Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধুকে নিয়ে মাকে খুন করে দীপক, দাবি পুলিশের

মাকে খুন করতে দীপক এক বন্ধুর সাহায্য নিয়েছিল। আদ্রার পাঁচুডাঙায় খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ এই তথ্য দাবি করছে। পুলিশের দাবি, খুনের আগের রাতে অথাৎ বুধবার দীপক তার বন্ধু টিঙ্কু দাসকে নিজের বাড়িতে রেখেছিল। স্থানীয় বাঘাডাবর গ্রামে তার বাড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৭
Share: Save:

মাকে খুন করতে দীপক এক বন্ধুর সাহায্য নিয়েছিল। আদ্রার পাঁচুডাঙায় খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ এই তথ্য দাবি করছে। পুলিশের দাবি, খুনের আগের রাতে অথাৎ বুধবার দীপক তার বন্ধু টিঙ্কু দাসকে নিজের বাড়িতে রেখেছিল। স্থানীয় বাঘাডাবর গ্রামে তার বাড়ি।

পুলিশ দীপকের স্ত্রী অঞ্জলি ভাটকরের সঙ্গী টিঙ্কু দাস নামের ওই যুবকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেছে। দীপক এখনও আহত অবস্থায় পুলিশের পাহারায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শুক্রবার ধৃত দু’জনকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

বৃহস্পতিবার ভোরে পাঁচুডাঙার বাসিন্দা লক্ষ্মী ভাটকর খুন হন। বৃহস্পতিবার সাত সকালে দীপকের স্ত্রী অঞ্জলিই রঘুনাথপুর থানায় ফোন করে জানিয়েছিল বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী ঢুকে তাঁর শাশুড়িকে খুন করেছে। বাধা দিতে গিয়ে তাঁর স্বামী দীপকও দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রে আহত হয়েছে। তবে, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে নিহতের ছোট ছেলে বান্টি পুলিশের কাছে দাবি করে, দুষ্কৃতী নয়, দাদা দীপকই তার মাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। সে দেখে ফেলায় তাকেও দীপক অস্ত্র নিয়ে তাড়া করেছিল। প্রতিবন্ধী বোনকে সঙ্গে নিয়ে কোনও রকমে বাথরুমে ঢুকে সে প্রাণে বাঁচে বলে পুলিশের কাছে বান্টি জানিয়েছে।

পরে তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, লক্ষ্মীদেবীর স্বামী মুন্না বছর চারেক ধরে নিখোঁজ। স্বামীর তেজারতি কারবার তার পর থেকে স্বামীর এক বন্ধুর সঙ্গে লক্ষ্মীদেবী সামলাতেন। দীপকও তেজরাতি কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ব্যবসা ও সম্পত্তির দখল নিয়ে মায়ের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল বলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন।

তদন্তে পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে, নিখোঁজ হওয়ার আগে মুন্না তাঁর ছোট ছেলে বান্টিকে সম্পত্তি লিখে দিয়ে যায় বলে পুলিশ একটি সূত্রে জানতে পেরেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় দীপক জানিয়েছে, সেই সম্পত্তি বাগে আনতেই সে মাকে খুনের ছক কষে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক শুক্রবার দাবি করেছেন, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক তদন্তের পরে তারা জানতে পেরেছে, পরিকল্পনা করেই লক্ষ্মীদেবীকে খুন করা হয়েছে। সে জন্য বুধবার রাতেই নিজের ঘরে টিঙ্কুকে রেখেছিল দীপক। পরে ভোরের বেলায় টিঙ্কুকে সঙ্গে নিয়ে দীপক দোতলায় মাকে খুন করতে যায়। এসডিপিও (রঘুনাথপুর) পিনাকী দত্ত বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে সম্পত্তির জন্যেই এই খুন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের বড়ছেলের স্ত্রী বিজেতা ওরফে অঞ্জলি ভাটকর এবং দীপকের বন্ধু টিঙ্কু দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, ধৃতেরা জেরায় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তারা পরিকল্পনা মাফিক লক্ষ্মীদেবীকে খুন করেছে। শুধু কি লক্ষ্মীদেবী নাকি বান্টিকেও খুনের মতলত ছিল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dipak raghunathpur murder mother
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE