Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গোঁজ-কাঁটা তোলার নির্দেশ মন্ত্রীর

গত সোমবার মনোনয়ন জমা নেওয়া শেষ হওয়ার পরে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, এমনকী জেলা পরিষদেও তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করা নেতা-কর্মীদের সংখ্যা দেখে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ জেলার অনেক নেতারই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

দু’-একটি ব্লকে নয়, পুরুলিয়ার সব ক’টি ব্লকেই আসনের থেকে বেশি প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফলে লড়াইয়ের ময়দান থেকে তাঁরা সরে না গেলে, আখেরে ভোট কাটাকাটির সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে। তাই ভোটের পথ থেকে দলেরই অবাচ্ছিত প্রার্থীদের সরাতে এ বার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে শাসকদল।

গত সোমবার মনোনয়ন জমা নেওয়া শেষ হওয়ার পরে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, এমনকী জেলা পরিষদেও তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করা নেতা-কর্মীদের সংখ্যা দেখে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ জেলার অনেক নেতারই। দলের অনুমতি না থাকা প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে ব্লক সভাপতিদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৪৪টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী সংখ্যা ২৪২৭। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৪৬ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৬৯২ জন তৃণমূল কর্মী। আর জেলা পরিষদের মোট ৩৮টি আসনে প্রার্থীর সংখ্যা ৭৮। তৃণমূলের জেলা কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘নির্বাচন ঘোষণার আগে বিভিন্ন ব্লকে নির্বাচনী কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যাতে সমস্ত আসন থেকে আলোচনার ভিত্তিতে একটিই নাম উঠে আসে। বলা হয়েছিল, কোথাও একাধিক প্রার্থী দাবিদার থাকলেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার নির্বাচনী কমিটি এবং পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ব্লক কমিটি আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থীর নাম ঠিক করবে। জেলা পরিষদের ক্ষেত্রেই শুধু জেলা কমিটির কাছে নাম আসবে। সেই নামের তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হবে। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে, তিনটি স্তরেই বহু মনোনয়ন দলের তরফে জমা পড়েছে।’’

দল সূত্রেই খবর, জেলা পরিষদেই প্রার্থী হতে আবেদন জমা পড়েছিল প্রায় দুশোর কাছাকাছি। তবে মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনের মধ্যে খোদ জেলা সভাপতি একে একে প্রার্থীদেরই ফোন করে জানিয়ে দেন দল তাঁকে টিকিট দিচ্ছে। এরপরে যাঁরা ফোন পাননি, তাঁরাও মনোনয়ন জমা করে দেন দলের হয়ে। এতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি আরও বেআব্রু হয়ে পড়ে। এক ব্লক স্তরের নেতার অভিযোগ, ‘‘ব্লক নেতৃত্বকে প্রার্থীদের নামের তালিকা নিয়ে আলোচনা করতে বলেছিল। কিন্তু কোনও কোনও ব্লক নেতৃত্ব আলোচনার ধারেকাছেই যাননি। নিজের পছন্দের প্রার্থীদেরই তিনি টিকিট দেবেন বলে ঠিক করেন। তাই বিক্ষুব্ধেরাও মনোনয়ন জমা করেছেন।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘দলের হয়ে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, অথচ টিকিট পাননি, তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে। নাম প্রত্যাহারের শেষ তারিখের আগেই তাঁরা যাতে নাম প্রত্যাহার করে নেন, সে জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তারপরেও যদি কেউ লড়াইয়ে থেকে যান? সভাপতির বক্তব্য, ‘‘সে ক্ষেত্রে দল ব্যবস্থা নেবে।’’

এই পরিস্থিতিতে আগামী বুধবার দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবাজারে কর্মী বৈঠক করতে আসার কথা বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সভা থেকে তিনি কি বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে জেলার তৃণমূল নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE