শীতের রোদে কাঁসাইয়ের চরে। (ডানদিকে) বাঁকুড়ার এক্তেশ্বরে মেলা। সুজিত মাহাতো ও অভিজিৎ সিংহ।
বাঘের বিক্রম সম মাঘের হিমানী। পৌষের শেষ দিনেই ব্যাপারটা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন দুই জেলার বাসিন্দারা। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বাঁকুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরুলিয়ার শীত আরও জমাটি— এ দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে দাঁড়িয়েছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দুই জেলাতেই শনিবার ছিল মরসুমের শীতলতম দিন।
একে কনকনে ঠাণ্ডা, তার দোসর আবার দাপুটে উত্তুরে হাওয়া। মকড় স্নানে যাওয়ার আগে বাঁকুড়ায় অনেকেই সঙ্গে নিয়েছেন খড়ের আঁটি। টুপ করে ডুব দিয়ে উঠেই যাতে আগুন জ্বেলে দাঁতকপাটি সামালানো যায়। ঝুপ করে তাপমাত্রা এতটা নেমে যাওয়ায় ভোরে নদীতে নামার দুঃসাহস দেখাতে গিয়েও শেষ মুহুর্তে পিছিয়ে এসেছেন অনেকে। ভিড় বেড়েছে সূয্য আকাশে এক প্রকার জাঁকিয়ে বসার পরে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া পুরুলিয়ার তুলিনে সুবর্ণরেখা নদী তীরে জেলার মধ্যে মকর স্নানের ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়। এ দিন ভোরে ওই নদীঘাটেও বিশেষ ভিড় চোখে পড়েনি। সেখানে বেলায় স্নান করতে আসা ঝালদার সঞ্জীব সিংহ দেও জানান, প্রতি বছর ভোরে চলে আসেন। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার ভোরের ঠাণ্ডায় আর পেরে ওঠা হল না।’’ জয়পুরের বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতোও ঠাণ্ডার চোটে নদী মুখো হননি, স্নান সেরেছেন বাড়িতেই। হুড়ার ফুটিয়ারি, কাশীপুরের কালীদহ, বলরামপুরের কুমারী, বাঘমুণ্ডির লহরিয়া, কোটশিলার মুরগুমা, কংসাবতী, কুমারী, শীলাবতী, নেংসাইয়ের তীরে বেলা করেই নেমেছে পূণ্য স্নানের ঢল। কংসাবতীর তীরে দেউলঘাটার মন্দির ক্ষেত্রে আশ্রমিক তনুশ্রী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেলা বাড়তেই মেয়েরা চৌডল নিয়ে গান গেয়ে এসেছে।’’ বেলায় বাঁকুড়ার দ্বারকেশ্বরেও স্নানের ভিড় ছিল।
তবে শীতের আমেজ গায়ে লাগিয়ে জমে উঠেছে সংক্রান্তির মেলা। আকাশ ছিল পরিষ্কার। বেলায় মিঠে রোদে জ্বালা আগুন উসকে ওঠে কনকনে হাওয়ায়। বাঁকুড়ার এক্তেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে দারকেশ্বরের চরে খাবার দাবার নিয়ে আগুন ঘিরে আড্ডা চলেছে। বিষ্ণুপুরের ডিহর গ্রামের ষাঁড়েশ্বর শিব মন্দিরে বসেছে মেলা। সিমলাপালের ব্রিজগড়ায় শিলাবতীর চরে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনের প্রাচীন গঙ্গা মেলা। পুঞ্চা এবং হুড়া থানার সীমানায় শীলাবতীর উৎসে চার দিনের মেলা শুরু হয়েছে। কুমারী নদীর দুয়ারশিনি সেতুর কাছে এবং বান্দোয়ানের সাতগুড়ুম নদীর পাড়েও চলছে মেলা। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধারের পশ্চিমে বনপুকুরিয়ার মেলাটি এক দিনের। জয়পুর থানার দেউলঘাটার মেলায় ভাল ভিড় ছিল। জেলার সবচেয়ে বড় মকরের মেলাটি বসে ঝালদা-ঝাড়খণ্ড সীমানায়, সুবর্ণরেখার পাড়ে।
শনিবার রাস্তায় যানবাহন কম ছিল। দোকানপাটও ছিল ফাঁকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy