Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, মার পুলিশকে

গ্রামের পুকুরে মাছ ধরা ঘিরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিল শাসকদলের দুই গোষ্ঠী। সেই গণ্ডগোলের রেশ গড়াল স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে। শনিবার দুপুরে বীরভূমের লোকপুর ফাঁড়ি শুধু তছনছ করেই ক্ষান্ত হল না তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সমর্থকরা। রীতিমতো মারধর করার অভিযোগ উঠল দুই পুলিশকর্মীকেও।

ভাঙচুরের পর। —নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পর। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০১:৪২
Share: Save:

গ্রামের পুকুরে মাছ ধরা ঘিরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিল শাসকদলের দুই গোষ্ঠী। সেই গণ্ডগোলের রেশ গড়াল স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে। শনিবার দুপুরে বীরভূমের লোকপুর ফাঁড়ি শুধু তছনছ করেই ক্ষান্ত হল না তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর সমর্থকরা। রীতিমতো মারধর করার অভিযোগ উঠল দুই পুলিশকর্মীকেও।

জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া পুলিশ-পেটানোর ঘটনা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “গ্রামে মাছ ধরার অভিযোগ জানাতে এসে কয়েক জন লোকপুর ফাঁড়ির ইনচার্জের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। তাঁকে ঘুষিও মারা হয়। ফাঁড়ির আসবাব উল্টে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের একটি গাড়িতেও।” মারধরের ওই ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক দলের লোকজন জড়িত কি না সে ব্যাপারে পুলিশ সুপার মুখে কুলুপ আঁটলেও সংশ্লিষ্ট ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনায় শাসকদলেরই কর্মী-সমর্থকেরাই জড়িত।

তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, “এমন ঘটনার কথা তো শুনিনি।”

তবে তৃণমূলের অন্দরের খবর, খয়রাশোলের লোকপুর এলাকায় ওই গণ্ডগোলের কারণ গোষ্ঠী বিবাদ। খয়রাশোলে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি, নিহত অশোক ঘোষের গোষ্ঠীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ওই খুনের ঘটনায় অশোক মুখোপাধ্যায়ই মূল অভিযুক্ত। বহু দিন ফেরার থাকার পরে সম্প্রতি আগাম জামিন নিয়ে তিনি এলাকায় ফিরেছেন। এ দিন সকাল থেকেই তাঁর অনুগামীরা দলের শহিদ দিবসকে সামনে রেখে প্রায় তিনশো বাইক নিয়ে এসাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, লোকপুর ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয় ওই বাইক বাহিনী থেকেই। কেন?

পুলিশ জানায়, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে অশোক ঘোষ গোষ্ঠীর নেতা, লোকপুর পঞ্চায়েত সদস্য মুনমুন গড়াইয়ের স্বামী শঙ্করের সঙ্গে বচসা চলছিল তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মিহির বাউড়ির। এ দিন দুপুরে মিহিরবাবুর স্ত্রী বুলু অভিযোগ জানাতে ফাঁড়িতে এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “পুলিশ আমার অভিযোগ নেয়নি। তারপরে ফাঁড়িতে কি হয়েছে বলতে পারব না।”

দলীয় সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ওই বাইক বাহিনীতে ছিল মিহিরের সাঙ্গোপাঙ্গরা। পুলিশকর্মীরা বুলুর অভিযোগ নিতে চাইছে না শুনেই তারা পাঁড়িতে চড়াও হয়।

এ ব্যাপারে অশোক মুখোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর অনুগামী রাজীব পান বলেন, “পুলিশ ওই মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। তিনি দলীয় নেতৃত্বকে তা জানালে তাঁরা ফাঁড়িতে যান। তখনই এলাকার কিছু মানুষ সেখানে জড়ো হয়। এইটুকুই। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি।” তবে নিহত অশোক ঘোষের ভাই দীপক দাবি করেন, ওই কাজ অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর লোকজনই জড়িত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc tmc internal clash striking police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE