দলের ব্লক স্তরের দুই নেতা প্রকাশ্যে রাস্তার মাঝে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন। ওই ঘটনার জেরে এক জনকে দল থেকে বহিষ্কার করল পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “দলবিরোধী কাজের দায়ে ঝালদা ২ ব্লক কমিটির প্রাক্তন সহ-সভাপতি কেদার মাহাতোকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
বর্তমানে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের সমস্ত কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার আগে অবধি কেদারবাবু ছিলেন দলের ঝালদা ২ ব্লক কমিটির সহ-সভাপতি। দলবিরোধী কী কাজ করেছেন ওই তৃণমূল নেতা, তা নিয়ে অবশ্য দলের পক্ষ থেকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। জেলা তৃণমূলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার বিকেলে ঝালদা ২ ব্লকের সদর কোটশিলায় প্রকাশ্য রাস্তায় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন দলের দুই নেতা। এক জন কেদার মাহাতো, অন্য জন দলের জয়পুর ব্লক কমিটির প্রাক্তন সভাপতি কীর্তন মাহাতো।
কেদারবাবুর অভিযোগ, “কিছুদিন আগে কীর্তন মাহাতো আমার ভাইপোকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে কিছু টাকা নেন। সেই চাকরি হয়নি। তাই কিছু টাকা উনি ফেরত দিয়েছেন। বাকিটা দেননি। বুধবার কোটশিলায় কীর্তনবাবুকে দেখে আমি টাকা ফেরতের কথা বলি। তাতেই উনি আমার সঙ্গে ঝামেলা শুরু করেন।” অভিযোগ অস্বীকার করে কীর্তনবাবু বলেন, “বামফ্রন্টের আমলে আমি দীর্ঘদিন ডানপন্থী রাজনীতি করেছি। আমাকে এলাকার সকলেই চেনেন। আমার ও-ভাবে টাকা নেওয়ার কোনও প্রয়োজনই পড়ে না। এখন বহিষ্কৃত হওয়ার পরে কেদারবাবু মিথ্যা অজুহাত দিচ্ছেন।”
তবে, কেদারবাবুর সঙ্গে তাঁর যে ঝামেলা হয়েছিল, তা মেনেছেন কীর্তনবাবু। তাঁর দাবি, জয়পুরের যে এলাকায় তিনি থাকেন, সেই মুকুন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকার রহড়দাগা গ্রামের তিন দিনমজুরকে সম্প্রতি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাঁদের জামিন করানোয় উদ্যোগী হয়েছিলেন কীর্তনবাবু। তাঁর অভিযোগ, “ধৃতদের পরিবারের লোকজন আমার কাছে সাহায্যের জন্য এসেছিল। আইনজীবীর ব্যবস্থা করা-সহ অন্যান্য সাহায্য করেছিলাম। বুধবার কোটশিলায় কেদারবাবু ওই প্রসঙ্গ তুলে আমাকে কটূ কথা বলেন। আমি তাঁর কথার প্রতিবাদ করেছিলাম।”
তৃণমূলের জেলা রাজনীতিতে কীর্তনবাবু শান্তিরাম মাহাতোর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। দল সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই কীর্তনবাবু সমস্ত জানান জেলা সভাপতিকে। তার পরেই তড়িঘড়ি কেদার মাহাতোকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেদারবাবুর অবশ্য বলেন, “আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানি না। আমি দলবিরোধী কোনও কাজ করেছি বলে মনে করতে পারছি না। জেলা সভাপতি এ নিয়ে আমাকে ফোন করেননি। তা ছাড়া, আমাকে শো-কজ করা হয়নি। এমনকী, এ নিয়ে কোনও তদন্ত কমিটিও গড়া হয়নি।” তাঁর আরও দাবি, অভিযোগ যখন উঠেইছে, তখন দলীয় স্তরে তার তদন্ত হোক। ঝালদা ২ ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি সুনীল কুমার বলেন, “কেদারবাবুকে বহিষ্কারের খবর আমি বৃহস্পতিবারই জেনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy