একশো দিন প্রকল্পে কাজ করেও তাঁরা প্রাপ্য মজুরি পাচ্ছেন না। তৃণমূল পরিচালিত সাঁইথিয়ার মাঠপলসা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন এলাকার কুনুরি পশ্চিম সংসদের সলপা গ্রামের কয়েকজন দিনমজুর। তাঁদের দাবি, এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, এসডিও, জেলা নোডাল অফিসার, জেলাশাসক এমনকী জেলা সভাধিপতির কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। উপপ্রধান অবশ্য অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু কী কারণে ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ওঁদের প্রাপ্য টাকা দিচ্ছেন না তা স্পষ্ট নয়।
মাঠপলসা পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৬। এর মধ্যে তৃণমূল ৯, কংগ্রেস ৪, ফব ১ ও সিপিআই ১টি করে আসন পায়। পরে ৪ কংগ্রেস ও ১ ফব সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। যে সংসদে মজুরি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই সংসদে সরাসরি তৃণমূল জিতেছে। মজুরদের দাবি, তাঁরাও তৃণমূল সমর্থক। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর কাছের দু’এক জনের কথা মতো মজুরদের কয়েকজন তাঁদের হাতে পাস বই তুলে দেননি। দিনমজুর শেখ মনিরুজামান, মহম্মদ মইনুদ্দিন, শেখ বরকত আলিদের অভিযোগ, “মাস পাঁচ-ছয় আগে এলাকায় ১০০ দিন প্রকল্পে বেশ কয়েকটি কাজ হয়। সলপা পাকা রাস্তার ধারে জমি সমতল ২ লক্ষ, নবীনগড়ে পুকুর পাড়ে আড়াই লক্ষ, গোরস্থান সংস্কার সাড়ে চার লক্ষ, দিঘিরঘাট থেকে ভালুকা পুকুর পর্যন্ত সেচের নালা সংস্কার ২ লক্ষ ইত্যাদি বেশ কয়েকটি ১০০ দিন প্রকল্পে এলাকার মজুররা কাজ করেছেন। আমরা ১২ জন দিনমজুরও ওই সব প্রকল্পে ১৮ দিন কাজ করেছি। কিন্তু আমাদের ১২ জনকে এখনও পর্যন্ত প্রাপ্য মজুরি দেওয়া হয়নি।” তাঁদের ক্ষোভ, “এ ব্যাপারে প্রশাসনের সকলের কাছে জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এর পর কোথায় জানাব?” ওই পঞ্চায়েতের সদস্য জাকির হোসেন অবশ্য দাবি করেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।” তবে তাঁর কথাবার্তাও অসংলগ্ন। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একবার বলেন, “ওঁরা কাজ করেননি। পরক্ষণেই বলেন, ওঁদেরকে অনেকবার টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নেননি। ওঁরা সিপিএম সমর্থক।” পঞ্চায়েত প্রধান রূপা দাস বলেন, “এ ব্যাপারে যা বলার উপপ্রধান বলবেন।” উপপ্রধান মহম্মদ ইউনুস বলেন, “যে কেউ যে কোনও দলেরই হোক না কেন, কাজ করলে তাঁর প্রাপ্য মজুরি তাঁকে দিতেই হবে। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তাঁরা কাজ করেছেন। কাজেই তাঁদের প্রাপ্য মজুরি দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের কাছে অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে, ওই সদস্যকে ১২ জন দিন মজুরের প্রাপ্য মজুরি দিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। উনি কেন দিচ্ছেন না বলতে পারব না। বিষয়টি দেখছি।” সাঁইথিয়ার বিডিও জাহিদ সাহুদ বলেন, “এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy