Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেশা-মুক্তির দিশায় নাটক

সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা জেলার সব কটি জেলেই। সাজাপ্রাপ্তেরা নন, তবে বিচারাধীন বন্দিদের একটা বড় অংশই ব্রাউনসুগারের নেশায় আসক্ত।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৯:০০
Share: Save:

নেশা আসক্ত জেলবন্দিদের নেশা মুক্তির উপায় জানাতে মঙ্গলবার ১৫ অগস্ট উদযাপনের ক্ষণটিকে বেছে নিয়েছেন সিউড়ি জেলা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। তাঁরা বলছেন, নেশার কবল থেকে মুক্তি পেতে চাই অসম্ভব মনোবল ও আপনজনের ভালবাসা।

বিষয়টি তুলেধরতে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে নাটক- ‘নেশা’-র। জেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরে সংশোধনাগার চত্বরে যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে লাভপুরের বীরভূম সংস্কৃতি বাহিনী প্রযোজিত আধঘন্টার ওই নাটকটি ।

হঠাৎ কেন নেশা মুক্তির বিষয় নিয়ে ভাবতে হচ্ছে জেলকর্তৃপক্ষকে?

সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা জেলার সব কটি জেলেই। সাজাপ্রাপ্তেরা নন, তবে বিচারাধীন বন্দিদের একটা বড় অংশই ব্রাউনসুগারের নেশায় আসক্ত। এর পিছনে মূল কারণ অতীতে জেলায় বেআইনি পোস্ত চাষের রমরমা। চলতি বছরে প্রশাসনের তৎপরতায় পোস্ত চাষ বন্ধ হলেও বিগত বছরগুলিতে মজুত থাকা পোস্ত আঠার সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে দুবরাজপুর ও খয়রাশোলে তৈরি হচ্ছে ব্রাউনসুগারের মতো মারাত্মক মাদক। সেই মাদক ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়।

নানা অপরাধমূলক ঘটনায় পুলিশ এখন যাদের ধরছে। তাদের অনেকেই মাদকাসক্ত। কখনও সেই নেশার খোরাক জোগাতে চুরি-ছিনতাই করে, কখনও বা মাদক রাখার অপরাধে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ঠাঁই হচ্ছে সংশোধনাগারে। সমস্যা এইসব বিচারাধীন বন্দিদের নিয়েই। সিউড়ি জেলা মোট ৪৫৩ জন বন্দির মধ্যে এমন বন্দির সংখ্যা ৫০ এরও বেশি।

জেলকর্তারা জানাচ্ছেন, জেলে ঢুকলেই সমস্যা মিটে যায় না। জেল কর্তৃপক্ষের কথায় জেলে থাকাকালীন নেশা থেকে দূরে থাকলেও ওই সব নেশাআসক্তরা যেই জেল থেকে বেরোচ্ছে ফের নেশার কবলে পড়ছে। একটা উপায় খুঁজছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। পথ দেখান মহকুমাশাসক(সিউড়ি)কৌশিক সিংহ।

জেল সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল্লা কামালকে তিনিই ওই নাটকটি মঞ্চস্থ করাতে বলেন। মহকুমাশাসক বলছেন, ‘‘লাভপুরের ওই দলটি সরকারের নানা প্রচারমূলক কাজে জড়িয়ে। কখনও পথনাটক, পুতুল নাটক করে সংস্থাটি তাদের দায়িত্ব ভালভাবে সামলেছে। বোলপুর সংশোধনাগারেও নেশা নিয়েও এক সমস্যা ছিল। শুনেছিলাম, ২৬ জুন মাদকবিরোধী দিবসে বোলপুর মহকুমা শাসক সংশোধনাগারে ‘নেশা’ নাটকটি মঞ্চস্থ করানোর পরে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।’’

কী আছে নাটকে? নাটকটির লেখক, নির্দেশক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নেশার কবলে পড়লে কতটা সমস্যায় পড়তে পারেন একজন, সেটা যেমন দেখানো হয়েছে। তেমনই নেশাছাড়ার জন্য চাই প্রবল ইচ্ছেশক্তি— তাও দেখানো হয়েছে।’’

আবদুল্লা কামাল বলছেন, ‘‘নেশাসক্তদের নেশা ছাড়ার সেই ইচ্ছেশক্তি বা মনোবল বাড়াতেই এই উদ্যোগ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE