ভিজছে প্রদীপ। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বছর দীপাবলিতে বীরভূমে শব্দ-তাণ্ডব হল অনেকটাই কম। অনেকের মতে, সেই কৃতিত্ব পুলিশের, আমজনতার সচেতনতার এবং বৃষ্টির।
পুলিশ সচেতনতা আর ধড়পাকড়ে জোর দিয়েছিল অনেক আগে থেকেই। আর কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছিল ঝিরঝিরে বৃষ্টি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত সেটা চলল নাগাড়ে। সব মিলিয়ে শব্দবাজির দাপট অনেকটা কমেছে বটে। কিন্তু কিনে রাখা কোনও আতসবাজি বৃষ্টিতে জ্বালাতে না পেরে দীপাবলির আনন্দটাই মাটি হয়েছে অনেকের।
তবে সর্বত্রই ছবিটা এক রকম ছিল না। যেমন রামপুরহাটের ধূলাডাঙা রোড। একটি পুজো মণ্ডপের পাশে কাঠগোলা পরিস্কার করে চলছিল বিচিত্রানুষ্টান। সঙ্কীর্ণ রাস্তা জুড়ে হুল্লোর করছিল এক দল যুবক। সঙ্গে আরও কয়েক জন উৎসাহী কিশোর রাস্তার পাশে দেওয়ালে বাজি রেখে তার কেরামতি দেখতে উদগ্রীব। একটা বাজি আকাশে উঠল ঠিকই, রংমশালা হয়ে সশব্দে ফাটলও। কিন্তু, পরেরটা উপরে না উঠে সটান রাস্তায় নেমে ফাটতে শুরু করে। আচমকা এই বিপত্তিতে সকলেই হতচকিত। রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের পায়ে বাজির আগুন ছিটকে লাগে। তারপরেও দাপট কমেনি শব্দবাজির। কাছেপিঠে দেখা যায়নি পুলিশ, প্রশাসনকেও।
বিপরীত ছবি দেখা গিয়েছে সিউড়ি শহরে। সেখানে পুলিশ বাজি ফাটানো নিয়ে আগাম সতর্ক ছিল। রাস্তায়, মণ্ডপে বাজি ফাটালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে আগাম ঘোষণা করেছিল। সেই মতো বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশ দু’জন বাজি বিক্রেতাকে গ্রেফতারও করে। দীপাবলি ও কালীপুজোর সন্ধ্যায় রামপুরহাট মহাজনপট্টি রোড, কামারপট্টি রোড, দেশবন্ধু রোড এলাকা যেখানে অবাঙালি সম্প্রদায়দের বসবাস বেশি সেই সমস্ত এলাকাগুলিতে শব্দবাজি ফাটানোর একটা চলন থাকলেও অন্য বছরের তুলনায় শব্দবাজি কম ফেটেছে। তবে সন্ধ্যা পেরিয়ে রামপুরহাট শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে কালীমূর্তি প্রবেশের সময় বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফাটাতে দেখা গিয়েছে। তবে রাত এগারোটা বা তার বেশি রাত পর্যন্ত অন্য বছরের তুলনায় শব্দবাজির দাপট খুব একটা দেখা যায়নি।
বরং ফানুস বা অন্য আতসবাজি রাতের আকাশকে রঙিন করেছে। শুধু রামপুরহাট নয়। জেলার সিউড়ি, বোলপুর, দুবরাজপুর, সাঁইথিয়া, নলহাটিতেও শব্দবাজি সেই অর্থে দাপট দেখায়নি। আবার শব্দবাজি একেবারেই ফাটেনি, সেটাও শহরের বাসিন্দারা বলছেন না। তবে শহরের বহু বাসিন্দার বক্তব্য: বেশ রাত পর্যন্ত যে শব্দবাজি রাতের ঘুম ছুটিয়ে দিত, সেই সমস্ত বাজি এ বার ফাটেনি বললেই চলে।
বৃষ্টির জন্য শুক্রবার দুপুর এবং সন্ধ্যায় বিভিন্ন জায়গায় কালীপ্রতিমা বিসর্জনেও বাজি ফাটাতেও খুব একটা দেখা যায়নি। তবে দুবরাজপুরের লোবায় কালীপুজোর বিসর্জনে ব্যপক শব্দবাজি ফাটে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বৃষ্টির থাবা অবশ্য সেখানেও ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy