পুরুলিয়ার স্কুলে চলছে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবারের নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেছেন এক শিক্ষক। এই অভিযোগে একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পুরুলিয়ার মুন্সেফডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েকজন মহিলা অভিভাবক স্কুলে গিয়ে ওই শিক্ষককে শারীরিক ভাবে নিগ্রহও করেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষককে আটক করে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতে পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলে এক শিক্ষক ছাত্রীদের গায়ে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেছেন এই খবর ছিড়ে পড়তে স্কুল চত্বরে ভিড় করেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ও অভিভাবকরা। বেশিরভাগই দাবি করেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে তাঁদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। এলাকায় উত্তেজনার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে কয়েকজন মহিলা ওই শিক্ষককে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাতে না যায়, সে জন্য স্কুলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এলাকার এক মহিলা অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সে এ দিন স্কুলে আসতে চাইছিল না। কেন স্কুলে যাবে না, জানতে চাওয়ায় সে বলে স্যার গায়ে হাত দেয়। তাই সে স্কুলে আর যাবে না। ওই মহিলার কথায়, “শুধু আমার মেয়েই নয়, পরে জানা গেল ওই শিক্ষক এ রকম একাধিক ছাত্রীর গায়েই হাত দেন। সেই কারনেই এ দিন সবাই জড়ো হতেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।”
স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার মানুষজন ভিড় করে রয়েছেন বাইরে। গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। টিচার-ইনচার্জ তারারানি চট্টরাজ বলেন, “এর আগে কোনওদিন অভিভাবকেরা আমার কাছে এ রকম অভিযোগ নিয়ে আসেননি। আজই প্রথম এ রকম অভিযোগ শুনলাম।” স্কুলের আর এক শিক্ষিকা সুজাতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই শিক্ষক টিফিনের সময় চা খেতে গিয়েছিলেন। তখনই কয়েকজন এসে তাঁর বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ তোলেন।”
অভিযুক্ত শিক্ষক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি ছাত্রীদের স্নেহ করি। একজন শিক্ষক যে চোখে ছোট ছোট ছাত্রীদের দেখে আমিও সে ভাবেই দেখি। জানি না কেন হঠাত্ আমার বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ তোলা হল।” তিনি জানান, ১৯৯৫ সাল থেকে এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। কখনও এ রকম অভিযোগ ওঠেনি। যদিও এলাকার মহিলা অভিভাবকেরা দাবি করেছেন, যে অভিযোগ ওনার বিরুদ্ধে উঠেছে তারজন্য ওনাকে শাস্তি দিতে হবে। স্কুলের ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান আনন্দ চৌধুরী বলেন, “একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠা সমীচিন নয়। এ ক্ষেত্রে আইন আইনের পথেই চলবে।” এলাকার কাউন্সিলর মিতা চৌধুরীও ঘটনার কথা জেনে স্কুলে আসেন। তিনিও বলেন, “একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কখনই এ ধরনের অভিযোগ ওঠা উচিত নয়।” পুলিশ জানিয়েছে, সব দিন খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy