Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভুয়ো তথ্যে চাকরি, অভিযুক্ত অধ্যাপক

জাল নথি দিয়ে শিক্ষকতার অভিযোগ উঠল সঙ্গীতভবনের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই মর্মে বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন একই পদের জন্য আবেদনকারী এক প্রার্থী। অভিযুক্ত অধ্যাপককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকী, এসএমএস-এরও জবাব দেননি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০০:৪৭
Share: Save:

জাল নথি দিয়ে শিক্ষকতার অভিযোগ উঠল সঙ্গীতভবনের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই মর্মে বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন একই পদের জন্য আবেদনকারী এক প্রার্থী। অভিযুক্ত অধ্যাপককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকী, এসএমএস-এরও জবাব দেননি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ৩১ মার্চ সঙ্গীতভবনের কথাকলি নৃত্য বিভাগে একটি অধ্যাপক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়। ফলপ্রকাশের পরে কেরলের এক বাসিন্দাকে বিশ্বভারতী নিয়োগ করে। নিজের লিখিত অভিযোগে কেরলেরই বাসিন্দা তথা ওই পদের আর এক দাবিদার এ রাধাকৃষ্ণন দাবি করেছেন, ওই পদে কর্মরত সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক বেশ কিছু ভুয়ো তথ্য দিয়ে বিশ্বভারতীতে চাকরি পেয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট অধ্যাপক বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ভুয়ো তথ্য দিয়েছেন। নিজের লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, “বিশ্বভারতীর ওয়েবসাইটে ওই অধ্যাপক সম্বন্ধে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে বুঝতে পারছি তিনি সম্পূর্ণ জাল নথি এবং তথ্য দিয়ে ওই চাকরি পেয়েছেন।” অভিযোগকারীর আইনজীবী ইন্দ্রদীপ পাল বলেন, “আমার মক্কেলের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কথাকলি নৃত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। প্রয়োজনীয় তদন্তের আর্জিতে আমরা বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”

সঙ্গীতভবনের অধ্যক্ষ সব্যসাচী সরখেল জানিয়েছেন, বিষয়টির তাঁর আমলের নয়। তাই তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না। যোগাযোগ করা হলে বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার ডি গুণশেখরণ বলেন, “আমি দিল্লিতে রয়েছি। এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানি না। খোঁজ নেব।” ঘটনা হল, সঙ্গীতভবনের আগের অধ্যক্ষ ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের আমলেই ওই নিয়োগ হয়েছিল। সঙ্গীতভবনের রবীন্দ্র সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপিকা বর্তমানে বিশ্বভারতীর প্রো-ভাস্ট পদে রয়েছেন। ইন্দ্রাণীদেবীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে, বিশ্বভারতীর ‘মিডিয়া ইন্টারফেস কমিটি’র চেয়ারপার্সন অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন বলেন, “আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। আইন আইনের পথেই চলবে। আমাদের কিছু বলার নেই।” ঘটনা হল, অতীতেও এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীতে জাল মার্কশিট জমা করে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছিল। যা মামলা-মোকদ্দমা অবধি গড়িয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন এক উপাচার্যকে জেলও খাটতে হয়। ফের এমন একটি গুরুতর অভিযোগ ওঠায় ঘটনার তদন্তের দাবি করেছে বিশ্বভারতীর কর্মিসভা। কর্মিসভার বর্তমান সভাপতি দেবব্রত হাজারি বলেন, “এ ধরনের ঘটনায় গুরুদেবের আশ্রমই কলঙ্কিত হচ্ছে। ওই অধ্যাপক যদি কোনও বেনিয়ম করে থাকেন, তা হলে তা তদন্ত করে দেখা দরকার। আশা করছি উপাচার্য অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।” বিশ্বভারতীর ভেঙে দেওয়ার অধ্যাপকসভার প্রাক্তন সভাপতি কিশোর ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “এতে বিশ্বভারতীরই সম্মানহানি হচ্ছে। বিশ্বভারতীর তদন্ত করা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE