তৃণমূলের হয়ে প্রচার করতে রাজি না হওয়ায় এক বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বোমার আঘাতে পরেশ লেটা নামে ওই বিজেপি কর্মীর স্ত্রী ও তিন সন্তান জখম হয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে নলহাটি থানার গোপ গ্রামে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা গয়ানাথ মণ্ডল-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দাবি আহতের পরিবারের। অবশ্য লিখিত অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন নলহাটি থানার অফিসার ইনর্চাজ সোমনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তদন্ত চলছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” একই কথা বলেছেন রামপুরহাটের এসডিপিও কোটেশ্বর রাও। তিনি বলেন, “এখনও অভিযোগ হয়নি। যদি ওই পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ দায়ের না হয়, তা হলে পুলিশ নিজে থেকেই মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করবে।”
রবিবার রামপুরহাট হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত পরেশবাবু। তাঁর অভিযোগ, “আমি বিজেপি করি। তিন বছর আগে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গ্রামে ১০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন আমার বাড়িতে যারা অগ্নিসংযোগ করেছিল তখন তারা সিপিএম করত। এখন সকলে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল করছে। সম্প্রতি গ্রামের বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল কর্মীরা বাড়িতে এসে আমাকে তাদের দলের হয়ে ভোট করতে বলে। রাজি না হওয়ায় ওরা আমাকে বলে যায়, ঠিক আছে। ওরা চলে যাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যেই আমার বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়।”
হাসপাতালে পরেশবাবুর স্ত্রী মালতিদেবী বলেন, “স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। বারান্দায় আমি এবং বড় মেয়ে ও দুই ছেলে বসে চা খাচ্ছিলাম। আচমকা কে বা কারা বারান্দায় বোমা ছুড়ল। বোমায় থাকা পাথর কুচি, কাচ হাতে-পায়ে লাগল। স্বামী এবং পড়শিরা আমাদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।” যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেই তৃণমূল নেতা আগে বিজেপির উপপ্রধান ছিলেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি বলেন, “শনিবার রাতে গ্রামে পুলিশ এসেছিল। আমাকে বলল, ‘আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।’ শুনেই আমি ঘটনাস্থলে যাই। পরেশ লেটের বাড়িতে গিয়ে দেখি, বারান্দা বাঁশ দিয়ে ঘেরা। কী ভাবে কারা ঘেরা বারান্দায় বাইরে থেকে বোমা মেরে চলে গেল, সেটা দেখেই আমরাও অবাক।” অন্য দিকে, বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধূরীর দাবি, “খয়রাশোলের অশোক ঘোষ হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অশোক মুখোপাধ্যায় নলহাটি এলাকার গ্রামে গ্রামে ঘুরে তৃণমূলের হয়ে প্রচার চালাতে এসে নানারকম উস্কানিমূলক মন্তব্য করে যাচ্ছেন। গোপ গ্রামের ঘটনা তারই ফল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy