Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

ভাংলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ বাসিন্দারা

দেড় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইলামবাজারে এসে প্রকল্পের শিলান্যাস করে গিয়েছিলেন। সে প্রকল্প এখনও বিশ বাঁও জলে। তাই জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে যখন এক দিকে দল ও প্রশাসনের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ঠিক তখন অন্যদিকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মাড়গ্রাম থানার আটটি গ্রামের বাসিন্দারা। ভাংলা কাঁদরের সেতুটির দাবি আর বঞ্চনার কথা তাঁরা দেখা করেই, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকেই জানাতে চান।

ভরসা বাঁশের সাঁকো।—ফাইল চিত্র।

ভরসা বাঁশের সাঁকো।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০১:১৪
Share: Save:

দেড় বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইলামবাজারে এসে প্রকল্পের শিলান্যাস করে গিয়েছিলেন। সে প্রকল্প এখনও বিশ বাঁও জলে। তাই জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে যখন এক দিকে দল ও প্রশাসনের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ঠিক তখন অন্যদিকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মাড়গ্রাম থানার আটটি গ্রামের বাসিন্দারা। ভাংলা কাঁদরের সেতুটির দাবি আর বঞ্চনার কথা তাঁরা দেখা করেই, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকেই জানাতে চান।

ইতিমধ্যেই নিজেদের এলাকার অভাব-অভিযোগ আর অপ্রাপ্তির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে তৈরি হচ্ছেন মাড়গ্রাম থানার বাবলাডাঙ্গা, গোপালপুর, জয়চন্দ্রপুর, টিঠিডাঙ্গা, উলাহাপাড়ার বাসিন্দারা। সেই মতো গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাঁদের বক্তব্য ইতিমধ্যে পৌঁছে দিতে শুরু করেছেন। এক-দু’জনকে গ্রামের প্রতিনিধি হিসাবে তাঁরা বেছে নিচ্ছেন। ঠিক হয়েছে, ওই সমস্ত প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বঞ্চনার কথা বলবেন। এ ব্যাপারে জেলা নেতা থেকে ব্লক স্তরের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছেন বাসিন্দারা।

তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন থেকে তারা ভাংলা কাঁদরের উপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। বাম আমলে দু’বার সেতু নির্মাণের চেষ্টা হলেও ১৯৮৩ সালে সেতুটি নির্মাণের কাজ বন্যায় ভেঙে যায়। পরে ১৯৯৪ সালে কাজ শুরু হলেও প্রশাসনিক গাফিলতির ফলে নির্মাণের কাজ বন্ধ থমকে যায়। এরপর আর কোনও কাজ হয়নি সেতুটির। এতেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। বর্ষায় সেতুর অভাবে বাশের সাঁকোই এখন তাঁদের ভরসা। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, “দুনিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে রামপুরহাট ২ ব্লক, মাড়্গ্রাম থানা, রামপুরহাট হাসপাতাল, আদালত, কলেজ- এই সমস্ত জায়গায় যাতায়াতের জন্য বাঁশের সেতুর ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু বর্ষা নামতেই সেই বাঁশের সেঁতুও ডুবে যায়। তখন মাড়্গ্রাম থানার পাঁচখানা গ্রাম এবং মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি গ্রাম চারমাস জলবন্দি অবস্থায় কাটায়।”

দেড়বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী ইলামবাজারে প্রকল্পের শিলান্যাস করে গেলেও এখনও কেন নির্মাণ হল না সেতুটি? জানেন না গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা হলধর মণ্ডল, অনুপম পান্ডে, জয়চন্দ্রপুর গ্রামের বিনোদ মণ্ডল, বাবলাডাঙা গ্রামের বসিরুদ্দিন সেখ, টিঠিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল সেখরা। তাঁরা বলেন, “সেঁতুর জন্য আমরণ আনশন থেকে বিভিন্ন সরকারী প্রকল্প বয়কট, সমস্ত রকমের আন্দোলন করা হয়েছে। তবুও আমাদের বঞ্চনা দূর হয় না। এই কয়েকটি গ্রামের মানুষকে নিয়ে সকলেই রাজনীতি করছেন।”

তাঁদের বক্তব্য লোকসভা নির্বাচনের সময় পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে সরকারী সংস্থা দিয়ে কাজ করা হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত সে কাজ এগোয়নি। দিন কয়েক আগে তারাপীঠে সাংসদ শতাব্দী রায় এবং অনুব্রত মণ্ডলকে কাজটি নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। কিন্তু প্রকল্পে এক কোদাল মাটি কাটাও হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি তৃণমূলের বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর ওই কাজটি প্রথম বড় কাজ হিসাবে হাতে পেয়েছি। সুতরাং দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিষয়টি আমাদের আমলে নয়। যাঁরা বঞ্চনার কথা বলছেন তাঁদেরকে বলি, ভাংলা কাঁদরের জন্য প্রায় বারো কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। গতকাল কাজের ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গিয়েছে। বর্ষা পেরোলেই কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bhangla ilambazar margram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE