Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিক্ষোভ উঠল, খনির কাজ শুরু বড়জোড়ায়

জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস পাওয়ায় অবশেষ খনির সামনে থেকে বিক্ষোভ-অবস্থান তুলে নিলেন আন্দোলনকারীরা। বুধবার অনেক রাতে বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন, দ্রুত তাঁদের সমস্যা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ করে দেওয়া হবে।

সোমবার থেকে বিক্ষোভে বসেছিলেন জমিহারারা। —ফাইল চিত্র

সোমবার থেকে বিক্ষোভে বসেছিলেন জমিহারারা। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৮
Share: Save:

জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস পাওয়ায় অবশেষ খনির সামনে থেকে বিক্ষোভ-অবস্থান তুলে নিলেন আন্দোলনকারীরা।

বুধবার অনেক রাতে বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন, দ্রুত তাঁদের সমস্যা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এরপরেই বড়জোড়ায় ডিভিসি-এমটা’র কয়লা খনির রাস্তা থেকে অবস্থান তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ওই খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী এ দিন বলেন, “শীঘ্রই বৈঠকে বসা হবে।”

সোমবার থেকে বড়জোড়ার ডিভিসি-এমটা কোলিয়ারির রাস্তা আটকে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন স্থানীয় বাগুলি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা দাবি করেছিলেন, চার বছর আগে খনির জন্য যে দামে জমি বিক্রি করা হয়েছে, তার দাম বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে খেতমজুরদের ৫০০ দিনের মজুরি দেওয়া-সহ এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজেরও দাবি তাঁরা তোলেন। যদিও সে সব দাবি মানা সম্ভব নয় বলে প্রথম দিনেই খারিজ করে দিয়েছিল খনি কর্তৃপক্ষ। এর জেরে সোমবার থেকেই বন্ধ হয়ে যায় খনির কয়লা উত্তোলন।

জেলাপ্রশাসন একাধিকবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেও কোনও সমাধান সূত্র বের করতে পারেনি। বুধবার রাত পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ জারি রাখেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও বিডিও ইস্তেয়াক আহমেদ খান খনির সামনে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। শীঘ্রই জেলাশাসক আন্দোলনকারী ও কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাসও দেন বিডিও। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ অবস্থান থেকে সরতে রাজি হননি গ্রামবাসী। তবে রাতে আন্দোলনকারীরা প্রস্তাব দেয় বিধায়ক লিখিত ভাবে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দিলে আন্দোলন তুলে নেওয়া হবে।

সেই মোতাবেক বিধায়ক রাতেই ফের খনির সামনে যান এবং ১৫ দিনের মধ্যে জেলাশাসক বৈঠকের আয়োজন করবেন বলে লিখিত ভাবে তাঁদের আশ্বাস দেন। তারপরেই আন্দোলন তুলে নেয় গ্রামবাসী। আন্দোলনকারী সংগঠন ‘বাগুলি নবজাগরণ গ্রামোন্নয়ন সমিতি’র সম্পাদক দীপ্তি দাঁ বলেন, “খনি কর্তৃপক্ষ জমিহারাদের ঠকিয়েছে। কথা ছিল পাশের খনি কর্তৃপক্ষ জমির দাম বাড়ালে এই খনি কর্তৃপক্ষও সেই দাম মেনেই জমিহারাদের বর্ধিত মূল্য দেবে। এ ছাড়া গ্রামের খেত মজুরদের ৫০০ দিনের কাজের মজুরিও দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু কোনও কথাই তারা রাখেনি। তাই আন্দোলনে নেমেছিলাম।” তাঁর সংযোজন, বিধায়ক তাঁদের লিখিত ভাবে আশ্বাস দিয়েছেন ১৫ দিনের মধ্যে জেলাশাসক ওই দাবিগুলি নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। তাই আন্দোলনের পথ থেকে তাঁরা সরে গেলেন। তবে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপেও খনি কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি না মানলে ফের আন্দোলন শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বিধায়ক আশুতোষবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলেছেন শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে, তা বলে কারখানা বন্ধ করে আন্দোলন করা চলবে না। গ্রামবাসীদের যা দাবি আছে তা নিয়ে আমরা খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব। তবে খনি বন্ধ করে আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করব না।” ডিভিসি-এমটা’র ডিরেক্টর নিমাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে ফের কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। খনিতে কাজও হচ্ছে স্বাভাবিক ভাবেই। তবে জেলা প্রশাসনের তরফের এখনও বৈঠকে ডাকা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

borjora agitation work resume mining jobs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE