Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
আজ পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন উপ-পুরপ্রধান, তাই নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে

কেপির পদে বসবে কে? প্রশ্ন ঘুরছে পুরুলিয়ায়

কে পি সিংহদেওয়ের শূন্য আসনে কে বসবেন? এই প্রশ্নই এখন পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন আড্ডায় ঘুরে বেরাচ্ছে। তৃণমূলের অন্দর থেকে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে দলীয় কাউন্সিলেরা কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০১:০৪
Share: Save:

কে পি সিংহদেওয়ের শূন্য আসনে কে বসবেন? এই প্রশ্নই এখন পুরুলিয়া শহরের বিভিন্ন আড্ডায় ঘুরে বেরাচ্ছে। তৃণমূলের অন্দর থেকে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন ঘিরে দলীয় কাউন্সিলেরা কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের তরফ থেকে উঠে এসেছে দু’জনের নাম। তবে কাকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা চূড়ান্ত করবেন দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। আজ সোমবার পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডেকেছেন উপপুরপ্রধান সামিমদাদ খান। শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘ঠিক সময়েই পুরপ্রধানের নাম আমি ঘোষণা করব। ভোটাভুটির মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না।’’

দল সূত্রে খবর, একপক্ষ চাইছেন ছ’বারের কাউন্সিলর তথা উপপুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলানো সামিমদাদ খান পুরপ্রধানের যোগ্য দাবিদার। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে কেপি তাঁকে কার্যকরী পুরপ্রধানের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি দলের সংখ্যালঘু সেলেরও পরিচিত মুখ।

আবার অন্য পক্ষ চাইছেন, চারবারের কাউন্সিলর এবং দলের শহর সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডল পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিন। তিনি এই মুহূর্তে শহরে দলেরও পরিচিত মুখ। দল সূত্রের খবর, প্রচারের আলোর খানিকটা বাইরে থেকে কাজ করতে অভ্যস্ত বৈদ্যনাথবাবু প্রথমে পুরপ্রধানের পদের দাবি জানানোর ব্যাপারে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু সামিমদাদের বিরোধী কাউন্সিলরেরা তাঁর উল্টোদিকে বৈদ্যনাথবাবুকেই একমাত্র বিকল্প বলে তাঁকে বোঝানোর পরে তিনি সম্মত হয়েছেন।

২০১৫ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কেপি সিংহদেওকে সম্ভাব্য পুরপ্রধান হিসেবে তুলে ধরে তৃণমূল পুরভোটের লড়াইয়ে নেমেছিল। পুরবাসী কেপি-র উপরেই আস্থা রাখেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দলের কাউন্সিলরদের একাংশের মতানৈক্য কিছু ক্ষেত্রে সামনে এসে পড়ে। সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেনস্থা বিতর্কে কাউন্সিলরদের একাংশে বিরুদ্ধে তিনি সরব হয়েছিলেন। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও পুরপ্রধানের অবস্থানকেই কার্যত সমর্থন করেন। তারপর থেকেই পুরপ্রধানের সঙ্গে কাউন্সিলরদের একাংশের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনারও চেষ্টা করা হয়। শেষে খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিরোধ মেটাতে আসরে নামতে হয় দলের জেলার দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিরোধ অবশ্য পুরোপুরি মেটেনি। সে সময় পুরপ্রধান কেপি-র পাশে থাকা ও না-থাকা কাউন্সিলরদের একটা বড় অংশই আপাতত পুরপ্রধানের কুর্সি দখলকে ঘিরে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছেন।

মাসখানেক ধরে রোগভোগের পরে গত ১১ মার্চ কে পি মারা যান। তার পর থেকেই কে পরবর্তী পুরপ্রধান হবেন, সেই প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করেছে শহরে।

সোমবার পুরপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডেকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে চান উপপুরপ্রধান সামিমদাদ খান। যাতে পুরপ্রধান পদে ভোটাভুটি এড়ানো যায় তাই দু’পক্ষই নিজস্ব যুক্তি দেখিয়ে জেলা সভাপতিকে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কে ওই পদে বসবেন, তাঁর নাম জানাতে বলেছেন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত অবশ্য শান্তিরাম এ নিয়ে ইঙ্গিত দেননি।

সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘আমি জেলা সভাপতিকে গোটা বিষয়টা জানিয়েছি। কে পুরপ্রধানের প্রস্তাবক হবেন, কে সমর্থক হবেন তা তিনি নিজেই জানিয়ে দিন।’’ তিনি নিজে কী পুরপ্রধানের দাবিদার হিসেবে লড়বেন? সামিমদাদের জবাব, ‘‘কাউন্সিলরেরা যা চাইবেন তাই হবে।’’ বৈদ্যনাথবাবুও বলেন, ‘‘কর্মীরা বা দল যা চাইবে, সেটাই হবে।’’

কাউন্সিলেরা যাই বলুন, শান্তিরামবাবুর মনে কী রয়েছে, তা জানা যাবে আজ সোমবারই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia municipality Chairman KP Singh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE