ল্যাম্পস নির্বাচনে সব আসনে প্রার্থী দিতে পারল না তৃণমূল। মানবাজার ২ দক্ষিণাঞ্চল ল্যাম্পসের প্রতিনিধি নির্বাচনে সিপিএম ৭৮টি আসনের সব ক’টিতে প্রার্থী দিলেও শাসকদল ৫৩টি আসনের বেশি প্রার্থী দিতে পারল না। বোরো থানার এই বৃহদায়তন বহুমুখী কৃষি সমবায় সমিতি বা ল্যাম্পসের নির্বাচনে এক ধাপ পিছিয়েই নির্বাচনী লড়াই শুরু করেছে তৃণমূল।
৪টি জোন নিয়ে গঠিত এই ল্যাম্পসের নির্বাচন রয়েছে ২৬ মার্চ। ওই চারটির মধ্যে ১২টি আসন রয়েছে বুড়িবাঁধ জোনে। সেখানে একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল। বিরোধী বামেরা এই জোনের ১২টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে। বাকি ৩টি জোনে ৬৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৫৩টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। অর্থাৎ প্রথম ধাপেই তৃণমূল ২৫টি আসনে পিছিয়ে।
আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ল্যাম্পসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। চাষিদের ভর্তুকি-সহ সার ও বীজ দেওয়া, চাষের সহায়ক যন্ত্রাংশ কেনাকাটায় ছাড় দেওয়া, স্বল্প সুদে কৃষিঋণ দেওয়ার কাজ করে ল্যাম্পস। আদিবাসীদের কাছে এই ভূমিকার জন্য রাজনৈতিক দলগুলি ল্যাম্পসের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কব্জায় রাখতে চায়।
এই ল্যাম্পসের নিয়ন্ত্রণ পেতে হলে, ম্যাজিক ফিগার ৪০টি আসন দখল করতে হবে কোনও দলকে। ফলে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সবার মধ্যেই আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু যে প্রশ্নটা উঠে এসেছে, তা হল ল্যাম্পস নির্বাচনে শাসকদল সমস্ত আসনে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হল কেন? আদিবাসীরা কি মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন?
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আদিবাসীরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। আসলে ল্যাম্পসগুলিতে সিপিএম দীর্ঘদিন ধরে তাদের সমর্থকদের সদস্য করে রেখেছেন। নতুন সদস্য নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণেই এই পরিস্থিতি।’’ তাঁর অভিযোগ আগে সিপিএম বিরোধীদের ল্যাম্পসে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে দিত না। তবে তৃণমূলের বুড়িবাঁধ অঞ্চলের নেতারা, কেন এলাকায় একজন প্রার্থীও জোগাড় করতে পারেননি, সে কারণ তাঁর কাছেও স্পষ্ট নয়। তিনি জানান, এ নিয়ে ওই এলাকার নেতাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন।
এই ল্যাম্পসে মোট ভোটারের সংখ্যা ১৯৫৮ জন। তবে সদস্য তারও বেশি। মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিয়তি মাহাতোর দাবি, ‘‘ওই ল্যাম্পসে আমাদের ১৪০০ সদস্য রয়েছেন। কিন্তু নিয়মের জেরে তাঁদের ভোটাধিকার নেই। ভোটাধিকার থাকলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।’’
মানবাজার ২ বিডিও তারাশঙ্কর প্রামাণিক বলেন, ‘‘এর আগে এই বোর্ড মনোনীত সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত হতো। মনোনীত বোর্ড পরিচালিত ল্যাম্পস কর্তৃপক্ষ যে সব নতুন সদস্য নিয়েছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের ভোটাধিকার থাকে না। এ কারণে বেশ কিছু সদস্য ভোট দিতে পারছেন না।’’
বান্দোয়ানের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত বেসরার কটাক্ষ, ‘‘আদিবাসীদের এই সরকার অবহেলা করছে বলেই ওরা প্রার্থী পাচ্ছেন না। এ বারও এই ল্যাম্পসের দখল আমরাই পাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy