Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

জমি-মালিক কে, সমীক্ষা লোবায়

লোবায় কয়লা খনি সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতির সভাপতিত্বে ওই উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা।

বৈঠক: লোবার ফকিরবেড়া গ্রামে। বুধবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

বৈঠক: লোবার ফকিরবেড়া গ্রামে। বুধবার। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

খোলামুখ কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। কিন্তু সেই জমির প্রকৃত মালিক কে, খুঁজে বের করতে সমীক্ষা শুরু হল লোবায়।

কী উদ্দেশে সমীক্ষার কাজে হাত দেওয়া হচ্ছে, বুধবার লোবার ফকিরবেড়া গ্রামে চাষিদের নিয়ে এক বৈঠকে সে কথাই বোঝান জমি সমীক্ষা দলের সদস্যেরা। উপস্থিত ছিলেন লোবায় প্রস্তাবিত খাগড়া-জয়দেব খোলামুখ কয়লাখনি গড়ার বরাত পাওয়া ডিভিসি-র (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) প্রতিনিধিও।

লোবায় কয়লা খনি সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলতে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতির সভাপতিত্বে ওই উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে রয়েছেন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। আছেন ডিভিসি-র আধিকারিক, জন প্রতিনিধি, কৃষিজমি রক্ষা কমিটির প্রতিনিধিরাও। গত মাসের চার তারিখ জেলা পরিষদে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, কী ভাবে জমি অধিগ্রহণ, মূল্য কত, পূনর্বাসন প্যাকেজ কী সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পরে। আগে লোবায় প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকার একটি সার্বিক সমীক্ষা হবে। এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিভিসিকে একটি কার্যালয় খুলতে হবে। বুধবার তারই সূচনা হল।

জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, ‘‘কত জমি অধিগৃহীত হবে, মোট জমি মালিকের সংখ্যা কত, এলাকায় কত মানুষ বাস করেন, তাঁদের মধ্যে কত জন চাষি, কত জন ভাগচাষি বা কৃষি শ্রমিক। তাঁদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান কী সমীক্ষার করে দেখা হবে। সমীক্ষা শেষে পরবর্তী ভাবনা শুরু হবে।’’

জমির উপযুক্ত দাম ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে লোবায় কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আন্দোলনের জেরে ২০১২ সালে থমকে গিয়েছিল প্রস্তাবিত কয়লা খনি গড়ার কাজ। আপত্তি তোলা হয়েছিল জমি কেনার পদ্ধতি ঘিরেও। এলাকার ১০টি প্রস্তাবিত ৩৩৫৩ একরের জমির মধ্যে প্রায় ৭০০ একর জমি কিনলেও কাজ থেকে পুরোপুরি হাত গুটিয়ে নিয়েছিল পিপিপি ভিত্তিতে গড়া ডিভিসি-এমটা প্রকল্প। পরে সুপ্রিম কোর্ট যে ক’টি কোলব্লক বণ্টন অবৈধ ঘোষণা করে, সেই তালিকায় ছিল লোবায় খাগড়া-জয়দেব প্রস্তাবিত খোলামুখ কয়লাখনিও। পরে ফের মাটির নীচে কয়লা তোলার বরাত পায় দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন।

পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে এ বার অনেক বেশি সতর্কতা নিয়ে এগোতে চায় প্রশাসন ও দায়িত্ব প্রাপ্ত সংস্থা। বুধবার ফকিরবেড়া গ্রামে গিয়েছিলেন পাঁচ সর্ভেয়ার, ডিভিসির প্রতিনিধি সহ ৮ জনের দল। ফকিরবেড়ায় মসজিদে বসে শ’খানেক চাষিদের তাঁরা বোঝান। তাঁরা জমির দর দাম করতে নয়, এসেছেন দাগ-খতিয়ান নম্বর ধরে প্রকৃত মালিককে খুঁজে পেতে। মালিকানা আগে যাঁর নামে ছিল, বর্তমানে সেটা অন্যের হাতে চলে আসতে পারে।

কিন্তু রেকর্ড পর্চায় সেগুলি ঠিক করে নেওয়া জরুরি তা বোঝানো হয়। কারণ জমি অধিগৃহীত হলে প্রকৃত মালিক যেন বঞ্চিত না হন। দলের প্রতিনিধিত্ব করেন শেখ বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, ‘‘কোটা এবং খোঁজ কমলপুর এই দুটি মৌজার প্রস্তাবিত ৫০০ একরের বেশি অধিগ্রহণ করার কথা। যেহেতু ওই মৌজার বেশির ভাগ জমির মলিক এই গ্রামের বাসিন্দা তাই এই গ্রামে বসা হল।’’ চাষিদের সঙ্গে ছিলেন কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘উদ্যোগকে স্বাগত। গত বার এই বিষয়টাই ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Land owner Coal Mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE