আস্তাকুঁড়: শহরে ঢোকার মুখে। নিজস্ব চিত্র
চার পাশে কত কী বদলে যাচ্ছে, কিন্তু রঘুনাথপুর শহরের প্রবেশপথের কাছে আবর্জনার স্তূপ সরছিল না। এ বার সেই গন্ধমাদন পাকাপাকি ভাবে সরাতে নামছে পুরসভা। রঘুনাথপুর শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তিন একর ১৩ ডেসিমিল খাস জমি মিলেছে। সেখানেই আবর্জনা সাফাইয়ের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প তৈরি করতে চলেছে পুরসভা।
জমির সমস্যায় এত দিন এই প্রকল্প চালু করতে সমস্যায় পড়েছিল পুরসভা। সেই জট কেটেছে। শাঁকা পঞ্চায়েতের রাঙামাটি এলাকার ওই সরকারি জমি রঘুনাথপুর ১ ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর পুরসভাকে হস্তান্তর করেছে। রঘুনাথপুরের পু্রপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই জমিতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু করতে চলেছি আমরা। প্রথম পর্যায়ে জমিতে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হওয়ার মুখে। পরের ধাপে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের মেশিনপত্র বসানো হবে।’’
বস্তুত এই শহরে জনবসতি বেড়ে চললেও এতদিন আবর্জনা ফেলার জায়গা সে ভাবে ছিল না। শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের পর দিন আবর্জনা জমে থাকে। কখনও সখনও শহরের রাস্তা থেকে তুলে আনা হলে তা ডাঁই করা হয় রঘুনাথপুর-আদ্রা রাস্তা বা রঘুনাথপুর-বাঁকুড়া রাস্তার পাশে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের প্রবেশপথে এমন নোংরা পরিবেশ দেখে অনেকের গা ঘিন ঘিন করে ওঠে।
ছবিটা কেন বদলানো যায়নি?
মূলত জমির সমস্যাতেই আবর্জনা শহরের বাইরে অন্যত্র কোথাও ফেলার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি বিগত পুরবোর্ডগুলি। এ বার প্রশাসনিক সাহায্যেই জমির সমস্যা মিটল। বর্তমান পুরবোর্ড জমি চেয়ে রঘুনাথপুরের মহকুমা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল। শহরের আশপাশের পঞ্চায়েত এলাকায় জমির খোঁজ শুরু করে প্রশাসন। শেষে রাঙামাটি এলাকায় জমির হদিস পাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছে পুরসভা। মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উপযুক্ত জমি পাওয়ার পরেই পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।’’ পুরপ্রধান জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের সহায়তায় এই প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। চারপাশ পাঁচিল দিয়ে ঘেরার জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা। অর্ধেক টাকা চলে এসেছে। পাঁচিল তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ওয়ার্ক ওর্ডার দিয়ে দ্রুত তাঁরা কাজ শুরু করতে চান।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেটের পুরুলিয়া দফতর তৈরি করেছে। তা স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (সুডা) কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’’ এমইডি-র পুরুলিয়া ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুবীর নাগ বলেন, ‘‘মেশিনপত্র বসিয়ে বিভিন্ন কাজের জিনিস তৈরি করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।’’
কী হবে এই প্রকল্পে?
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের আবর্জনা তুলে এনে ওই জমিতে ফেলা হবে। তারপরে আবর্জনা থেকে মেশিনে বায়োগ্যাস, সার-সহ বিভিন্ন কাজের জিনিস তৈরি করা হবে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার বিজয় মনি জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর রঘুনাথপুর পুরসভাকে আবর্জনা পিষে ছোট্ট করার বিশেষ গাড়ি দিয়েছে। ওই গাড়ি হাতে থাকায় প্রকল্পে আরও সুবিধা মিলবে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস, সার তৈরির পরে সেগুলি বাজারজাত করে তা থেকে টাকা পাওয়া যাবে। সেই টাকাতেই ওই প্রকল্প রক্ষনাবেক্ষণ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy