Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দরবার করে রাস্তা, বিদ্যুৎ পেয়ে এ বার নির্মল গ্রাম গড়ার উদ্যোগ

গ্রামের সব বাড়িতে শৌচাগার চেয়ে আর্জি

গ্রামের সমস্ত বাড়িতে শৌচালয় গড়ে দিতে হবে। জেলাশাসকের কাছে এই আর্জি নিয়ে বুধবার পুরুলিয়ায় এলেন আড়শা ব্লকের পিছিয়ে পড়া গ্রাম বামুনডিহার কয়েকজন তরুণ।

কাছে: পুরুলিয়ার জেলাশাসকের সামনে। নিজস্ব চিত্র

কাছে: পুরুলিয়ার জেলাশাসকের সামনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৯
Share: Save:

গ্রামের সমস্ত বাড়িতে শৌচালয় গড়ে দিতে হবে। জেলাশাসকের কাছে এই আর্জি নিয়ে বুধবার পুরুলিয়ায় এলেন আড়শা ব্লকের পিছিয়ে পড়া গ্রাম বামুনডিহার কয়েকজন তরুণ।

এক সময়ে যে গ্রামে মেয়ের বিয়ে দিতে বাবা পাঁচ বার ভাবতেন, প্রশাসনের দরবারে বারবার গিয়ে সেই বামুনডিহারই ভোল ক’বছরে বদলে দিয়েছেন ওই তরুণেরা। এখন গ্রামে রাস্তা হয়েছে, এসেছে বিদ্যুৎ, চারপাশ ভরিয়েছেন সবুজ গাছে। সেই তরুণেরাই এ বার স্কুল-কলেজে না গিয়ে, জমির কাজ ফেলে প্রশাসনকে জানাতে এসেছিলেন, শৌচাগার গড়ে দিন। নির্মল গ্রাম গড়তে চান তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই গ্রামে ১৩৫টি পরিবারের বাস। তরুণদের তৈরি করা সংগঠনের মুখপাত্র দেবীলাল মাহাতোর কথায়, ‘‘আগে গ্রামে কিছু শৌচাগার তৈরি করা হলেও তা এখন আর ব্যবহারের যোগ্য নেই। তাই ঘরে ঘরে শৌচাগার না থাকলে গ্রামকে কিছুতেই নির্মল করা যাচ্ছে না।’’ তাঁরা জানান, গ্রামের যত্রতত্র প্লাস্টিক, থার্মোকল ফেলা বন্ধ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু শৌচাগার না থাকায় সার্বিক ভাবে গ্রামকে নির্মল করতে পাচ্ছেন না তাঁরা। মকর সংক্রান্তির সময়ে তাঁরা গ্রামে মেলার আয়োজন করেছিলেন। সেখানেও নির্মল গ্রামের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তাঁরা প্রচার চালান। তখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, জেলাশাসকের কাছে শৌচাগার তৈরির দাবি নিয়ে তাঁরা যাবেন।

এ দিন যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে বিদেশি মাহাতো বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে শৌচাগার নেই।’’ একই বক্তব্য জিউড় লায়া বা জহর লায়ারও। আবার কলেজ পড়ুয়া রঞ্জিত মাহাতো, রাখাল সর্দার জানান, তাঁদের বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তৈরির পরেই দরজা ভেঙে যায়। আর ব্যবহার করা যায় না।

মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে কাজে গতি আনতে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক করছেন জেলাশাসক। বিভিন্ন দফতরকেও কাজে লাগাতে চাইছে প্রশাসন। সেখানে পিছিয়ে পড়া আড়শা ব্লকের একটি গ্রামের লোকজন ও পড়ুয়াদের এমন দাবি নিয়ে সরাসরি তাঁর কাছে হাজির হতে দেখে, খানিকটা অবাকই হয়ে যান জেলাশাসক অলকেপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই গ্রামবাসীরা আমার কাছে যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন, তা প্রশাসন স্বাগত জানাচ্ছে। অবশ্যই এই গ্রামে প্রশাসন সকলের বাড়িতে শৌচাগার গড়ে দেবে।’’ এই সংগঠনটি শৌচাগার গড়তে চায় কি না জেলাশাসক দেবীলালদের কাছে তা জানতেও চেয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীরা তাঁকে জানিয়ে দেন, প্রশাসনই শৌচাগার গড়ে দিক। পাশাপাশি বেহাল হয়ে পড়া শৌচালয়গুলি যাতে সংস্কার করা হয়, সেই আর্জিও তাঁরা জানিয়েছেন। জেলাশাসকের আশ্বাস, সেগুলি পরে মেরামত করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

District Magistrate Toilets
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE