Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কাজ ব্যাহত, ক্ষোভ

আইজীবীদের কর্মবিরতি চলছেই

শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন নির্মানের দাবিতে এবং ভক্তিনগর থানার আইনি কাজকর্ম শিলিগুড়ি আদালতে আনার দাবিতে শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবীদের কর্ম বিরতি ১১ দিন পার করল। এর ফলে আদালতের বিচার ব্যবস্থা শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৭
Share: Save:

শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন নির্মানের দাবিতে এবং ভক্তিনগর থানার আইনি কাজকর্ম শিলিগুড়ি আদালতে আনার দাবিতে শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবীদের কর্ম বিরতি ১১ দিন পার করল। এর ফলে আদালতের বিচার ব্যবস্থা শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাধারণ ছোট খাটো জামিনযোগ্য মামলাতে জামিন পেয়েও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেল হাজতে থেকে যেতে হচ্ছে। কর্ম বিরতি পালন করা আইনজীবীরা বা সরকারি আইনজীবীরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার উপায় বাতলে দিচ্ছেন দাবি করলেও তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না বলে আইনজীবীদেরই একাংশের দাবি। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন সকলেই। বৃহত্তর স্বার্থে একে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আইনজীবীদেই একাংশ। অনেকে আবার রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই সমস্যা নিয়ে শীঘ্রই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন হবে। তার জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কাজ বন্ধ করে মানুষের হয়রানি করার সিদ্ধান্ত ঠিক নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলব আইনজীবীদের সঙ্গে।”

গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শিলিগুড়ি আদালত চত্বরেই কর্মবিরতি পালন করছেন শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার তাঁদের কর্মবিরতি পড়ল ১১ দিনে।

শিলিগুড়ি বার অ্যসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে তার আগে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও সদর্থক বার্তা পেলে বিরতি উঠিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে জানান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন দে। তিনি বলেন, “সমস্যা একটু হচ্ছে। তবে আমরা বিচারক ও সরকারি আইনজীবীদের বলে জামিনযোগ্য ধারাগুলোতে অভিযুক্তদের দিয়েই সওয়াল করাচ্ছি। আইনি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়াও জানান, তাঁরা বকলমে সাহায্য করছেন। তবে এই উদ্যোগে দু-একজন উপকার পেলেও তা মোট পরিমাণের তুলনায় খুবই সামান্য বলে জানা গিয়েছে।

এ দিন প্রতারণার মামলায় ধৃত শিলিগুড়ির জলপাই মোড়ের এক যুবক মিথিলেশ পাসোয়ানের বাবা বিনোদবাবু সকাল থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু উকিল না পাওয়ায় তাঁর ছেলের জামিন হয়নি। তাঁর ছেলে ন্যূনতম লেখাপড়াও জানেন না বলে জানান তিনি। ফলে তার পক্ষে উকিলের পরামর্শেও কোনও লাভ হয়নি।

শিলিগুড়ি আদালতের এক আইনজীবী অত্রি শর্মা অবশ্য সমস্যা হচ্ছে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনে সমস্যা একটু হবে। তবে আমাদের দাবি মানা হলে তা সকলের সুবিধা হবে। তাই এই কদিনের সমস্যা মেনে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।” অন্য এক আইনজীবী অখিল বিশ্বাসের দাবি, “বৃহত্তর স্বার্থেই এই আন্দোলন। তাই এই আন্দোলন চলবে।”

শিলিগুড়ি আদালতে বর্তমানে মোট দশটি আদালত রয়েছে। আরও দুটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। তাতে প্রতিদিন গড়ে ১০ টি মামলা হয়। প্রতিদিন শ’খানেক মামলা জমা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হাজারের উপরে ছোট-বড় মামলা ঝুলে রয়েছে। অভিযুক্তরা আইনজীবী না পাওয়ায় মামলা জোরালো না হওয়া সত্বেও জামিন নাকচ হয়ে যাচ্ছে আক্ষেপ করেন আদালতে কর্মরত এক পুলিশকর্মী। বিরতি আরও কিছুদিন চললে জামিন না হওয়া মামলার সংখ্যা কততে গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sangram sinha roy siliguri strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE