মৃত শিশু আমির।
রাস্তা পার হতে গিয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রের। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে, মহম্মদবাজারের শেওড়াকুড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর নাম আমির হোসেন (৮), বাড়ি শেওড়াকুড়ি।
এ দিকে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে এলাকার লোকজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অবরোধের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ রাস্তা কাটাও শুরু করে দেন। পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমুল নেতৃত্ব ঘণ্টা খানেক বাদে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুই ছেলে ও ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন শেওড়াকুড়ির বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন মিঞা। রাস্তা পারাপারের জন্য ছেলে ও ভাগ্নেদেরকে নিয়ে রাস্তার একধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছোট ছেলে আমির হঠাৎ করে একাই দৌড়ে রাস্তা পার হতে যায়। তখনই দ্রুত গতিতে সিউড়ির দিক থেকে আসা একটি দশ চাকার ট্রাকের চাকার তলায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ছোট্ট আমীরের। চোখেন সামনে এমন দৃশ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাসিরুদ্দিন মিঞা। তিনি বলেন, “ঈদ উপলক্ষে বোন ভাগ্নেরা বাড়িতে এসেছে। তাই এ দিন ওদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তার ওপারে মুরগির কাটানোর জন্য যাচ্ছিলাম। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল!”
অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে আটকে পড়েছে যানবাহন।—নিজস্ব চিত্র
খবর পেয়ে আমিরের মা জৈবুন বিবি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে ওখানে এর আগে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এলাকার লোকজন দীর্ঘ দিন থেকে ওই জায়গায় একটি স্পিড ব্রেকারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত হয়নি। এ দিনের মর্মান্তিক ঘটনার পরে প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ জনতা পথ অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, “যদি স্পিড ব্রেকার থাকত তা হলে এ ভাবে শিশুটিকে প্রাণ দিতে হত না।”
দুর্ঘটনার পর এলাকার মানুষ এতোই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন যে, চিত্র সাংবাদিকদেরকে ছবি তুলতেও বাধা দেন। ওই ট্রাক আটক এবং চালককে গ্রেফতার, স্পিড ব্রেকারের দাবিতে রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি রাস্তা কাটতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁরা রাস্তা কাটা বন্ধ করেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ওই জায়গায় স্পিড ব্রেকার করা যায় কি না তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে বলে জানানো হয়। ঘটনার প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ মৃত শিশুর দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজরিয়া বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়। পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করেছে। চালকের খোঁজ চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy