Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ধর্ষণের পরে গলায় ফাঁস, খুন কিশোরী

রবিবার ভোরে বাঁকুড়ার তালড্যাংরা থানা এলাকার ওই ঘটনায় পড়শিরা ওই তরুণকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তালড্যাংরা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

দিনের পর দিন পড়শি তরুণ উত্ত্যক্ত করত বলে ভাইকে নিয়ে মাঠে শৌচকর্ম সারতে গিয়েছিল এক কিশোরী। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। সেই তরুণের বিরুদ্ধেই ভাইকে ধমকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠল।

রবিবার ভোরে বাঁকুড়ার তালড্যাংরা থানা এলাকার ওই ঘটনায় পড়শিরা ওই তরুণকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা দাবি করেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তরুণ পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছে। ধর্ষণ হয়েছে কি না, জানতে দেহটি ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, খুন ও পকসো আইনে (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফর্ম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” আজ, সোমবার তাকে খাতড়া আদালতে তোলা হবে।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তেরো বছরের ওই কিশোরী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। এ দিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ নিজের বছর দশেকের ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে দু’শো মিটার দূরে গ্রামের এক প্রান্তে ফাঁকা জায়গায় শৌচকর্ম সারতে গিয়েছিল সে। সেখানেই বছর উনিশের পড়শি ওই তরুণের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। অভিযোগ, ওই যুবক প্রথমে কিশোরীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। পরে তার ভাইকে ধমকে বাড়ি চলে যেতে বলে। এরপরেই ওই নাবালিকাকে টেনে নিয়ে যায় পাশের ধান জমিতে। সেখানেই ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে গলায় ওড়না জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ।

এ দিকে ওই নাবালিকার ভাই বাড়িতে ফিরে এসে ঘটনাটি তার বাবা, মা ও পড়শিদের জানায়। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে ছুটে যান। তাঁরা ধান জমিতে খোঁজাখুজি করতে গিয়ে দেখেন কিশোরীর দেহ পড়ে রয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ায় আরও লোক জড়ো হয়। খোঁজ করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই তরুণ সেই সময় গ্রামেরই একটি পুকুরে স্নান করতে নেমেছিল। পড়শিরা তাকে দেখতে পেয়ে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। দেহটি উদ্ধার করে ওই তরুণকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে নিহত কিশোরীর মা ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

নিহতের মায়ের অভিযোগ, পেশায় রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে ওই পড়শি তরুণ বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিল। মেয়ের কাছে সে কথা শুনে, তাঁরা ওই তরুণের পরিবারের লোককে সতর্ক করেছিলেন। ছেলেটি বাড়ির লোকেরা বকাঝকা করায় সে ওই কিশোরীর উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পাছে সে মেয়ের ক্ষতি করে, তাই তাকে বাড়ির লোকেরা একা ছাড়ত না। সে কারণেই এ দিন ভোরে বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মেয়ের সঙ্গে ছোট ছেলেকেও তিনি সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন।

নাবালিকার মায়ের আক্ষেপ, “ছেলেটা আমার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরেই বিরক্ত করছিল। ওর পরিবারের কাছে সে কথা জানানোয় ওর রাগ আরও বেড়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আমার মেয়েকে অত্যাচার করে মেরেই ফেলল ছেলেটা। ওর কড়া শাস্তি চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Murder ধর্ষণ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE