Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেতারা ধৃত, পথ অবরোধ

বীরভূমের মাখড়া গ্রামে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের হাতে দলের সদস্যদের গ্রেফতারের ঘটনার প্রতিবাদে দুই জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করলেন বিজেপি কর্মীরা। এর জেরে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সারি সারি গাড়ি আটকে পড়ে।

ঝান্ডা বদলে গিয়েছে। রয়ে গিয়েছে সেই অবরোধ-আন্দোলন। ওন্দার রামসাগরে।—নিজস্ব চিত্র।

ঝান্ডা বদলে গিয়েছে। রয়ে গিয়েছে সেই অবরোধ-আন্দোলন। ওন্দার রামসাগরে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৫৮
Share: Save:

বীরভূমের মাখড়া গ্রামে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের হাতে দলের সদস্যদের গ্রেফতারের ঘটনার প্রতিবাদে দুই জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করলেন বিজেপি কর্মীরা। এর জেরে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় সারি সারি গাড়ি আটকে পড়ে। অবরোধে নাকাল যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে প্রশ্ন করেন, “আগে তৃণমূলের এই অবরোধ-আন্দোলনে নাজেহাল হতাম। এ বার সেই এখই পথে আন্দোলনে নামল বিজেপি।”

এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া শহর-সহ আনাড়া, রঘুনাথপুর, জয়পুর, কাশীপুর, হুড়ার লালপুর এলাকায় পথ অবরোধ হয়। ওই সময়ে অফিস ফেরত এবং স্কুল-কলেজ থেকে ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরছিলেন। অনেকেই রাস্তায় আটকে পড়েন। আনাড়ায় রাজ্য সড়ক অবরোধে নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, “রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। তার প্রমাণ মাখড়া গ্রামে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনাতেই প্রমাণ হয়েছে। এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে স্বৈরতন্ত্র চালাতে চাইছেন। তা বোঝা গেল ওই গ্রামে আমাদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার ঘটনাতেই। তাই বাধ্য হয়েই প্রতিবাদ জানাতে অবরোধে নামতে হয়েছে।” কোথাও আধ ঘণ্টা, কোথাও বা তার বেশিক্ষণ ধরে চলে অবরোধ।

এ দিন বিকেলে বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ড ও রামসাগরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধে নামেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। দু’টি জায়গাতেই প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এই অবরোধ। রামসাগরে বিষ্ণুপুর-বাঁকুড়া জাতীয় সড়কে আটকে পড়ে বহু বাস, লরি, টেম্পো। অনেক যাত্রীকেই এ নিয়ে ক্ষোভ জানাতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তাঁদের কথা কে শোনে!

বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢুকতে ও বেরতে পারেনি কোনও রুটেরই বাস। ফলে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। বিষ্ণুপুরে অবরোধে নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর মহকুমা কমিটির সভাপতি স্বপন ঘোষ। তিনি জানান, বাংলায় গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। আমাদের কর্মীরা শাসক দলের হাতে খুন হচ্ছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে গেলে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও আটক করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ তো জঙ্গলের রাজত্ব! প্রতিবাদেই আমরা পথে নেমেছি।”

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে বাঁকুড়া শহরের কাঠজুড়িডাঙা মোড়, রাইপুর, খাতড়া, ছাতনা, পাত্রসায়র, ওন্দা, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, বড়জোড়া, তালড্যাংরা, সিমলাপাল, ইঁদপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ হয়। অবরোধের ফলে বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া, দুর্গাপুর, বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমান রাস্তায় কিচ্ছুক্ষণের জন্য সমস্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অবরোধ চলেছে কোথাও ১৫ থেকে ২০ মিনিট, আবার কোথাও আধঘণ্টা। আর এই অবরোধের জেরে রাস্তায় যান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য হলেও ব্যাহত হয়েছে। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতি নতুন করে শুরু হওয়ায় তাঁরাও নিশ্চিন্ত বোধ করছেন না। কিন্তু তার প্রতিবাদ জানাতে কেন রাস্তা অবরোধ করে সেই আমজনতাকেই ভোগান্তির মুখে ঠেলে ফেলা হচ্ছে? প্রতিবাদ-আন্দোলনের তো অন্য রাস্তাও রয়েছে। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সেই সব পথে কেন আন্দোলনে যাচ্ছেন না?

বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র অজয়কুমার ঘটক বলেন, “দলের রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। তবে সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে দ্রুত অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

makhra case bjp road blockade purulia bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE