Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষিণের কড়চা

অ্যান্টনি কবিয়ালকে নিয়ে সিনেমা দেখেছে পড়ুয়ারা। কী এই কবিগান, কী ভাবে গাওয়া হয়, কারা সেই গান করেন— এ সব প্রশ্ন তো রয়েছেই। তার চেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল— এখনও এই কবিগান গাওয়া হয়? পাঠ্যবই বলছে, কাজী নজরুল ইসলাম লেটোর দলে গান বাঁধতেন।

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:০৪
Share: Save:

লোকশিল্পের ঝাঁকি দর্শন

অ্যান্টনি কবিয়ালকে নিয়ে সিনেমা দেখেছে পড়ুয়ারা। কী এই কবিগান, কী ভাবে গাওয়া হয়, কারা সেই গান করেন— এ সব প্রশ্ন তো রয়েছেই। তার চেয়ে বড় প্রশ্ন ছিল— এখনও এই কবিগান গাওয়া হয়? পাঠ্যবই বলছে, কাজী নজরুল ইসলাম লেটোর দলে গান বাঁধতেন। কী এই লেটোর দল? তারা গান গায়, না নাটক করে? এক কালে রণপা পরে ডাকাতের দল নাকি ‘হা-রে-রে-রে’ করে ডাকাতি করতে যেত গেরস্থের বাড়ি। আর এখন মজার সাজে কিছু ঢ্যাঙাপানা মানুষ যখন বইমেলায় ইশতেহার বিলি করেন, বাবা-মা বলেন— ওঁরা পায়ে রণপা পরে আছেন। এই রণপা নাকি আমাদের লোকশিল্পেরই অঙ্গ! তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে জানুয়ারির তিন দিন উত্তরপাড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে প্রদর্শনী হয়ে গেল হারিয়ে যেতে বসা নানা লোকসংস্কৃতির। বিজ্ঞান বড়, না ধর্ম— তা নিয়ে সুরের তলোয়ার বাগিয়ে ধুন্ধুমার বাধালেন দুই কবিয়াল দিলীপ ভট্টাচার্য এবং গৌরকৃষ্ণ সরকার। ছাত্রীরা মোহিত। আবদার করেছে, তাদের স্কুল নিয়েও একটা গান বাঁধতে হবে। কবিয়ালরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, গান বেঁধে ফের এসে শুনিয়ে যাবেন। ঢালি-কাঠি-রণপা নাচ পরিবেশন করলেন সুদীপ দাসের নেতৃত্বে চন্দননগর ব্রতচারী অঙ্গনের শিল্পীরা। অবাক মেয়েরা এগিয়ে এসে বলেছে— কাকু, আমাদেরও এই নাচ শিখিয়ে দিতে হবে! সুদীপবাবু বলেছেন, নিশ্চয়ই! আদিবাসী নাচ চেনালেন আরতি হাঁসদা ও সম্প্রদায়, চাঁপাডাঙার মমতা সরকারের দলবল বসালেন লেটোর পালা, যা এ কালের যাত্রাপালারই পূর্বসূরী। ছাত্রীরা বলছিল— এ-ই তা হলে লেটোর পালা! সঙ্গে ছিল বহুরূপীর কাণ্ডকারখানা ও পরিচিত বাউল গানও। হুগলি জেলার চিরায়ত লোক সংস্কৃতির একটি ঝাঁকি-দর্শনের প্রস্তাব নিয়ে স্কুলের সাংস্কৃতিক ক্লাব ‘উত্তরণ’-ই গিয়েছিল তথ্য-সংস্কৃতি দফতরে। লুফে নেন মহকুমা তথ্য আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী। তাঁরই উদ্যোগে এই প্রথম কোনও স্কুলে এই প্রদর্শনী। জেলার প্রাচীন এই সব লোকসংস্কৃতি এখন অস্তিত্বের ভয়াবহ সঙ্কটে। মেলা হয়, উৎসব হয়, রমঝমে গান-বাজনার জাঁকে এই সব পরম্পরাগত লোকশিল্পীদের ডাকার কথা কেউ মনেও রাখে না। এমন একটা পরিস্থিতিতে স্কুলের ছাত্রীরা নিজেই এগিয়ে এল তাঁদের কথা জানতে। শিল্পীরা বলছেন, এটা আশার কথা বইকি!

দেখা জীবনের গল্প

‘সেলফোন’-এই প্রথম পাঠকের সঙ্গে দেখা অতীন আর তোড়ার৷ তার পরে দুই চরিত্রের সম্পর্কের মধ্যে ঢুকে পড়ে, মিশে যায় এনআরএলএম, ওয়াটারশেড ম্যানেজমেন্ট বা কন্যাশ্রী৷ পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক স্বাতী গুহ এ ভাবেই কর্মসূত্রে নিজের দেখা জীবনকে অন্য আদলে লেখেন তাঁর গল্পে৷ জন্ম কলকাতায় হলেও স্বাতীর বড় হয়ে ওঠা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা-শহর আর গ্রাম-মফসসলে৷ শৈশব আর কৈশোরের সেই ভুবনও ফিরে ফিরে আসে তাঁর লেখায়৷ তাঁর সাম্প্রতিক বই অতীন তোড়ার গল্প লালমাটি থেকে প্রকাশিত হল এ বারের বইমেলায়৷ প্রচ্ছদে টাঁড়বাংলার চেনা ছবি, দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের তুলিতে৷ পেশায় পুলিশ আধিকারিক দ্যুতিমান পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশসুপার ছিলেন, আপাতত বর্ধমানে কর্মরত৷

গান হতে গান

বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র সঙ্গীতের অধ্যাপক মলয় শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায়, শিল্পী আনন্দ গোপাল মুখোপাধ্যায়ের রবীন্দ্র সঙ্গীতের একটি সিডি সম্প্রতি প্রকাশিত হল আমোদপুরে। উত্তীয় চট্টোপাধ্যায়ের মন্দিরা, চঞ্চল নন্দীর তবলা, প্রেমাংশু সেনের এস্রাজ ও অনিমেষ চন্দ্রের কি বোর্ড-এর যন্ত্রানুসঙ্গে, ‘আমার মাথা নত করে’, ‘মহাবিশ্ব মহাকাশে’-এর মত আটটি গান রয়েছে ওই সিডিতে। আমোদপুর সুগার মিলের প্রাক্তন আধিকারিক তথা আমোদপুর পুর সাহিত্য সংসদের সভাপতি শিল্পীর এই সিডি প্রকাশ করেন মলয়বাবু। একটি ঘরোয়া পরিবেশের মধ্যে এই সিডি প্রকাশের অনুষ্ঠানে গান ও কবিতার মধ্যদিয়ে সত্তর বছরের বয়সী শিল্পীকে সম্মান জানান উপস্থিত এবং আমন্ত্রিত শিল্পীরা। বিশ্বভারতীর কৃষি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র শিল্পী আনন্দ গোপালবাবুর রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং নাট্য চর্চা এলাকায় সুবিদিত।

মহুয়া

কিছু কিছু পত্র-পত্রিকা থাকে, দু’চার পাতা এগোনোর পর পাশে সরিয়ে রাখতে হয়। আবার কিছু কাগজ থাকে, পাঠ শেষ করে সারা সারা দুপুরজুড়ে চোখের সামনে লেগে থাকে। কেবল ছাপার জৌলুসে নয়, বিষয়-ভাবনায় এগিয়ে সেই সব পত্রিকা। সম্প্রতি বীরভূমের নানুর থেকে হাতে আসা ‘মহুয়া’ তেমনই একটি পত্রিকা। সম্পাদক রঘুরাজ সিংহ। ১৯২ পাতার এ পত্রিকায় প্রবন্ধ তালিকাতেই পাঠক চমকে ওঠেন। জেলার কবি কবিরুল ইসলামের স্মরণ যেমন আছে, বেকেটের আত্মজিজ্ঞাসাও আছে! গল্প, সাক্ষাৎকার, কবিতা, ভ্রমণের পাশে ‘স্বাস্থ্য’ একটি বিভাগ। সেই বিভাগে ‘ইবোলা’, ‘থাইরয়েড’ নিয়ে তথ্যঋদ্ধ লেখা প্রকাশিত। মন্দ লাগে না উল্লাস মল্লিকের রম্যরচনা ‘গুরু না ভজি মন’। প্রচ্ছদটি করেছেন সোমনাথ মুস্তাফি।

আসানসোলের ভূত

লীলা মজুমদার, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় থেকে হুমায়ুন আহমেদ— বাংলা সাহিত্যের আনাচে কানাচে এঁদের অবাধ যাতায়াত। ওঁরা ভূতের দল। আসানসোলের জিৎ মজুমদার তাঁর ‘নিশীথ রাতের বিভীষিকা’ ও ‘নিশীথ রাতের ভয়ঙ্কর’ নামে দু’টি বইয়ের মোট ১৬টি গল্পে শিল্পাঞ্চলের ভূতদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। গল্পের পটভূমিতে আসানসোল ও দামোদর রেল স্টেশন, নরসমুদা, ডলিলজ, ডিপোপাড়া, বুধা কবরস্থানের মতো শিল্পাঞ্চলের পরিচিত জায়গাগুলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। গা ছমছম পরিবেশে খুন, জখম, অপমৃত্যু— এ সবই রয়েছে গল্পের বুনোটে। শেষমেশ লেখক চান, ভূতের রাজার বর নিয়ে ‘ভুতুড়ে লেখক’ হিসেবে তকমা পেতে।

খনা-উদ্ধার

খনার বচন প্রায় সারা বাংলায় এখনও প্রবল ভাবে প্রচলিত৷ ‘দিনে রোদ রাতে জল৷ তাতে বাড়ে ধানের বল৷৷’ এ হেন বিভিন্ন কিন্তু কে এই খনা, কী তার ইতিহাস তা নিয়ে নির্ভরযোগ্য আলোচনা বাংলায় প্রায় নেই বললেই চলে৷ বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন৷ দুষ্প্রাপ্য সেই প্রবন্ধ পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হল সম্প্রতি৷ সুতপা মণ্ডলের সম্পাদনায় খনা নামে সে বইয়ে রয়েছে যোগেশচন্দ্রের আরও তিনটি দুষ্প্রাপ্য প্রবন্ধ, ‘পাঁজিতে ইতিহাস’, ‘পুরাণে রাঢের ইতিহাস’ এবং ‘জয়দেবের দুকূল’৷ সবকটি প্রবন্ধেই রাঢ়বঙ্গের নানা অকথিত ইতিহাস আলোচিত৷ বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত রাঢ়চর্চায় এই গুরুত্বপূর্ণ সংযোজনটির ভূমিকা লিখেছেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়৷

উনিশের কথা

সময়টা উনিশ শতক— বাঙালির নবচেতনার যুগ। কিন্তু সেই চেতনা বাঙালি মুসলমানের যাপনকে কতখানি প্রভাবিত করেছিল, তা নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েছেই। বিশ শতকের গোড়া থেকে বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের সন্ধান শুরু হয়। উখড়ার ‘কবিওয়ালা’ পত্রিকার সাম্প্রতিক সংখ্যাটি যেন সেই ধারাবাহিক আত্মপরিচয়ের সামাজিক ইতিহাসকেই সন্ধান করে। অবশ্যই তা কবি ও কবিতার মাধ্যমে। এ বারের অতিথি সম্পাদক মানবেন্দু রায়, পত্রিকা সম্পাদক মহম্মদ মানিক এবং সাগর চক্রবর্তী সম্পাদিত এই পত্রিকায় স্থান পেয়েছে কায়কোবাদ, গোলাম মোস্তাফা, হুমায়ুন কবির, গোলাম কুদ্দুসদের কথা। রয়েছে বেশ কয়েকটি লেখার পুনর্মুদ্রণ। এ ছাড়াও বিশিষ্ট কবি আব্দুস সামাদকে নিয়ে ক্রোড়পত্র ও পত্রিকার নিয়মিত বিভাগগুলিও পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

মাটির সুরে দেবীর গান

বহু বছর আগে শম্ভু মিত্র বহুরূপী নাট্যদলে থাকাকালীন ‘চাঁদ বণিকের পালা’ মঞ্চস্থ করতে চেয়েছিলেন। করা হয়নি আর। সে নিয়ে তাঁর আজীবনের আফশোষ ছিল। পরে তিনি সেই নাটকটি শ্রুতি নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ করেছিলেন। তাঁর সেই একক-শ্রুতির রেকর্ড আজও জনপ্রিয়। সেই ‘চাদ বণিকের পালা’-র ঢঙে রবিবার সন্ধ্যায় বীরভূমের ইলামবাজারের দ্বারোন্দা গ্রামে মঞ্চস্থ হল ‘অরগ্যানিক থিয়েটার’ প্রযোজনা ‘দেবীমাহাত্ম্য’। পরিচালনায় মনীশ মিত্র। বাংলা থিয়েটারের দুনিয়ায় মনীশ এখন বিতর্কিত নাম। কলকাতা ছেড়ে দ্বারোন্দার মঞ্চে কেন? ‘‘এই নাটকের পক্ষে দ্বারোন্দার থিয়েটার মঞ্চই উপযুক্ত মঞ্চ। কারণ, সেখানে রয়েছে একটি বড় এবং তিনটি ছোট কটেজের মতো ঘর। রয়েছে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষজন। আমার ছাত্র পার্থ গুপ্তকে দায়িত্ব দিলে সে রুচি সম্মত এবং চাহিদা মতো মঞ্চের ব্যবস্থা করে দেয়।’’ প্রসঙ্গত, দ্বারোন্দা গ্রামে থিয়েটার-চর্চার উদ্যোগ পার্থবাবুরই। এর আগেও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব মণিপুরের রতম থিয়ামও এই গ্রামটিকে বেছে নিয়েছিলেন দুটি অনুষ্ঠান করার জন্য। মনীশ তাঁর আগের নাটকগুলির মতোই ‘দেবীমাহাত্ম্য’ পরিচালনা করতে গিয়ে লোকজ সংস্কৃতিকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থেকেছেন। এ নাটক মূলত মনসামঙ্গল কাব্যের প্রতিরূপ। যেখানে মনসা, চাঁদ সওদাগরের পুজো নেওয়ার জন্য অস্থির ছিলেন। কিন্তু শিবের উপাসক চাঁদ সওদাগর তাতে সম্মতি দেননি। চাঁদের সাত পুত্র একে একে মারা যায়। শেষে লক্ষ্মীন্দরের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর, বেহুলার অনুরোধে চাঁদ মনসাকে পুজো করেন। তবে সে পুজে বাঁ হাতে। তাতে চাঁদ তার হারানো ধন সব ফিরে পান। ‘দেবীমাহাত্ম্য’-কাহিনি মঙ্গলকাব্যের এই গল্পেই গাঁথা। নাটকের আবহে শোনা যায় রাগ হংসধ্বনী। কখনও ইমনে আলাপ-বিস্তার। বেহালার সুরে নাটকের চরিত্রগুলকে ব্যবহার করা হয়েছে মাহিমে বা মূকাভিনয়ে। মঞ্চের বাইরে, আদিবাসী যুবকযুবতীদের নৃত্য এবং বাদ্য যন্ত্রের সুরে নাটকটি অন্য মাত্রা পেয়েছে।

সেনানী

সময়টা সত্তর দশকের গোড়া। শীতের রাত। আশ্রম বিদ্যালয়ের কর্তা টের পেলেন কেউ ঢুকেছে। দূর থেকে দেখলেন দুই নিশিকুটুম্ব গরুড় গাড়ির একটি চাকা কাঁধে তুলেছে। কিন্তু চোরেরা বাইরে যাবে কী করে? বাইরে যাওয়ার রাস্তায় তখন স্বয়ং আশ্রম কর্তা দাঁড়িয়ে। দুই নিশিকুটুম্ব চাকা ফেলে দিয়ে পায়ে পড়ল আশ্রম কর্তার। সন্ধ্যা থেকে পেটে কিছু পড়েনি জেনে দু’জনের জন্য ওই রাতেই মুড়ি কাঁচা লঙ্কা পেঁয়াজ গুড়ের ব্যবস্থা করলেন কর্তা। চুরির চেষ্টার কথা আশ্রমের সবাই পরের দিন জানলেও চোরেদের পরিচয় প্রকাশ করেননি কখনও। পরে তাঁরাই আশ্রমের দেখভালের কাজে নিয়োজিত হয়েছিল। রবিবার এমনই নানা টুকরো স্মৃতি উঠে এল পুরুলিয়ার মানবাজারের মাঝিহিড়া আশ্রম বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের প্রাণপুরুষ চিত্তভূষণ দাশগুপ্তকে ঘিরে। শনিবার রাতেই প্রয়াত হলেন শতায়ু এই স্বাধীনতা সেনানী। ১৯২৭ সালে পুরুলিয়ায় এসে ১২ বছরের যে স্বেচ্ছাসেবকের পিঠে হাত রেখে নেতাজি জানিয়েছিলেন, একদিন তিনি অনেক বড় হবেন। তার তিন বছর পরেই কিশোর চিত্তভূষণকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ সরকার। পরে ১৯৪০ সালে গাঁধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানবাজার ও বরাবাজার থানার সীমানায় মাঝিহিড়া গ্রামে গড়ে তোলেন পূর্ব ভারতের প্রথম বেসরকারি বুনিয়াদি বিদ্যালয়— ‘মাঝিহিড়া জাতীয় বুনিয়াদি আশ্রম বিদ্যালয়’। জঙ্গলে ঘেরা এই স্কুলই তখন স্বাধীনতা সেনানীদের যোগাযোগের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনেও তাঁর এই বিদ্যালয় পুরোভাগে ছিল। গাঁধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত মানুষটির পার্থিব শরীর ভস্মীভূত হলেও রয়ে গেল তাঁর প্রতিষ্ঠান, তাঁর ভাবনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE