাবে নবেন্দু মাহালি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বস্ত্র মন্ত্রকের রিজিওনাল অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর (ডিজাইন অ্যান্ড টেকনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার) সুবীরকুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘সারা দেশে প্রায় ৭০ লক্ষ হস্তশিল্পী আছেন। তাঁদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৫ লক্ষের বেশি শিল্পী রয়েছেন। এর বাইরেও বেশ কিছু শিল্পী রয়েছেন। আমরা সমস্ত হস্তশিল্পীদের পরিচিতিপত্র তৈরির কাজ শুরু করেছি।’’ পুরুলিয়া জেলা শিল্প কেন্দ্রের ম্যানেজার কৌশিক মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত হস্তশিল্পীদের ‘এগিয়ে বাংলা’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছি।’’

কী আছে এই প্রকল্পে?

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য, গ্রামে যে সব হস্তশিল্পী আছেন, তাদের নিবন্ধীকরণ করা, পরিচয়পত্র প্রদান, কাজের জন্য কাঁচা মালের জোগান নিশ্চিত করা, হস্তজাত সামগ্রীর বাজার জাতকরণ এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শিল্পীর মজুরি প্রদান করা।

হস্তশিল্পীদের ইতিপূর্বে সরকারি উদ্যোগে পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। আধিকারিকদের অভিজ্ঞতা, অনেক শিল্পী ওই পরিচয়পত্র নবীকরণ করাননি। আবার অনেকেই তালিকার বাইরে থেকে গিয়েছেন।

আধিকারিকরা জানান, শিল্পীরা যেন তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তাহলে সরকারি উদ্যোগে যে সব মেলা ও অনুষ্ঠান হয়, সেই সব খবর তাঁরা পাবেন। সরকারি অন্যান্য সুযোগ সুবিধারর হদিস পাবেন। পরিচয়পত্র থাকলে কোনও আমানত বন্ধক ছাড়াই ব্যাঙ্কে ঋণের সুবিধা মিলবে। এ ছাড়া যারা রাজ্য ও জাতীয় স্তরে হস্তজাত শিল্প প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হবেন, তাঁরা ৬০ বছর হলেই পেনশন পাওয়ার অধিকারী হবেন। একক অথবা গোষ্ঠীজাত শিল্প সামগ্রী মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য বিবেচিত হলে তাঁরা যাতায়াতের ভাড়া, থাকা-খাওয়ার জন্য সরকারি খরচ পাবেন।

আধিকারিকদের মতে, বাজার ধরতে গেলে অনেক শিল্পীরই দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের ছোঁয়া থাকা দরকার। এ কারণে মন্ত্রকের উদ্যোগে শিবির করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁদের মতে, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে হাতের কাজে নিয়মিত নকশা বদল এবং অভিনবত্বের ছোঁয়া থাকলে সেই হস্তজাত জিনিসের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে কদর বাড়ে। হস্তজাত শিল্পের বাজার বাড়লে শিল্পী এবং সংস্থার আয় এবং সুনাম দুই বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

handicrafts workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE