বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এক বধূকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রামপুরহাট পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মল্লিকা মাহারা (৩৫)। রবিবার ওই বধূর পরিজনেরা পুলিশের কাছে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত অষ্টম মাহারা পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, তার খোঁজ চলছে।
পবারো বছর আগে বোলপুরের কালিকাপুরের বাসিন্দা মল্লিকার সঙ্গে রামপুরহাটের মালপাড়ার পেশায় কাঠমিস্ত্রি অষ্টম মাহারার বিয়ে হয়েছিল। দু’জনের তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বাকি দুই ভাইবোন প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়া। নিহত বধূর বড় মেয়ে জানায়, বাবা-মায়ের প্রায় ঝগড়া হতো। তার দাবি, “মা অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতেন। বাবা এই নিয়ে মাকে বকতেন। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও এই নিয়ে বাবার সঙ্গে মায়ের ঝগড়া হয়। মা বাবাকে চড় মেরেছিলেন।” শনিবার সকালে আবার ফোন নিয়ে ওই দম্পতির আর এক প্রস্থ ঝগড়া হয়। মেয়েটি বলে, “আমি তখন পাড়াতেই অন্য এক জনের বাড়িতে ছিলাম। পাড়ার লোকের চিত্কারে বাড়ি এসে দেখি মা ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত ঝড়ছিল। পুলিশ এসে মা-কে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, আশঙ্কাজনক ওই বধূ কোনও মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়ে যেতে পারেননি। চিকিত্সাধীন অবস্থায় বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে, নিহতের মেয়ের সঙ্গে একমত হতে পারেননি মল্লিকাদেবীর কাকা হরিচরণ হাজরা। তাঁর বক্তব্য, “মল্লিকার সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক ছিল না বলেই জানি। আসলে এটা একটা রটনা। অতটুকু মেয়ে সেটাকেই সত্যি ভেবে বসে আছে। সেটা ভাবাটা অবশ্য অস্বাভাবিক কিছু নয়।” বরং তাঁর অভিযোগ, অষ্টম মাঝে মধ্যেই শাশুড়ির কাছ থেকে টাকাপয়সা চাইতো। তার জন্য মল্লিকাকে মারধর করে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েও দিত। হরিচরণবাবু বলেন, “মল্লিকার বাবা নেই। মা পরের বাড়িতে খেটে সামান্য উপার্জন করেন। গরিব মানুষ। আমরাই ওঁর মায়ের জন্য টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করতাম।” নিজের উপরে স্বামীর এই চাপ নিতে না পেরেই মল্লিকাদেবী তার প্রতিবাদ করতেন বলে তাঁর দাবি। তার জেরেই অষ্টম স্ত্রীকে খুন করেছে বলে হরিচরণবাবুদের অভিযোগ। বধূর মা কণিকাদেবীর আবার দাবি, “জামাই (অষ্টম) আমার আর এক জামাইকে ফোন করে মেয়েকে মেরে ফেলার কথা জানিয়েছিল। তার পরেই পালিয়েছে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, মল্লিকাদেবীর মাথায় তিনটি গভীর ক্ষতের দাগ রয়েছে। এ ছাড়া পিঠের দিকে মারধরের কালসিটে দাগও মিলেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy