আহত: সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নয়ন বাউড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
হাতির হানায় এ বার আহত হলেন এক শ্রমিক। বুধবার সকালে সোনামুখী রেঞ্জের ইন্দকাটা বিটের জঙ্গলের ঘটনা। আহত নয়ন বাউরির বাড়ি জুনসরা গ্রামে। তাঁকে সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাইকা প্রকল্পে জঙ্গলে এখন গাছ লাগানোর কাজ চলছে। সেখানে পড়শি রমেশ বাউড়ি, বাপন বাউড়ি, নিলু বাউড়িদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েছিলেন নয়ন। অন্য গ্রামবাসীদের থেকে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছিলেন ওই চার জন। সেই সময়েই একটি হাতি নয়নের উপরে হামলা চালায়।
সোনামুখী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রমেশ বাউড়ি বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই একটা হাতি এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। আমরা দিনমজুর। চাষের কাজ না থাকায় বন দফতরের গাছ লাগানোর কাজে জঙ্গলে গিয়েছিলাম। এক জায়গায় কাজ সেরে জঙ্গলের অন্য জায়গাতে যাওয়ার সময় নয়ন একটু এগিয়ে গিয়েছিল। ঝোপাঝাপের আড়াল থেকে হঠাৎ হাতিটা বেড়িয়ে আসে। নয়ন হাতিটার সামনে পড়ে যায়। আমরা পিছনে ছিলাম। দৌড় লাগাই। কিন্তু নয়নকে হাতিটা শুঁড়ে করে ধরে ফেলে দেয়।’’
তাঁদের চিৎকারে অন্য গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন। সবাই মিলে হইচই জুড়লে হাতিটা নয়নকে ছেড়ে জঙ্গলে ঢুকে যায়। তখন সবাই মিলে নয়নকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। জুনসরা গ্রামের বাসিন্দা শেখ জিয়ারুল, শেখ সালেম, নিলু বাউরিরা বলেন, ‘‘জঙ্গল-নির্ভর আমাদের জীবন জীবিকা। সামান্য জমি তাও জঙ্গলের ধারে। অথচ জঙ্গলে যে হাতি ঢুকেছে, তা নিয়ে বন দফতরের কোনও সতর্কতার প্রচার ছিল না। হাতি কাছে রয়েছে জেনেও এতগুলো মানুষকে কেন জঙ্গলেই কাজে নিয়ে গেল বন দফতর, তা নিয়ে গ্রামবাসী প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) ভাস্কর জে ডি বলেন, ‘‘ওই জায়গায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কোনও হাতি ছিল না বলেই জঙ্গলের কাজে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ দিন ভোরে হাতি ঢোকে।’’ যদিও গ্রামবাসীদের দাবি, ‘‘তিন দিন ধরে হাতি ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। তা অবশ্য মানতে নারাজ বন-কর্তারা। তাঁদের দাবি, এলাকায় হাতি ঢুকলেই, মোবাইলে সতর্কতার বার্তা পাঠানো হয়। অযথা আতঙ্ক যাতে না ছড়ায়, তাই মাইকে প্রচার করা হয়নি। ডিএফও জানান, হাতির হানায় আহতের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব বন দফতর নিয়েছে।
সোনামুখী ব্লক প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার প্রিয়কুমার সাহানা বলেন, ‘‘আহত নয়ন বাউড়ির অবস্থা স্থিতিশীল। পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy