Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রেল দিয়েছে সায়, তবুও হচ্ছে না কাজ

রেল ও প্রশাসনের টানাপড়েনে এক দশক থমকে ছিল বেহাল রাস্তার সংস্কার। অবশেষে সেই সমস্যা মিটেছে। তাদের জমিতে থাকা মধুকুণ্ডা স্টেশন লাগোয়া রাস্তায় কাজ করতে প্রশাসনকে অনুমতি দিল আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, কাজ শেষ করতে হবে ছ’মাসের মধ্যে।

বেহাল রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

বেহাল রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁতুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৭
Share: Save:

রেল ও প্রশাসনের টানাপড়েনে এক দশক থমকে ছিল বেহাল রাস্তার সংস্কার। অবশেষে সেই সমস্যা মিটেছে। তাদের জমিতে থাকা মধুকুণ্ডা স্টেশন লাগোয়া রাস্তায় কাজ করতে প্রশাসনকে অনুমতি দিল আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, কাজ শেষ করতে হবে ছ’মাসের মধ্যে। কিন্তু পনেরো দিন পার করেও এক পা-ও এগোতে পারেনি প্রশাসন। পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রশাসনের দাবি, ওই রাস্তার সংস্কার প্রচুর টাকার কাজ। অর্থ বরাদ্দ হলেই সেটা শুরু হবে।

সাঁতুড়ি ব্লকের মধুকুণ্ডা স্টেশন লাগোয়া প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা পুরোপুরি বেহাল হয়ে রয়েছে। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সংযোগকারী ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সারাই করার জন্য গত বছর দশেক ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকার বাসিন্দারা। অনেক বার রাস্তা অবরোধ হয়েছে। কয়েক মাস আগেই ওই দাবি নিয়ে মুধুকুণ্ডা স্টেশন ম্যানেজারকে ঘেরাও করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তার পরেই নড়েচড়ে বসে রেল।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ৩১ অক্টোবর আদ্রা ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ মহকুমাশাসককে (রঘুনাথপুর) ওই রাস্তায় কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি (নো অবজেকশন) দিয়েছেন। তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে, কাজ শেষ করতে হবে ছ’মাসের মধ্যে। তার মধ্যেই বিনা কাজে পেরিয়ে গিয়েছে আধ-মাস।

সাঁতুড়ি ব্লকের ওই রাস্তা দিয়ে রোজ কয়েক হাজার মানুষ মধুকুণ্ডা স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসেন। ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হয় বাজারে। আশেপাশের দশ-বারোটি গ্রামের পড়ুয়ারা খানাখন্দে ভরা রাস্তা স্কুলে যায়। রাস্তার ধারেই রয়েছে একটি সিমেন্ট আর একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা। এত কিছু সত্বেও রাস্তা সারাইয়ের ব্যাপারে রেল আর প্রশাসন গড়িমসি করেছে বলে অভিযোগ।

রেল আর প্রশাসনের দড়ি টানাটানিতেই গত এক দশকে ওই কাজ হয়নি। তিন কিলোমিটার মতো ওই রাস্তার প্রায় ১ কিলোমিটার পড়ে রেলের জমিতে। রেলের বক্তব্য, যাত্রীদের কথা ভেবে তারাই ওই রাস্তা তৈরি করেছে। এ দিকে সিমেন্ট আর স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় পন্যবাহী ভারী গাড়ি যাতায়াত করে রাস্তা খারাপ করছে। আর প্রশাসন জানিয়েছিল, এক বারেই পুরো রাস্তা সংস্কার করা হবে। রেল তাতে অনুমতি না দিলে কিছুই করা যাবে না। অভিযোগ ছিল, রেলের কাছে একাধিক বার আবেদন করেও সেই অনুমতি মিলছে না।

রাস্তা সংস্কারের দাবিতে প্রায় এক দশক ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এলাকার তৃণমূল নেতা কালীদাস সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনের চাপে রেল অনুমতি দিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা সবাই চাইছেন কাজটা এ বার শুরু হোক।’’

বুধবার নিজের দফতরে বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে বৈঠক করেছেন মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) দেবময় চট্টোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর ওই কাজ করবে। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই রাস্তা এ বার এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে ভারী গাড়ি গেলেও টিকে থাকে।’’ আর সে ক্ষেত্রে শুরুতেই হোঁচট খেতে হচ্ছে তহবিলে। জানা গিয়েছে, ৩ কিলোমিটার রাস্তা আমূল সংস্কার করতে ৪ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা খরচ ধরেছে দফতর। এত টাকা একসঙ্গে জোগাড় করা যাচ্ছে না। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত বা ব্লকের পক্ষে এত টাকা খরচ করে রাস্তা তৈরি সম্ভব নয়। আমরা বিশদ রিপোর্ট-সহ খরচের পরিমাণ জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়েছি।” পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ওই টাকা পাওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে।

তবে কবে কাজ শুরু হতে পারে, সেটা জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railway Road Construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE