বহিষ্কৃত: দিলীপ মজুমদার।
ভোটের কয়েক মাস আগে এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। তাঁকে নির্বাসিত করা হল দলের সব পদ থেকেই। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, ব্লক ও কেন্দুয়া পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির সংগঠন তৈরিতে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
বহিষ্কৃত দলীয় নেতা হাটজনবাজার কলোনির বাসিন্দা দিলীপ মজুমদার। তিনি সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের সদস্য। ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, দলের সঙ্গে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের জন্য নেতৃত্বের নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিলীপবাবুর দাবি, তিনি কোনও অনৈতিক কাজ করেননি। একইসঙ্গে জানান, বহিষ্কার করা হলেও দলের প্রতি তাঁর ক্ষোভ নেই। প্রয়োজনে তৃণমূলের সমর্থক হিসেবেই থাকবেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে আকারে বাড়ছে সিউড়ি পুরসভা। সিউড়ি ও সাঁইথিয়া বিধানসভা এলাকার চারটি পঞ্চায়েতের কিছুটা করে অংশ জুড়তে চলেছে সিউড়ি শহরের সঙ্গে। ওই তালিকায় রয়েছে সিউড়ি বিধানসভা এলাকার তিলপাড়া, কড়িধ্যা এবং মল্লিকপুর পঞ্চায়েত, সাঁইথিয়া বিধানসভা এলাকার কেন্দুয়া পঞ্চায়েত। সিউড়ি পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাস করছেন এমন প্রায় ২৪ হাজার নাগরিক অদূর ভবিষ্যতে পুরসভা এলাকার বাসিন্দা হতে চলেছেন। তাঁরা উন্নততর পরিষেবা পাবেন। এতে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কোনও আপত্তি নেই, সেই মর্মে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ জমা পড়েছে গত বছরের শেষের দিকে। ওই শংসাপত্র দিয়েছে কেন্দুয়া পঞ্চায়েতও। কিন্তু তার পর একটি ঘটনা ঘটে কেন্দুয়ায়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, কেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি সংসদের মধ্যে সিউড়ি-ঘেঁষা হাটজনবাজার কলোনির দু’টি সংসদ, কেন্দুয়া ও একেন্দুয়া, সোনাতোড় মিলিয়ে চারটি সংসদ সিউড়ি পুরসভার এলাকাভুক্ত হচ্ছে। তৃণমূলের অভিযোগ, শংসাপত্র দাখিল হওয়ার পরে সেখানকার শ’তিনেক বাসিন্দা বিজেপির লেটারহেডে মহকুমাশাসকের কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠান। তাতে জানানো হয়, তাঁরা পুরসভা এলাকায় নয়, থাকতে চান পঞ্চায়েতেই। দলের অভিযোগ, তার পিছনে হাত ছিল দিলীপবাবুই। যাঁদের স্বাক্ষর ওই আবেদনপত্রে ছিল সেগুলিও ছিল ভুয়ো। মহকুমাশাসকের শুনানিতে তা প্রমাণিত হয়। এর পরই রেয়াত করা হয়নি ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে।
মহকুমাশাসক কৌশিক সিংহ জানান, ৭ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে শুনানি ছিল। ওই আবেদনপত্রে স্বাক্ষর থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ৪-৫ জন শুনানিতে হাজির হন। তাঁদের মধ্যে ২ জন লিখিত ভাবে জানিয়ে দেন, ওই স্বাক্ষর তাঁদের নয়। এমন আবেদনেপত্রের কথাও তাঁরা জানেন না।
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের বক্তব্য, কী ভাবে তাঁদের দলের লেটারহেডে ওই আবেদনপত্র লেখা হল তা তিনি জানেন না। তবে আড়ালে বিজেপির স্থানীয় নেতাদের একাংশ দাবি করেছেন, সংগঠন বাড়ানোর লক্ষ্যে তৃণমূলের ওই নেতার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির তরফে এমন প্রস্তাব এসেছিল। তাই দলের লেটারহেড ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কিন্তু ভুয়ো স্বাক্ষরের বিষয়টি সামনে আসতেই বিজেপি সরে দাঁড়ায়। দিলীপবাবু অবশ্য এমন কথাও মানতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy