মার: নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
মিড-ডে মিল রান্নার বরাত কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে, তা নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে প্রহৃত হলেন প্রধান শিক্ষক। সোমবার বিকেলের ঘটনা। সন্ধ্যার পরে স্কুল থেকে প্রধান সঞ্জয় দাসকে শিক্ষককে উদ্ধার করে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ। নলহাটি থানার সুলতানপুর নিবেদিতা শিক্ষায়তনের ঘটনা। সঞ্জয়বাবুর স্ত্রী সুব্রতা দাস সুলতানপুর গ্রামের কয়েক জনের বিরুদ্ধে নলহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের তালিকায় বানিওড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন সুলতানপুর গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের দুর্যোধন মাল সহ আরও কয়েক জনের নাম রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় দাস জানান, মিড-ডে মিলের রান্না নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিবাদে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামবাসীর একাংশ যথেচ্ছ মারধর করে। তাঁর কথায়, ‘‘কিল-ঘুষির পরে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। স্কুলে ফিরে এসে পুলিশকে ফোন করি।’’ প্রথমে নলহাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরে সেখান থেকে রামপুরহাট হাসপাতালে রেফার করা হয়। মাথায় আঘাতের জন্য সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তবে রিপোর্ট এখনও আসেনি।
কী নিয়ে গোলমাল?
স্কুল সূত্রের খবর, মিড-ডে মিল চালু হওয়ার সময় থেকে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাই রান্না করে আসছিল। গত বছরের মে মাস থেকে পুরনো দল তো বটেই, নলহাটি ১ ব্লকের তৎকালীন বিডিওর নির্দেশে নতুন করে ছ’টি দল রান্না করতে থাকে। কেন এমনটা করা হল, সেই প্রশ্ন তুলে পুরনো দল উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। উচ্চ আদালত বিডিও-র নির্দেশ বাতিল করে জেলা প্রশাসন পুরানো দলকেই রান্না চালিয়ে যেতে বলে। গোলমালের শুরু এরপরই।
প্রধান শিক্ষক জানান, সোমবারও পুরনো দল রান্না করছিল। সেই সময় নতুন ছ’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২০–২৫ জন মহিলা এসে রান্না বন্ধ দেয়।
বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে স্কুলে বিডিও, পুলিশ আসে। সকলে মিলে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ বুঝিয়ে বলার পরে তখনকার মতো নতুন গোষ্ঠীর সদস্যেরা স্কুল থেকে চলে যায়। তখন বাড়ির পথ ধরেছিলেন প্রধান শিক্ষকও। সঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘ফেরার সময়েই নতুন ছ’টি দলের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ঘিরে ধরে মারধর করে। গ্রামবাসীর একাংশও ফের আর এক প্রস্থ মারধর করে।’’
সুলতানপুর গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের দুর্যোধন মাল অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা কেউ প্রধান শিক্ষককে মারধর করেননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘শুনেছি তিন মহিলাকে প্রধান শিক্ষক বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে আটকে রেখেছিল। সেই ক্ষোভে গ্রামবাসীর একাংশ খেপে গিয়ে মারধর করে।’’ বিডিও (নলহাটি ১) জগদীশচন্দ্র বারুই বলছেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ এবং আইন মোতাবেক যা হবে সেটাই সব স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মেনে নিতে হবে। তার জন্য মিড-ডে মিল রান্না বন্ধ করার পাশাপাশি প্রধান শিক্ষককে মারধরের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো উচিত ছিল না।’’ বিবাদমান স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy