Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সব দলের সমর্থনে ঝালদার পুরপ্রধান নির্দলের সুরেশ

টানাপড়েন শেষ। ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে আগেই অনাস্থা ভোটে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রদীপ কর্মকারকে। শুক্রবার নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত হলেন নির্দলের সুরেশ অগ্রবাল। পুরসভা পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে প্রদীপবাবুর বিরুদ্ধে তাঁর দল তৃণমূলেরই দুই কাউন্সিলর-সহ ছ’জন অনাস্থা এনে প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁদের অন্যতম ছিলেন সুরেশবাবু। পুরপ্রধান আস্থা প্রমাণে উদ্যোগী হননি। শেষে বিক্ষুদ্ধরা প্রশাসনের সম্মতিতে অনাস্থা ভোট ডাকেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০১:০৭
Share: Save:

টানাপড়েন শেষ। ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে আগেই অনাস্থা ভোটে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রদীপ কর্মকারকে। শুক্রবার নতুন পুরপ্রধান নির্বাচিত হলেন নির্দলের সুরেশ অগ্রবাল।

পুরসভা পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে প্রদীপবাবুর বিরুদ্ধে তাঁর দল তৃণমূলেরই দুই কাউন্সিলর-সহ ছ’জন অনাস্থা এনে প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁদের অন্যতম ছিলেন সুরেশবাবু। পুরপ্রধান আস্থা প্রমাণে উদ্যোগী হননি। শেষে বিক্ষুদ্ধরা প্রশাসনের সম্মতিতে অনাস্থা ভোট ডাকেন। ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জনই প্রদীপবাবুকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন। প্রদীরবাবু সে দিন কলকাতায় ছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, উপস্থিত না থাকার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে ১০-০ তে অনাস্থা প্রস্তাব পুরসভার বৈঠকে পাশ হয়ে গিয়েছে।

এ দিন পুরপ্রধান গঠনের বিশেষ সভায় পুরভবনে ১০ জন কাউন্সিলরই উপস্থিত ছিলেন। আস্থা ভোটের দিন আসেননি। এ দিন ঝালদায় থাকলেও গরহাজির ছিলেন প্রদীপবাবু ও তাঁর সময়ে উপ পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া বামফ্রন্টের উত্তম চন্দ্র। কৌতূহল অবশ্য তাঁকে নিয়ে কম ছিল না। কারণ কিছু দিন আগে তিনি নিজেকে তৃণমূলের শহর কমিটির সভাপতি বলে দাবি করে ওই দুই বিক্ষুদ্ধ কাউন্সিলর- মনোজ সাও ও মায়ারানি চন্দ্র-সহ তিনজনকে দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেন। এমনকী প্রচারপত্র ছাপিয়ে শহরময় তা ছড়ানোও হয়। তাই এ দিন প্রদীপবাবু কী করেন তা নিয়ে শহরে জোর আলোচনা ছিল। নজর ছিল সব মহলেরই। পুরভবন চত্বরে পুলিশের পাহারাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এই বহিস্কার নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরবাসীর একাংশের দাবি, এ দিনের সভায় প্রদীপবাবু অনুপস্থিতিই বুঝিয়ে দিল তিনি আর লড়াইয়ে নেই।

পুরপ্রধান নিবার্চনের বিশেষ এই সভায় পুরপ্রধান হিসেবে শুধুমাত্র নির্দলের সুরেশ অগ্রবালের নাম প্রস্তাব হয়। তা করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কাঞ্চন ধীবর। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন সিপিএম সমর্থিত নির্দল শিখা মণ্ডল। এরপর বাকি সদস্যদের মত প্রকাশ ছিল সময়ের অপেক্ষা। ঝালদা পুরসভার এগ্জিকিউটিভ অফিসার তাপসকুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এ দিনের বিশেষ সভায় নির্দলের সুরেশ অগ্রবাল পুরপ্রধান হিসেবে নিবার্চিত হয়েছেন। উপস্থিত ১০ জন কাউন্সিলরের সবর্সম্মতিক্রমে তাঁকে পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষস্তরে জানিয়ে দেব।”

নবনিবার্চিত পুরপ্রধান সুরেশবাবু বলেন, “আমাদের এখন প্রধান দায়িত্ব ঝালদার উন্নয়নে নজর দেওয়া। সকলের সঙ্গে কথা বলে যে সমস্ত কাজ পড়ে রয়েছে, তা দ্রুত শেষ করতে হবে।” সদ্য অপসারিত পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “ঝালদার মানুষ দেখলেন এই কাউন্সিলরা ঝালদার উন্নয়নের জন্য নয়, নিজেদের স্বার্থেই ক্ষমতার হাতবদল করলেন।” উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রদীপবাবু বলেন, “সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ঝালদায় আমরা মোট ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টিতেই এগিয়ে রয়েছি। তিনটিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছি। আর বামফ্রন্টের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী পুরপ্রধান হলেন। এতে মানুষের রায়ের প্রতিফলন নেই।” ঝালদার বাসিন্দারা অবশ্য জানাচ্ছেন, দলবদলের বা ক্ষমতা বদলের পরিবর্তে কাউন্সিলররা যদি ঝালদার উন্নয়নে নজর দেন, তাহলেই উপকার হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jhalda municipal corporation new oppoinment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE