Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ

একশো দিন কাজ প্রকল্পে সেচ খাল সংস্কারে বেনিয়ম হয়েছে অভিযোগ তুলে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন দুবরাজপুরের কুখুটিয়া মহুলা ও ডিহিপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে আসা মূল সেচখালের ৫০০ মিটার অংশে (যেটা বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের এলাকার কুখুটিয়া সংসদের মধ্যে পড়েছে) কোনও কাজ না করেই দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ওই সেচখাল সংস্কার দেখিয়ে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯২৮ টাকা কার্যত নয় ছয় করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২২
Share: Save:

একশো দিন কাজ প্রকল্পে সেচ খাল সংস্কারে বেনিয়ম হয়েছে অভিযোগ তুলে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন দুবরাজপুরের কুখুটিয়া মহুলা ও ডিহিপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে আসা মূল সেচখালের ৫০০ মিটার অংশে (যেটা বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের এলাকার কুখুটিয়া সংসদের মধ্যে পড়েছে) কোনও কাজ না করেই দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ওই সেচখাল সংস্কার দেখিয়ে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯২৮ টাকা কার্যত নয় ছয় করেছেন। তদন্ত দাবি করে এ দিন দুবরাজপুরের বিডিও, জেলাশাসক ও সেচ দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

নথি অনুযায়ী ১০০ দিন কাজ প্রকল্পে, বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের কুখুটিয়া এলাকা দিয়ে যাওয়া সেচ খাল সংস্কার শুরু হয়েছিল চলতি বছরের জুন মাসের ১৯ তারিখ। কাজটি শেষ হয় ওই মাসেরই ৩০ তারিখ। মোট ৫৬ জন জবকার্ডধারী ওই প্রকল্পে ৮ থেকে ১২ দিন কাজ করেছেন। দিনকয়েক আগেই ওই জাবকার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টে কারও ২০২৮ টাকা এবং কারও ১৩৫২ টাকা জমা পড়েছে। প্রকল্প রূপায়নের দায়িত্বে ছিলেন সেচ দফতরের খয়রাশোলের হিংলো জলাধারের দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক, এসডিও (হিংলো সেচ) সাধন গঙ্গোপাধ্যায়। দুবরাজপুরের কুখুটিয়া ও মহুলা গ্রাম থেকেই ওই জবকার্ডধারীদের কাজে ডাকা হয়েছিল। যদিও সরকারি নথির সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছেন শ্যামল রুজ, রিঙ্কু গঙ্গোপাধ্যায়, রঞ্জিত বাগদি, সুনীল পাল, নিতাই বাগদির মতো কুখুটিয়া, মহুলা ও ডিহিপাড়া গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, এমন কোনও একশো দিনের প্রকল্পে কাজ হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। এলাকার কোনও জবকার্ডধারী কাজ করেছে বলেও তাঁরা জানেন না। আরও অভিযোগ, টাকা জমার পর প্রত্যেককে দিয়ে টাকা তুলিয়ে কিছু টাকা জবকার্ডধারীদের দিয়ে, বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই আধিকারিক।

অভিযোগ মানেন নি এসডিও (হিংলোসেচ) সাধন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে প্রকল্পে খাল সংস্কারের কাজ হয়েছে। যাঁরা কাজ করেছেন তাঁরা টাকা পেয়েছেন। বেমিয়মের অভিযোগ কেন উঠছে, বুঝতে পারছি না। তবে কাজ সকলকে দেওয়া সম্ভব হয় নি, এই নিয়ে ক্ষোভ থাকতে পারে।” গ্রামবাসীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, খাল সংস্কারে মেশিন ব্যবহৃত হয়েছিল। সামান্য মাটিও কাটা হয়েছে তবে সেটা যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে হয়েছে, সেটা জানতাম না। অভিযোগকারিরা প্রশ্ন তুলছেন, যন্ত্র ব্যবহারের কথা মানেনি নি সাধন বাবু। কী বলছেন ওই কাজে নাম থাকা জবকার্ডধারীরা? জবকার্ড রয়েছে কানাই গঙ্গোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “একদিনও কাজ না করেই আমার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে।” আরও এক জবকার্ডধারী সুভাষ মণ্ডলের দাবি, “সাতদিন কাজ করে পেয়েছি ৯০০ টাকা পেয়েছি।” দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেলেও আমরা সরাসরি তদন্ত করতে পারি না। ওঁদের অভিযোগ জেলাকে জানাব। নির্দেশ মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

কী বলছে সেচ দফতর?

দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুজিত কোনার বলেন, “ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানাল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সঞ্জয় সিংহকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE