আবেদন: মহম্মদবাজারের হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রচার-মিছিল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
রাত পেরোলে সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচন। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের দাবি, সুষ্ঠু ভাবে ভোট করাতে সব ব্যবস্থাই পাকা। তার পরেও ভোটের দিনের নিরাপত্তা নিয়ে বিরোধীদের সংশয়টা থেকেই যাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপক্ষে প্রার্থী না থাকায় জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের একটিতেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে কেবল জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২২৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৭৯টি আসনে। ১৯টি পঞ্চায়েত সমিতির ৪৬৫টি আসনের মধ্যে কেবল ৬০টিতে। জেলার ৩৬৬টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। জেলায় ভোট হচ্ছে মূলত রাজনগর, মহম্মদবাজার, ময়ূরেশ্বর ১ ও ২ ব্লকে। হাতেগোনা কিছু আসনে ভোট হচ্ছে নলহাটি ১ ও ২ এবং রামপুরহাট ১ ব্লকে।
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন হবে নির্বাচন।’’ জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্তম সুধীর কুমারও জানিয়েছেন, ভোটের দিন যে কোনও ধরনের হিংসা রুখতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুথে তো বটেই, বুথের বাইরে, রাস্তায় থাকবে প্রচুর পুলিশ। থাকছে টহলদারি ভ্যান। নাকা চেকিং। ভিন্ রাজ্য থেকে বাহিনীও আসছে।
প্রশাসন জানাচ্ছে, জেলায় প্রতি বুথে চার জন করে ও অতিরিক্ত ভোট-কর্মী নিয়ে মোট ১৭৫০ জন থাকছেন। ভোট-কর্মীদের সঙ্গে থাকবেন এক জন সশস্ত্র ও এক জন লাঠিধারী পুলিশ। পাশাপাশি বুথ হলে দু’জন সশস্ত্র পুলিশ ও দু’জন লাঠিধারী নিরাপত্তাকর্মী থাকবেন। মোট ৩৬৬টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে স্পর্শকাতর ৬৬টি বুথে সিসি-ক্যামেরা বা ভিডিও ক্যামেরায় নজরদারি থাকবে। প্রতিটি বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। পুলিশ কন্ট্রোল রুম ছাড়াও যে কোনও ধরনের অভিযোগ সামলাতে জেলায় এবং ভোট হচ্ছে এমন ব্লকগুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।
তবু বিরোধীরা সন্তুষ্ট হচ্ছে না কেন?
বাম-বিজেপি, কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, ‘‘মনোনয়ন পর্বে শাসকদলের লাঠি, বোমা, বন্দুকধারী উন্নয়ন ডিঙিয়ে, বহু রক্ত ঝরিয়ে সামান্য কিছু আসনেই প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে। সেই আসনগুলিতে ভোটারদের বুথে পৌঁছনো জরুরি। কিন্তু, শাসকদলের নেতা আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছেন ভোট দিতে গেলেই রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন মানুষ।’’ জেলার তৃণমূল নেতারা সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, লোকবল নেই বুঝেই মনগড়া অভিযোগ করছে বিরোধীরা। পক্ষপাতের অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশও।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলছেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন কতটা সক্রিয় তার নমুনা মনোনয়ন পর্বে দেখেছি। এখনও দেখছি শাসকদলের হয়ে কী ভাবে পুলিশ বিপক্ষ প্রার্থীকে হুমকি দিচ্ছে। শুক্রবারও ময়ূরেশ্বরে হয়েছে এমন ঘটনা। তাই যে ক’টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছি, সেখানে লড়তে নিজেদের শক্তির উপরেই ভরসা রাখছি।’’ প্রায় একই দাবি বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘শুক্রবারই মহম্মদবাজারে আমাদের এক কর্মীকে অকারণ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মহম্মদবাজারে তো বটেই, রাজনগর সহ যেখানেই ভোট হচ্ছে পুলিশ, শাসকদলের কথায় বিপক্ষ প্রার্থীকে ভয় দেখাচ্ছে। ভোটের দিনেও একই ভূমিকা থাকলে লড়াই করা খুব শক্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy