পরিচারিকার ছেলের চোখের চিকিৎসায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
সাঁইথিয়ার আমোদপুর শিলিগুড়িপাড়া রেলপারের বাসিন্দা স্থানীয় আদর্শ বিদ্যাঙ্গনের প্রথম শ্রেণির ছাত্র বছর ছ’য়েকের রাতুল চৌধুরী দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে আতসবাজি ফাটানো দেখতে গিয়েছিল। তখনই কোনও ভাবে বাজির আগুনে তার বাঁ চোখে আঘাত লাগে। ওই চোখে দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য চোখের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
বছর তিনেক আগে স্বামীকে হারিয়েছিলেন সরমা চৌধুরী। সহায়-সম্বলহীন হয়ে ছেলে রাতুলকে নিয়ে আশ্রয় নেন আমোদপুর রেলপারে বিধবা মা সখী দাসের কাছে। মায়ের অবস্থাও তথৈবচ। প্রতিবন্ধী ছেলে শান্তি দাসকে নিয়ে তাঁরও অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটে। মা, মেয়ে দু’জনই লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। তারই মধ্যে রাতুলের দুর্ঘটনায় আরও বিপাকে পড়েন তাঁরা। চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন সরমাদেবীরা। কিন্তু রাতুলের চোখ দিনদিন ফুলে উঠছে। বাড়ছে যন্ত্রণাও।
সম্প্রতি ছেলেকে নিয়ে ব্যারাকপুরের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়েছিলেন অসহায় মা। চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে রাতুলের বাঁ চোখ তো নষ্ট হবেই, ক্ষতি হতে পারে অন্য চোখেরও। সে জন্য লাগবে ৩০ হাজার টাকা। তার পরেও রয়েছে ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের পরের চিকিৎসার খরচ। ৩০০ টাকার সংস্থান নেই সরমাদেবীর। তাঁর দুর্দশার খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যরা। চাঁদা তোলার উদ্যোগ নেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরমাদেবীদের সাহায্যের আবেদনও জানান।
তাতেই উঠেছে অস্ত্রোপচারের খরচ। বুধবার সরমাদেবীর হাতে ওই টাকা তুলে দেওয়া হয়। আপ্লুত মহিলা বলেন, ‘‘ওঁরা যে এ ভাবে পাশে দাঁড়াবেন ভাবতেও পারিনি।’’ আর রাতুল বলেন, ‘‘ওই কাকুরা কী ভালো! এ বার আমি ভাল ভাবে দেখতে পাব। এখন চোখ খুব জ্বালা করে। সব সময় জল গড়ায়। বইয়ের অক্ষরগুলোও ঝাপসা হয়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy