Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শিশুশ্রমিক স্কুলে ভাতা অমিল, বিক্ষোভ

স্কুল আছে। ছাত্রছাত্রীও আছে। প্রতি দিন পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, সেই শিশুরা না পাচ্ছে নতুন পাঠ্যবই, না দেওয়া হচ্ছে তাদের প্রাপ্য ভাতা। এমনকী, স্কুলের শিক্ষকেরাও প্রায় ১৯ মাসের সাম্মানিক পাননি। এ সবের প্রতিবাদে সোমবার বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিলেন করলেন জেলার শিশুশ্রমিক কল্যাণ স্কুলের শিক্ষকেরা।

বাঁকুড়া ডিএম অফিসের সামনে বিক্ষোভ। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়া ডিএম অফিসের সামনে বিক্ষোভ। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১৭
Share: Save:

স্কুল আছে। ছাত্রছাত্রীও আছে। প্রতি দিন পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, সেই শিশুরা না পাচ্ছে নতুন পাঠ্যবই, না দেওয়া হচ্ছে তাদের প্রাপ্য ভাতা। এমনকী, স্কুলের শিক্ষকেরাও প্রায় ১৯ মাসের সাম্মানিক পাননি। এ সবের প্রতিবাদে সোমবার বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিলেন করলেন জেলার শিশুশ্রমিক কল্যাণ স্কুলের শিক্ষকেরা।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২০০৭ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার প্রজেক্ট’-এর আওতায় জেলায় জেলায় শিশুশ্রমিক কল্যাণ স্কুল চালু করা হয়। স্কুলছুট ও শিশুশ্রমিকদের তিন বছর এই সব স্কুলে পড়িয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী সাধারণ স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসে ভর্তি করা হয়। এই মুহূর্তে বাঁকুড়ায় ৫৯টি এমন শিশুশ্রমিক কল্যাণ স্কুল চলছে, যার মধ্যে শালতোড়া ব্লকে ১২টি, বাঁকুড়া ১ ব্লকে ৭টি, রানিবাঁধ ব্লকে ৬টি, বাঁকুড়া ২ ব্লকে ৪টি, সিমলাপাল ব্লকে ৩টি, হিড়বাঁধ ব্লকে ৪টি, সোনামুখী ব্লকে ৩টি স্কুল রয়েছে। বিষ্ণুপুর, বড়জোড়া, সারেঙ্গা, জয়পুর, ইন্দাস, রাইপুর ও মেজিয়ায় ২টি করে স্কুল এবং পাত্রসায়র, খাতড়া, কোতুলপুর, ইঁদপুর, ওন্দা ও ছাতনা ব্লকে ১টি করে শিশুশ্রমিক কল্যাণ স্কুল চলছে। প্রায় ১৩০০ ছাত্রছাত্রী এই স্কুলগুলিতে পড়াশোনা শিখছে। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে মাসে ১৫০ টাকা করে ভাতা এবং স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরও পদ অনুসারে মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার কথা। আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, প্রায় ১৯ মাস ধরে শিশুশ্রমিক স্কুলের পড়ুয়ারা ভাতা পাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সাম্মানিকও। দু’বছর হল নতুন সিলেবাসের বই দেওয়া হয়নি স্কুলগুলিতে। শুধু মিড-ডে মিল ছাড়া আর কিছুই কার্যত হচ্ছে না ওই সব স্কুলে। ‘স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার ওয়েলফেয়ার স্কুল’-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক কার্তিক মাকড় বলেন, “সরকার এই প্রকল্প নিয়ে উদাসীন। আমরা আমাদের সমস্যার কথা একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” তাঁর আক্ষেপ, এই প্রকল্পের জন্য বহু শিশুশ্রমিক শিক্ষার আলো পাচ্ছিল। প্রশাসনের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে, প্রকল্পটাই হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করছে জেলা প্রশাসন। শিশুশ্রমিক প্রকল্পের জেলা আধিকারিক তথা জেলার অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার সুমন্ত শেখর রায় বলেন, “দিল্লি থেকে টাকা না আসাতেই শিক্ষকদের বকেয়া সাম্মানিক মেটানো যাচ্ছে না, শিশুশ্রমিক স্কুলের ছেলেমেয়েদেরও কয়েক মাসের ভাতা বাকি রয়েছে।” তবে কেন্দ্র টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE