আজ, বুধবার ভোট হবে এই মৌলপুরেই। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
জেলার সীমিত সংখ্যক আসনে সীমাবদ্ধ ছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন।
সেখানেই ভোটদানের নিরিখে নজর কাড়ল বীরভূম।
রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে ভোটদানের পরিমাণ যেখানে ৭৫ শতাংশ অতিক্রম করেনি, সেখানে বীরভূমে ভোটদানের হার ৮৩.৭৫ শতাংশ।
তবে এই বাড়তি ভোটের পিছনে ‘রিগিং’ ও ‘ছাপ্পা’ ভোটের ছায়া দেখেছেন বিরোধীরা। শাসকদল বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে গণতন্দ্রের জয় দেখছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপক্ষে প্রার্থী না থাকায় জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের একটিতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২২৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৭৯টিতে। এবং ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতির ৪৬৫টি আসনের মধ্যে কেবল ৬০টিতে। ভোট হয়েছে মূলত রাজনগর, মহম্মদবাজার, ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ ব্লকেই। হাতে গোনা কিছু আসনে ভোট হয়েছে নলহাটি ১ ও ২ এবং রামপুরহাট ১ ব্লকে।
সাকুল্যে ৩৬৬টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়েছে। কিন্তু, যেখানেই ভোট ছিল সেখানেই উৎসাহ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে হাজির ছিলেন ভোটাররা। বিশেষত সকাল থেকেই বুথে বুথে লম্বা লাইন ছিল মহিলাদের। সোমবার রাজনগরের কিছু বুথে রাত আটটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলেছে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার জেরে জেলার মাত্র ছ’টি আসনে পুনর্নির্বাচন হবে ঠিকই, তবে প্রশাসনের দাবি ৮৩ শতাংশ ভোট পড়া ভোটারদের ইচ্ছেতেই সম্ভব হয়েছে।
জেলা পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকে ভোট পড়েছে ৮৫.৬২ শতাংশ, ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকে ৮০.৫৪ শতাংশ, মহম্মদবাজারে ৮১.৫৩ এবং রাজনগরে ৮৪.৪৮ শতাংশ। হাতে গোনা দু’চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ভোট ছিল, এমন এলাকাতেও ভোটের হার ছিল চোখে পড়ার মতো। রামপুরহাট ১ ব্লকে মাত্র দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের জন্য ভোট পড়েছে সবচেয়ে বেশি গড়ে ৮৯.৬১ শতাংশ। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটের হার ছিল ৯৭%। ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ভোট হয়েছে নলহাটি ১ ব্লকে। ভোট পড়েছে ৮৬.১৮। ব্যতিক্রম শুধু নলহাটি ২ ব্লক। সেখানে মাত্র চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে নির্বাচন ছিল। ভোট পড়েছে ৬৭.৫৯ শতাংশ। প্রশাসন বলছে, এত সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছেন বলেই গড় ভোট পড়েছে ৮৩ শতাংশ। তবে অতীতে অন্য নির্বাচনেও বীরভূমে ভোটদানের পরিমাণ যথেষ্টই ভাল। গত বিধানসভায় হার ছিল ৮০ শতাংশ।
বিরোধীরা অবশ্য মনে করছে, সাধারণ মানুষের ভোটদানে উৎসাহ ছিল ঠিকই। তবে ভোট দানের পরিমাণ বৃদ্ধির পিছনে শাসকদলের রিগিং ও ছাপ্পা ভোট অনেকাংশে দায়ী। সিমিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা এবং বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের দাবি, ‘‘সোমবার বিভিন্ন বুথে ছাপ্পা, রিগিং হয়েছে। ৫০টির বেশি বুথ নিয়ে অভিযোগ করেছি।’’ প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের দাবি, যে কোনও অভিযোগের তদন্ত হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, গণতন্ত্র বিপন্ন বলে বিরোধীরা যতই হই-চই করুক আর দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করুক, সাধারণ মানুষ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোবে ভোটদান করতে পেরেছেন বলেই ভোটের এমন হার। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘ফল বেরোলেই বোঝা যাবে ভোট হওয়া আসনেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বিরোধীদের। তাই আগেভাগেই অজুহাত খাড়া করে রাখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy