Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আধার মিলবে কোথায়?

মিড-ডে মিলের সঙ্গেও আধার কার্ড জোড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জুনের মধ্যে আধার কার্ড করিয়ে নিতে বলা হয়েছিল।

ঠায়: পুরুলিয়া পুরসভা চত্বরের কমন সার্ভিস সেন্টারে। নিজস্ব িচত্র

ঠায়: পুরুলিয়া পুরসভা চত্বরের কমন সার্ভিস সেন্টারে। নিজস্ব িচত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

স্কুল থেকে বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের আধার কার্ড জমা করতে হবে। অনেক ঘুরেও সেই আধার কার্ডের বন্দোবস্ত করতে পারেননি পুরুলিয়ার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আদরি পরামাণিক। একই অভিজ্ঞতা শহরের ইদগা মহল্লার বাসিন্দা রেশমা খাতুনেরও।

মিড-ডে মিলের সঙ্গেও আধার কার্ড জোড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জুনের মধ্যে আধার কার্ড করিয়ে নিতে বলা হয়েছিল।

এ দিকে, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, আগে আধারের বৈধতা নিয়ে ফয়সালা হবে। তার পরে আদালত বিচার করে দেখবে, মোবাইল বা ব্যাঙ্কের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযুক্তিকরণের প্রয়োজন আছে কি না। যে সব প্রকল্পে ‘কনসলিডেটেড ফান্ড’ থেকে টাকা খরচ হয়, সেখানে সরকার আধার নম্বর চাইতে পারে সরকার। তবে আধার না থাকলেও ওই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধে পেতে পারেন নাগরিকেরা। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পরিচয় অন্য উপায়ে নিশ্চিত করতে হবে।

প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে আধার কার্ড করানোটা বাধ্যতামূলক নয়। তবে তাঁরা ভাবছেন, কাজ যতটা এগিয়ে থাকে ততই ভাল। এ দিকে, কাটিনপাড়া রবীন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চন্দ্রা মুখোপাধ্যায়ের মতো অনেককে জানাচ্ছেন, আধার কার্ড করাতে সমস্যায় পড়ছে পড়ুয়ারা।

পুরসভা চত্বরের কমন সার্ভিস সেন্টার থেকে এত দিন এই পরিষেবা পেতেন শহরবাসী ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেশমা বছর আষ্টেকের ছেলের আধার কার্ড করাতে গিয়েছিলেন সেখানে। গিয়ে জানতে পারেন, এখন আর কাজ হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, ব্যাঙ্ক থেকে আধার কার্ড করাতে হবে। ছেলেকে নিয়ে শহরের একাধিক ব্যাঙ্কে ঘুরেছেন রেশমা। সর্বত্র বলা হয়েছে, এখন না, পরে হবে। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

কমন সার্ভিস সেন্টারের দায়িত্বে থাকা ভিএলই দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু শহরেই নয়, গোটা জেলায় আমাদের এ রকমের ষাটটি কেন্দ্র রয়েছে। জেলার কুড়িটি কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্যগুলিও আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে।’’ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য প্রযুক্তি দফতরের অনুমোদিত একটি সংস্থার অনুমতি নিয়ে কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে ভিএলই-রা পরিষেবা দেন। কিন্তু আধার কার্ড তৈরির দায়িত্বে থাকা মূল সংস্থা এই ধরনের কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দিচ্ছে। সংস্থার সঙ্গে কমন সার্ভিস সেন্টারগুলির চুক্তি শেষ হচ্ছে এই মাসের শেষে। সেই মেয়াদ তাঁরা আর বাড়াতে চাইছেন না।

এই পরিস্থিতিতে ভোগান্তি শুরু হয়েছে শহরে। ১ নম্বর ওয়ার্ডের আদরি পরামাণিক ছেলের স্কুলে আধার কার্ড জমা করতে পারছেন না। মুন্সেফডাঙার সুব্রত বরাট পারছেন না আধার কার্ডে মোবাইল নম্বর জুড়তে। বৃহস্পতিবার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পুরুলিয়ার জি এন মুখোপাধ্যায় স্ট্রিটের শাখায় দুই স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে আধার কার্ড করাতে গিয়েছিলেন শাহবান আনসারি। শাখাটির ম্যানেজার আশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, সেখানে পরিষেবা মিলবে বটে। তবে কিছুটা সময় লাগবে। যন্ত্র এসে গিয়েছে। দ্রুত চালু হবে।

পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘সমস্যার কথা শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE