Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নির্মল বাংলা প্রকল্পে দৌড় বান্দোয়ানের

বিডিও বলেন, ‘‘স্থানীয় সংস্থাগুলি দিয়ে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়। শৌচালয় নির্মাণের কাজে গতি বাইরের আরও দক্ষ দু’টি সংস্থার সাহায্য নেওয়া হবে।’’

পায়ে-পায়ে: বান্দোয়ানের পথে। নিজস্ব চিত্র

পায়ে-পায়ে: বান্দোয়ানের পথে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

সময় দু‌’মাস। লক্ষ্য প্রায় ১৪ হাজার শৌচালয় তৈরি। পুরুলিয়ার ২০টি জেলার মধ্যে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে ১৯তম স্থানে থাকা বান্দোয়ান ব্লক ওই লক্ষ্য নিয়েই বৃহস্পতিবার অঙ্গীকার দিবস পালন করে কাজে গতি আনতে পথে নামল। মানুষের মনে নাড়া দিতে মিছিলে পড়ুয়া স্লোগান দিল— ‘আপনি শৌচাগার ব্যবহার করলে, আমরা সবাই সুস্থ থাকব’।

এই প্রকল্পে এমনিতেই সারা রাজ্যের তুলনায় পুরুলিয়ার স্থান বেশ পিছনেই। সেই পিছিয়ে থাকা জেলার একেবারে পিছনের সারিতে রয়েছে বান্দোয়ান। ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের মতে, এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ অসম্ভব না হলেও বেশ কঠিন। জনগণের মধ্যে শৌচালয় তৈরির সুবিধার কথা পৌঁছে দিতে এ দিন কয়েক হাজার পড়ুয়ার সঙ্গে ব্লক প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা মিছিলে সামিল হলেন। শৌচালয় তৈরির কাজও শুরু হল। বিডিও মহাদ্যুতি অধিকারী জানান, ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় এ দিনই ৫০০টি শৌচালয় নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

মাস দেড়েক আগে জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বান্দোয়ানে উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক করেন। সেখানে একশো দিনের কাজের পাশাপাশি মিশন নির্মল বাংলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বস্তুত সে দিন পঞ্চায়েত কর্মীদের দাঁড় করিয়ে একে একে কাজের খতিয়ান জানতে চেয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ জেলাশাসক পঞ্চায়েতগুলিকে কাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বাকি থাকা কাজ

বান্দোয়ানের পঞ্চায়েত ভিত্তিক তথ্য

বান্দোয়ান ১,৩৭৮

চিরুডি ২১,০০০

ধাদকা ২,১০০

বিডিও (বান্দোয়ান) স্বীকার করেন, ‘‘মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে আমাদের প্রায় শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে। বান্দোয়ান ব্লক এলাকায় ৮টি পঞ্চায়েতে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে মোট লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ২২ ভাগ নির্মাণ করা গেছে। ১৩ হাজার ৭৭৭টি শৌচাগার তৈরি বাকি ছিল। আমি এই ব্লকে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই সংখ্যা কমে ১২ হাজার ৮০০ দাঁড়িয়েছে। কয়েক বছর আগে এই প্রকল্প চালু হলেও এই প্রকল্পে গতি ছিল না।’’

ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি তাদের যাবতীয় সহযোগিতা দেবে। এই প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ রয়েছে। উপভোক্তাকে ৯০০ টাকা দিতে হবে। এমন অনেক উপভোক্তা রয়েছেন যাঁদের এককালীন ৯০০ টাকা দেওয়ারও সামর্থ্য নেই। ওই টাকা দেওয়ার জন্য উপভোক্তাদের চাপ দেওয়া হবে না। তাঁরা সামর্থ্য মতো পরে টাকা দিলেও হবে।

এ দিন ব্লক অফিসের বৈঠকে মিশন নির্মল বাংলার এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে কাজে কী ধরনের গতি আনতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিধায়ক রাজীব সোরেন বলেন, ‘‘বান্দোয়ানের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের বোঝাতে প্রচারে আমরা ভরসা রেখেছি। বৃহস্পতিবার এলাকার কয়েকটি স্কুলের প্রায় হাজার খানেক পড়ুয়াদের মিছিলে রেখে শৌচালয়ের প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয়েছে। কারণ তারা এখান থেকে বাড়িতে ফিরে অভিভাবকদের শৌচালয়ের গুরুত্ব বোঝাবে। অন্যান্য পঞ্চায়েত এলাকাতেও আমরা প্রচার চালাচ্ছি।’’ বিডিও বলেন, ‘‘স্থানীয় সংস্থাগুলি দিয়ে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়। শৌচালয় নির্মাণের কাজে গতি বাইরের আরও দক্ষ দু’টি সংস্থার সাহায্য নেওয়া হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের আটটি পঞ্চায়েতের মধ্যে বান্দোয়ান পঞ্চায়েত এলাকায় নির্মল বাংলা প্রকল্পের কাজ নিয়মিত চালু রয়েছে। এই প্রকল্পে কুমড়া পঞ্চায়েত সব থেকে পিছনে রয়েছে। ব্লক প্রশাসন জানাচ্ছে, ৩১ ডিসেম্বরের আগে প্রতিটি দিনই তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে দিনের শেষে প্রতিটি পঞ্চায়েতে শৌচালয় নির্মাণের কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Nirmal Bangla
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE