Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উন্নয়নে হারবে বিজেপি-বাম, দাবি শাসকের

কেন্দ্রীয় পুরস্কারের তালিকায় রাজ্যের বাকি যে দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত স্থান পেয়েছে, তাতে রয়েছে বীরভূমের একটি পঞ্চায়েত সমিতি ও দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম।

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৪৫
Share: Save:

কাজের নিরিখে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় পঞ্চায়েত স্বশক্তিকরণ পুরস্কার’ জিতেছে বীরভূম জেলা পরিষদ।

কেন্দ্রীয় পুরস্কারের তালিকায় রাজ্যের বাকি যে দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত স্থান পেয়েছে, তাতে রয়েছে বীরভূমের একটি পঞ্চায়েত সমিতি ও দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম। সেগুলি হল, রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতি, সিউড়ি ২ ব্লকের দমদমা এবং ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত।

সোমবার ফের মনোনয়ন দাখিলের সুযোগ পেলে কী হবে তা সময় বলবে। তবে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে রবিবার পর্যন্ত যা সমীকরণ তাতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ওই জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে এখনও বিরোধীদের কোনও অস্তিত্ব নেই। একটি মাত্র জেলা পরিষদের আসনে এক বিজেপি প্রার্থী মনোনয়ন করেও সরে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূল বলছে, উন্নয়ন যে হয়েছে তার স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রও। উন্নয়ন নিয়ে কটাক্ষ করার আর সুযোগ নেই। কেন্দ্রের পুরস্কার বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার পক্ষে যথেষ্ট।’’

পঞ্চায়েতে নির্বাচনে মনোনয়ন-পর্বে ‘উন্নয়নের ঢালে’ বিরোধীদের আটকে দেওয়া নিয়ে বিশেষ করে বিজেপির অভিযোগের শেষ নেই। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পুরস্কারের তালিকায় নাম থাকা কার্যত বিরোধীশূন্য বীরভূমের জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চয়েত নিয়ে কী বক্তব্য বিজেপির? বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের জবাব, ‘‘সোনার থালায় খেতে দিলেই এক জন মানুষ ভাল থাকবেন এমন নয়। শাসক দল তো মানুষের অধিকারই ছিনিয়ে নিয়েছে।’’

৪২ আসনের বীরভূম জেলা পরিষদের কয়েকটি আসনে বিরোধী প্রার্থী না থাকলেও গত বার নির্বাচন হয়েছিল অধিকাংশ আসনে। এ বার এখনও পর্যন্ত তার উল্টো ছবি। সব চেয়ে অবাক করার মতো অবস্থা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ৩টি পঞ্চায়েতে এক জনও বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেননি। পুরস্কারপ্রাপ্ত ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে গত বারও পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। প্রায় একই অবস্থা ছিল সিউড়ি ২ ব্লকের দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ১২ আসন বিশিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতে গত বার মাত্র ৫টি আসনে লড়াই হয়। এ বার এখনও এক জন বিরোধীও সেখানে মনোনয়ন দাখিল করেননি। করবেন যে, আপাতত সেই সম্ভাবনাও নেই— আড়ালে তা স্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতাদের দাবি, পেশিশক্তির বাধায় প্রার্থী দেওয়ার সামর্থ হয়নি। সোমবার, মনোনয়নের দিনেও প্রার্থী দেওয়া যাবে তেমন নিশ্চয়তাও কার্যত নেই। তবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধীদের পাশে কত মানুষ রয়েছেন, তা টের পাওয়া যেত। এক বিজেপি নেতার বক্তব্য, ‘‘কিন্তু বোমা-বন্দুকের সামনে লড়াই করা যাচ্ছে না।’’

ইলামবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের কৃষ্ণকান্ত হাজরা বলছেন, ‘‘সার্বিক উন্নয়নের জন্য শুধু এ বার নয়, আগের বারও পুরস্কার পেয়েছিলাম। কাজ না করে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা না দিয়ে তা হয়েছে, এমন নিশ্চয়ই নয়। উন্নয়নের সামনে বিরোধীরা প্রার্থী দিলেও জিতবেন না।’’ ই-গভর্নেন্সে পুরস্কারপ্রাপ্ত দমদমার উপপ্রধান এহেসানুল হক বলেন, ‘‘কে বিরোধী কে নয়— সেই তকমা না সেঁটে পক্ষপাতিত্ব না করে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি মানুষকে স্বচ্ছ, ঝামেলাহীন এবং দ্রুত সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছি। তাই মানুষ আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন।’’

বিজেপির বক্তব্য, এতই যদি উন্নয়ন হয় তা হলে মানুষের সামনে আসতে ভয় কেন? নির্বাচনে যেতে কেন এত অনিহা? তৃণমূলের জবাব, ‘‘বিরোধীরা লড়তেই পারেন। কেউ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না নামলে আমাদের কী করনীয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2018 BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE