প্রতীকী ছবি।
ঘটনাটা মনে পড়লে এখনও শিউরে উঠছি। সোমবার রাত তখন পৌনে ১০টা। কাজে রয়েছি। সেই সময় তিন জন আহতকে কয়েকজন গ্রামবাসী ধরাধরি করে নিয়ে এলেন। আহতদের মধ্যে মনোজ মাহাতো নামে এক যুবকের মাথা থেকে রক্ত ঝরে চলছিল। নার্সদের ডেকে তাড়াতাড়ি তিন জনের চিকিৎসা শুরু করি। অন্য দু’জনের আঘাত তেমন গুরুতর না হলেও মনোজের চোট বেশি ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে মনোজকে বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রতুল মাহাতোও ছিলেন। তিনি আবার রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য। সাথে আসা গ্রামবাসীদের একাংশ সেই সময় মনোজকে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে হবে বলে চিৎকার জুড়ে দেন। হঠাৎ প্রতুলবাবুও দেখি গ্রামবাসীদের পক্ষ নিয়ে আমার কাছে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে শুরু করেন।
আমি তো অবাক! এখানে যে দু’টি মাতৃযান ছাড়া সাধারণ রোগীদের জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই, তা তো প্রতুলবাবু জানেন। কিন্তু তিনি তখন মারমুখী হয়ে আমার কলার ধরে কিল, চড়, ঘুষি মারতে শুরু করেছেন। ‘কেন অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যাবে না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। তিনি মেঝেতে আমাকে ফেলে দেন। সঙ্গীরাও লাথি মারতে থাকে। পড়ে গিয়ে আমার মাথা ফেটে যায়। হাতেও চোট লাগে। স্বাস্থ্যকর্মীরাই আমাকে বাঁচান।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরাপত্তা রক্ষী নেই। মধ্যমগ্রামের বাড়ি ছেড়ে এখানে বছর আড়াই রয়েছি। কিন্তু, এমন কাণ্ড কোনও দিন ঘটেনি। আত্মীয়েরাও উদ্বেগে রয়েছেন। আমিও মন থেকে কিছুতেই ভয়টা কাটাতে পারছি না। তদন্তে সুবিচার না পেলে কী করব জানি না। শুভাকাঙ্ক্ষীরা এখান থেকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়।
(বরাবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিগৃহীত চিকিৎসক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy