রামপুরহাটে পরপর দুর্ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করতেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসল পুলিশ, প্রশাসন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেন মহকুমা পুলিশ, প্রশাসনের সঙ্গে। তাতে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাট মহকুমা এলাকার ৬টি থানার অফিসার-ইন-চার্জ, সার্কল ইন্সপেক্টর-সহ রামপুরহাট ও নলহাটি পুরসভার পুরপ্রধানরা। উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছেও দুর্ঘটনার কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে মত জানতে চাওয়া হয়।
তার ভিত্তিতে উঠে এসেছে একাধিক মত এবং সিদ্ধান্ত। পুলিশ জানাচ্ছে, সেগুলি হল— এক, জাতীয় সড়কে গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৪০ কিমি এর মধ্যে বেঁধে রাখায় জোর দেওয়া হবে। এর জন্য জায়গায় জায়গায় আরও স্পিড ব্রেকার, গার্ড ব্রেকার তৈরি করা হবে। দুই, বিধি মেনে গাড়ি চালানো হচ্ছে কিনা দেখতে জাতীয় সড়ক ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। মাইকে তা প্রচার করা হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সাহায্য জরুরি বলে মনে করেন রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মিতুন দে। তাঁর কথায়, ‘‘মহকুমা এলাকায় দুর্ঘটনা কমাতে যথেষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। তবুও দুর্ঘটনাগুলির বেশির ভাগ জাতীয় সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণ বিধি না মানার জন্য ঘটছে।’’
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে হেলমেটবিহীন অবস্থায় গাড়ি চালালে জরিমানা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। টোটো চালক, ট্রাক্টর চালকদের লাইসেন্স এবং বয়সের কাগজপত্র দেখা হবে। রাস্তার দু’ধারে ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখলে পুলিশ, প্রশাসন এবং পুরসভা থেকে জরিমানা করা হতে পারে।
শহরে টোটো চলাচলে গতিবিধির উপরে নজরদারি চলবে। রাতের বেলায় দুর্ঘটনা রুখতে জাতীয় সড়কের বেশ কিছু মোড়ে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মাড়গ্রাম মোড় এবং রামপুরহাট হাসপাতাল পাড়া এলাকায় যানজট এবং দুর্ঘটনা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।
মহকুমা এলাকার প্রতিটি থানায় রোড ম্যাপ তৈরি করার জন্য অফিসারদের বলা হয়েছে। সেই রোড ম্যাপে থানার কতটুকু অংশ জাতীয় সড়কের মধ্যে পড়ছে, কতটুকু রাজ্য সড়কের আওতায় এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনাতেই কতটা সে ব্যাপারে ম্যাপে উল্লেখ থাকবে। এর ফলে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে। পুলিশ আরও দ্রুত ঘটনাস্থলেও পৌঁছতে পারবে। দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে প্রতিটি পঞ্চায়েত, শহর এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রতিদিনের রোড ট্রাফিক ডিউটির রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি থানায় অ্যাক্সিডেন্ট রেজিস্টার্ড খাতা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে কোথায়, কখন দুর্ঘটনা ঘটছে সে ব্যাপারে জানা যাবে।
জাতীয় সড়কের দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক বা গাড়ির প্রতি নজরদারি আরও বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয় বৈঠকে। আলোচনা হয়
বাসের মাথায় যাত্রী চাপানো নিয়েও। জাতীয় সড়কের নলহাটি থেকে নাকপুর চেকপোস্ট পর্যন্ত রাস্তা দ্রুত সংস্কারের ব্যাপারে আশ্বস্থ করেছেন মন্ত্রী। আশিসবাবু বলেন, ‘‘আগামী সোমবার এ ব্যাপারে পূর্ত দফতরের সচিবের সঙ্গে কথা বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy