কোনও মামলা কখন পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত হয়, এই আইনের বিশেষত্ব কী, কী ভাবেই বা কমানো যেতে পারে শিশুদের যৌন হেনস্থার ঘটনা— সে সব নিয়ে দু’দিনের জাতীয় আলোচনাসভার উদ্বোধন হল শনিবার। এ দিন ইলামবাজার গোপালনগরের এক বেসরকারি আইনি কলেজ ও ব্যাঙ্গালোরের রোস্ট্রাম লিগ্যালের উদ্যোগে ‘পকসো আইন: ২০১২’ শীর্ষক ওই সভার উদ্বোধন হয়। ছিলেন রাঁচির ‘ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক আখতার আহমেদ, কৌশিক বাগচি, জেলা শিশু সুরক্ষা সোসাইটির আধিকারিক নিরুপম সিংহ, জেলা চাইল্ড-লাইন কাউন্সিলর দেবাশিস ঘোষ, বিশ্বভারতীর অধ্যাপিকা কুমকুম ভট্টাচার্য, ফ্যামিলি কোর্ট কাউন্সিলর সোনিয়া ঘোষ।
বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে ৫০ শতাংশ বাচ্চা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। যাদের অনেকেই নির্যাতিতার পরিচিত। ছেলেদের ক্ষেত্রেও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। ১৮ বছরের নীচে ছেলেমেয়েদের এ
রকম যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০১২ সালে পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনের প্রণয়ন হয়। এই আইনে বিশেষ ভাবে বাচ্চাদের সমস্যা জেনে, তাদের সঙ্গে একান্তে কথা বলে অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চারা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে। সেই অবস্থায় একই জিনিস বারবার জিজ্ঞেস করলে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। ফলে কাজ করতে হয় অতি সতর্ক হয়ে।
রোস্ট্রাম লিগ্যালের প্রতিষ্ঠাতা ওনকার আনন্দ জানান, পকসো আইন আরও বেশি প্রসার হওয়া দরকার। বিষয়টি নিয়ে এখনও অনেক মানুষ কিছু জানেন না কিংবা জানলেও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন। আলোচনা সভার অন্য অধিকারিকরাও এ বিষয়ে এক মত। তাঁদের মতে, গ্রামে শিশুদের নির্যাতন রুখতে সবচেয়ে জরুরি ভূমিকা নিতে পারেন সেই গ্রামের বাসিন্দারাই। বাইরে থেকে আসা সন্দেহজনক লোকজনদের উপরে যথাযথ নজরদারির মাধ্যমে তা করা সম্ভব৷ এ ভাবেই জেলাস্তরের শিশু-সুরক্ষা কমিটিগুলিকেও সাহায্য করতে পারেন এলাকার মানুষ৷ প্রত্যেক এলাকায় ব্লক স্তর, জেলাস্তরের কমিটি রয়েছে। প্রত্যেক থানায় এক জন করে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার পুলিশ অফিসার রয়েছেন। তাঁদের সমস্ত বিষয় জানাতে হবে। তাঁরাই ঠিক করবেন সমস্যাটি পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত হবে কি না।
এক শ্রোতার প্রশ্নের উত্তরে মানবাধিকার কর্মী খাদিজা ফারুকি জানান, পকসো আইন করা হয়েছে ১৮ এর নীচে নাবালক কিংবা নাবালিকার যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। দেখা গেল কোনও মেয়ের বয়স হয়তো ১৪ বছর। সেক্ষেত্রে সেটি যৌন হেনস্থা নাকি যৌনমিলন এই বিষয়টি নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা হয়। তারপর সেটি যৌন হেনস্থা হলে তবেই পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত হয় ওই কেস। আলোচনাসভার আহ্বায়ক আইন কলেজের অধ্যাপিকা অনিন্দিতা সরকার (দত্ত) জানান, পকসো আইন নিয়ে আলোচনা প্রত্যেক জায়গাতেই হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি আরও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই এই আয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy