Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সিপিএম নেতার চিকিৎসায় তৎপর অনুব্রত

কখনও পুলিশের গাড়িতে বোমা মারতে বলা, কখনও নির্দলদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি। কখনও আবার বিরোধীদের ‘ইঁদুর’ তকমা দেওয়া। বিতর্ক তাঁর বরাবরের সঙ্গী। নাম জড়িয়েছে খুনের মামলাতেও। বীরভূমে সিপিএমকে ‘উৎখাত’ করায় তাঁর ভূমিকার কথা মেনে নেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাও। সেই অনুব্রত মণ্ডলই এ বার ‘অন্য’ ভূমিকায়।

মহেন্দ্র জেনা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:১০
Share: Save:

কখনও পুলিশের গাড়িতে বোমা মারতে বলা, কখনও নির্দলদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি। কখনও আবার বিরোধীদের ‘ইঁদুর’ তকমা দেওয়া। বিতর্ক তাঁর বরাবরের সঙ্গী। নাম জড়িয়েছে খুনের মামলাতেও। বীরভূমে সিপিএমকে ‘উৎখাত’ করায় তাঁর ভূমিকার কথা মেনে নেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাও। সেই অনুব্রত মণ্ডলই এ বার ‘অন্য’ ভূমিকায়।

তাঁরই দলের লোকেদের হাতে ‘প্রহৃত’ সিপিএমের এক বর্ষীয়ান নেতার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগী হলেন খোদ বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। লোকসভা ভোটের আগে যে দলের বিরুদ্ধে তিনি প্রায় রোজই তোপ দাগছেন, সেই দলেরই জেলা কমিটির সদস্যকে অনুব্রত কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করালেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। যে প্রসঙ্গে অনুব্রত নিজে বলছেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ খুঁজতে যাবেন না। ওই পরিবার চাইছিল ভাল কোনও হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে। আমি শুধু হাসপাতালে ভর্তি করতে সাহায্য করেছি। এর থেকে বেশি কিছু নয়।”

বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের সভার জন্য ৯ এপ্রিল প্রচারে বেরিয়েছিলেন সিপিএম নেতা, বছর সত্তরের হীরেন্দ্রনাথ ঘোষ। বোলপুরের সর্পলেহনা-আলবাঁধা পঞ্চায়েতের রতনপুরের কাছে তাঁদের গাড়িতে তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। হীরেন্দ্রনাথবাবুকে মারধর করা হয়। জখম হন সিপিএমের পাঁচ জন। হীরেন্দ্রনাথবাবু-সহ দুজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় পাড়ুইয়ে সাগর ঘোষ খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত, স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা মহাদেব রায়ের, যিনি অনুব্রত-অনুগামী হিসাবেই পরিচিত।

হীরেন্দ্রনাথবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাল চিকিৎসার জন্য তাঁকে প্রথমে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শয্যা পাওয়া গেলেও ভেন্টিলেশন মেলেনি। তাই এম আর বাঙুরে যোগাযোগ করা হয়। সেখানেও একই সমস্যা দেখা দেওয়ায় শেষমেশ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। এই গোটা পর্বেই আহত সিপিএম নেতার পরিবারকে দূর থেকে সাহায্য করেছেন অনুব্রত মণ্ডল।

দলের লোকেরা জড়িত বলে অভিযোগ ওঠার জন্যই কি সাহায্য? অনুব্রত বলছেন, “হীরুদা আমার পাড়ার লোক। দু’জনের রাজনৈতিক আদর্শ আলাদা হতে পারে। তাই বলে মানুষ যদি অসুস্থ হয় বা কেউ সাহায্য চাইলে কি সেটুকুও করব না? এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।” তাঁর সংযোজন, “হীরুদা বনেদি পরিবারের লোক। তাঁদের টাকার অভাব নেই। আমার তো টাকা নেই। তা ছাড়া, ওই পরিবার কোনও আর্থিক সাহায্যও চাইছে না। নিজের পাড়ার লোকের ভাল চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে সাহায্য করেছি মাত্র।”

হীরেন্দ্রনাথবাবুর ভাইপো মনা ঘোষ বলেন, “একই পাড়ার লোক হওয়ায় কেষ্টদা (অনুব্রত)-র কাছে আমরা সাহায্য চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সে জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mahendra jena anubrata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE