Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
আদালতের নির্দেশে আজ ফের মনোনয়ন

জেলা পরিষদে নজর বিরোধী শিবিরের

শুক্রবার আদালতের নির্দেশে ফের মনোনয়নের সুযোগ বিরোধীদের কাছে। কিন্তু লাখ টাকার প্রশ্ন হল, সাত দিন সুযোগ পেয়েও যেখানে ‘উন্নয়নের বাধা’ ঠেলে মনোনয়ন দাখিল করা সম্ভব হয়নি, সেখানে এক দিনের মধ্যে তা কতটা করা সম্ভব।

লিখন: দখল দেওয়াল। বাকি শুধু মনোনয়ন। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

লিখন: দখল দেওয়াল। বাকি শুধু মনোনয়ন। সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৪৭
Share: Save:

পাখির চোখ জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়ন। দ্বিতীয় বার মনোনয়ন দাখিলের সুযোগ তাই নষ্ট করতে চায় না জেলা বিজেপি।

শুক্রবার আদালতের নির্দেশে ফের মনোনয়নের সুযোগ বিরোধীদের কাছে। কিন্তু লাখ টাকার প্রশ্ন হল, সাত দিন সুযোগ পেয়েও যেখানে ‘উন্নয়নের বাধা’ ঠেলে মনোনয়ন দাখিল করা সম্ভব হয়নি, সেখানে এক দিনের মধ্যে তা কতটা করা সম্ভব। প্রকাশ্যে না বললেও এটা যে কঠিন কাজ, তা আড়ালে মানছেন বিরোধীরা। আর সেই জন্যই ভিন্ন ভাবনা নিয়েছে জেলা বিজেপি।

জেলা বিজেপির বক্তব্য, বীরভূমের ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২ হাজার ২৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩২৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৪৬৫টি আসনের মধ্যে মনোনয়ন জমা গিয়েছে ৭৭টি আসনে। মনোনয়ন পরীক্ষায় বাদ গিয়েছেন কিছু প্রার্থী। আগামী কাল মনোনয়ন দাখিলের সুযোগ পুরোমাত্রায় কাজে লাগাতে হলে প্রায় দু’হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত, ৪০০ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন দাখিল করতে হয়।

দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য— তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেওয়া হয় আদালতের নির্দেশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় তা সম্ভব হবে। কিন্তু তার পরের উদ্বেগ আরও বেশি। কারণ প্রশাসনকে ‘কাজে লাগিয়ে’ বিরোধী প্রার্থীদের উপরে যে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে শাসকদল, তাতে এত সংখ্যক প্রার্থীকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁদের বক্তব্য, এমন পরিস্থিতিতে জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়ন দেওয়া গেলে এক ঢিলে দুই পাখিই মারা যাবে।

কী ভাবে? বিজেপি বলছে, ১৯টি ব্লকে ১, ২ বা ৩টি করে আসন মিলিয়ে জেলা পরিষদে মোট আসন ৪২টি। ২৫-৩০টি আসনে প্রার্থী দিতে পারলেই মানুষ ভোট দিতে বেরোতে পারবেন। কারণ, এখনও যা সমীকরণ তাতে মাত্র ৫টি ব্লকে সীমিত রয়েছে পঞ্চায়েত ভোট। এই পরিস্থিতিতে একটি ব্লকে ১ বা ২টি জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়ন দাখিল করতে পারলে সেখানকার মানুষ ভোট দিতে পারবেন। লোকসভা ভোটের আগে অন্তত নিজেদের শক্তি যাচাই করার একটা সুযোগ পাওয়া যাবে।

বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘আমরা যে যে ব্লকে শক্তিশালী সেখানে সব স্তরেই মনোনয়ন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু মূল নজর থাকবে জেলা পরিষদের আসনগুলিইর দিকেই।’’

প্রশ্ন ছিল, জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের ১টিতে মনোনয়ন দাখিল করার পরও তো বিজেপির দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন? রামকৃষ্ণবাবু বলছেন, ‘‘ওখান থেকেই তো শিক্ষা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগানো হবে। আশা করব, আদলতের রায় মেনে প্রশাসন এ বার অন্তত তিনটি মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন করাতে সাহায্য করবেন।’’ তবে কে বা কারা প্রার্থী হবেন, মনোনয়ন দাখিলের আগে তা প্রকাশ্যে আসবে না। এবং প্রত্যাহারের দিন না গেলে তাঁরা শাসকদলের নাগালে আসবেন না— এটাই আপাতত বিজেপির রণনীতি।

কী ভাবছে বাম শিবির? সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁদসা সুযোগ কাজ লাগানোর কথা বলছেন। তবে জেলার বামনেতারা বলছেন, জেলা পরিষদের আসনই তাঁদেরও মূল লক্ষ। শনিবার বিকেলে বামদলের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তই হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE