দলীয় সভাপতি, সহ-সভাপতি ও অন্য কর্মাধ্যক্ষদের আনা অনাস্থায় পদচ্যুত হলেন পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা, সংস্কৃতি, তথ্য ও ক্রীড়া কর্মাধ্যক্ষ। শুক্রবার বাঁকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে যখন এই ঘটনা ঘটে, সেই সময়েই সোনামুখীর ধানসিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের তিন ও দুই নির্দল সদস্য দলেরই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৭-৩ ফলাফলে এই পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। বিরোধী আসনে থাকে বামফ্রন্ট। দলের তৎকালীন ব্লক সভাপতি ধবল মণ্ডল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। সহ-সভাপতি হন সুশান্ত মোদক। ২৪ সেপ্টেম্বর এই পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা, সংস্কৃতি, তথ্য ও ক্রীড়া কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ বাউরির বিরুদ্ধে বাঁকুড়া সদর মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থা আনা হয়। সভাপতি, সহ-সভাপতি থেকে আটজন কর্মাধ্যক্ষ ও দু’জন সদস্য অনাস্থা আনেন। এ দিন আস্থা সংক্রান্ত তলবি সভায় অনাস্থা পাশ হয়ে যায়।
ধবলবাবুর অভিযোগ, “শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছিলেন অন্যায় ভাবে। দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন। ঠিকাদারদের উপরেও চাপ সৃষ্টি করতেন। এই সব কারনে দলীয় নেতাদের সম্মতি নিয়েই আমরা অনাস্থা ডেকে কর্মাধ্যক্ষকে সরিয়েছি।” অন্য দিকে, অপসারিত কর্মাধ্যক্ষের অভিযোগ, “ধবলবাবু পঞ্চায়েত সমিতির বাড়ি তৈরির প্রকল্প-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতি করছেন। আমি তার প্রতিবাদ করাতেই চক্রান্ত করে আমাকে এ ভাবে অপসারিত করা হল।” বাঁকুড়ার এসডিও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশ হয়েছে। দ্রুত নতুন কর্মাধ্যক্ষ ঠিক করা হবে।”
এ দিকে, নিজের এলাকা ছাড়া অন্য গ্রাম সংসদগুলির দিকে নজর নেই বলে ধানসিমলার প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এ দিনই সোনামুখীর বিডিও-র কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন তাঁরই দলের কিছু সদস্য ও নির্দল সদস্যেরা। সোনামুখীর বিডিও বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “৯ আসনের ওই পঞ্চায়েতে ৫ সদস্য তৃণমূলের, ৪ জন নির্দল। তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের তিন ও নির্দল দুই সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে এ দিন চিঠি পাঠিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে তলবি সভা ডাকা হবে।”
অনাস্থায় সই করা নির্দল সদস্য রহমত আলি শেখ ও সুশীল সোরেন বলেন, “আমরা নির্দল হয়ে লড়লেও তৃণমূলে সক্রিয় ভাবে আছি। কিন্তু প্রধান নিজের এলাকা ছাড়া আমাদের এলাকায় উন্নয়ন নিয়ে কিছুই ভাবেননি। বার বার বলেও কাজ হয়নি। সে কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে বাধ্য হলাম।”
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে তোলা ৫ সদস্যের অভিযোগ মানতে চাননি প্রধান নিমাই ঘোষ। তিনি বলেন, “ওঁদের তোলা অভিযোগ মিথ্যা। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার চেষ্টা করেছি। এর বেশি কিছু বলতে চাইনা।” বুধবারই ওই ব্লকের তৃণমূলের মানিকবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন দলীয় সদস্যেরা। যদিও দু’টি ঘটনা নিয়েই মুখ খুলতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, “এমন কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy