Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফের আইন হাতে নিয়ে তরুণকে মার

সমন্বয়পল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সেজে প্রায় দিনই ওই ওয়ার্ড থেকে পথবাতিগুলি খুলে নিয়ে যাচ্ছিল প্রহৃত তরুণ। এলাকা থেকে সম্প্রতি ২৭টি পথবাতি চুরি গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৫০
Share: Save:

পথবাতি চুরি করার অভিযোগ তুলে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে এক তরুণকে মারধর করল বাসিন্দাদের একাংশ। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জেলা সদর সিউড়ি শহরের সমন্বয়পল্লিতে। খবর পেয়ে পুলিশ জনতার রোষ থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করে। গণপ্রহারের শিকার ওই তরুণের বাড়ি সিউড়ির কাঁটাবুনিতে। তবে তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সমন্বয়পল্লির বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সেজে প্রায় দিনই ওই ওয়ার্ড থেকে পথবাতিগুলি খুলে নিয়ে যাচ্ছিল প্রহৃত তরুণ। এলাকা থেকে সম্প্রতি ২৭টি পথবাতি চুরি গিয়েছে। তাঁদের দাবি, এ দিন সকালেও বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে বাতি চুরি করার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ায় ওই ছেলেটিকে উত্তমমধ্যম দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই তরুণকে ল্যম্পপোস্টে বেঁধে চলে গণপ্রহার। চট করে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা সিউড়ি শহরে ক্রমবর্ধমান। চলতি বছরে অন্তত চারটি এমন ঘটনা ঘটেছে। শুধু সিউড়ি নয়, বীরভূমের অন্য কিছু শহরেও একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, আইনের প্রতি আস্থা না রেখে কেন মানুষ এমন অসহিষ্ণু হচ্ছেন।

জেলা পুলিশের কর্তাদের বক্তব্য, যে বা যারা চুরি করছে, তারা অন্যায় করছে সন্দেহ নেই। কিন্তু, অভিযুক্তের জন্য থানা-আদালত রয়েছে। গণপ্রহার দেওয়ার দাওয়াই কোনও অংশে কম অন্যায় নয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন না হয় অভিযুক্ত যুবকের হেফাজত থেকে দামী পথবাতি (ক্যাবিনেট সহ সিএফএল বাল্ব) পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু, ইদের ঠিক আগেই সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মহিলার ব্যাগ থেকে সোনার কানের দুল চিনতাই করার অভিযোগ এক যুবককে এমন মার মেরেছিল জনতা, যে তার পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরে গিয়েছিল। পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায় তাকে। গত ফেব্রুয়ারিতে এই সমন্বয়পল্লিতেই এক বধূর হাতের কব্জিতে কামড় বসিয়ে মোবাইল কেড়ে নিতে গিয়ে ধরা পড়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছিল আর এক যুবক। অভিযুক্তের চুলও কেটে নেয় উত্তেজিত জনতা। মাস কয়েক আগে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে মোবাইল চুরির অভিযোগে বেধড়ক পেটানো হয় এক তরুণকে।

তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাবাসীর মতে, চুরি-ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে মাদকের নেশা। রবিবার সিউড়ির যে তরুণ মার খেয়েছে, সে ব্রাউন সুগারের নেশায় আসক্ত বলে পুলিশও জানিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যে যুবক বধূর হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে চেয়ে ছিল, সে-ও ব্রাউনসুগারের নেশায় আসক্ত ছিল। ঘটনা হল, পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও এলাকায় গোপনে মাদক পাচার হয়ে আসছে।
নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে তরুণ-যুবাদের একাংশ। প্রতিদিন মহার্ঘ নেশার খরচ তুলতেই এলাকায় বাড়েছে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের অসহিষ্ণুতাও। এই অবস্থায় শহরবাসীর দাবি, আগে মাদক দ্রব্য শহরে ঢোকা বন্ধ করুক পুলিশ-প্রশাসন। তা হলেই সমস্যা অনেকটা মিটবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

beaten Suri theft সিউড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE