Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আচমকা বৃষ্টির মতো হাতে পিঠে পড়ল পুলিশের লাঠি

বেলা তখন প্রায় তিনটে। মোটরসাইকেলে করে আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলাম রায়গঞ্জ হাসপাতালে। কলেজ পাড়া দিয়ে যাওয়ার সময়ই আচমকাই পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়ল আমার হাতে পায়ে। বাইকের উপরে ছিলাম। পালাতেও পারিনি। কোনওমতে বাইকটি সামলাতে সামলাতে আরও কয়েকবার পুলিশের লাঠি আমার গায়ে পড়ল। আমার চারপাশে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল। তারাও মোটরবাইকেই চেপে যাচ্ছিল। তাদেরও পুলিশ বেধড়ক লাঠি পেটা করে। আমি বুঝতে পারিনি, আমার কী দোষ? আমি কেন মার খাব?

রায়গঞ্জে পুলিশের লাঠি।

রায়গঞ্জে পুলিশের লাঠি।

নীতীশচন্দ্র রায়
(কলেজের ছাত্র) শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৩৫
Share: Save:

বেলা তখন প্রায় তিনটে। মোটরসাইকেলে করে আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলাম রায়গঞ্জ হাসপাতালে। কলেজ পাড়া দিয়ে যাওয়ার সময়ই আচমকাই পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়ল আমার হাতে পায়ে। বাইকের উপরে ছিলাম। পালাতেও পারিনি। কোনওমতে বাইকটি সামলাতে সামলাতে আরও কয়েকবার পুলিশের লাঠি আমার গায়ে পড়ল। আমার চারপাশে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল। তারাও মোটরবাইকেই চেপে যাচ্ছিল। তাদেরও পুলিশ বেধড়ক লাঠি পেটা করে। আমি বুঝতে পারিনি, আমার কী দোষ? আমি কেন মার খাব?

বাইক নিয়ে কোনওমতে রাস্তার পাশের একটি পানের দোকানে ঢুকে পড়ি। গায়ে হাতে তখন প্রচণ্ড ব্যথা। ওই দোকান থেকেই বরফ নিয়ে গায়ে হাতে লাগাই। ওই দোকানেই শুনলাম, সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় গোলমাল হয়ে গিয়েছে। দেখতে পাই, পুলিশের বড় কর্তারা তখনও রাস্তার উপরেই রয়েছেন। পড়ে জানতে পারি তাঁদের একজন জেলা পুলিশের ডিএসপি-ও ছিলেন। আমার খুব অভিমান হয়েছিল। আমি সোজা গিয়ে রায়গঞ্জ থানার আইসি-কে বলি, ‘আমার কী দোষ? আমাকে কেন এই ভাবে পেটানো হল? রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে সকালে কোনও ঝামেলা হয়ে থাকতেই পারে। তাই বলে রাস্তা দিয়ে যাঁরা যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষকে মারার আইন কোন দেশে রয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার খুলে আপনারা দেখে নিতে পারেন, আমি কোনও কালেই এই কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম না। যদি এই রাস্তা দিয়ে যাওয়াটাই আমার দোষ হয়, তা হলে গণ্ডগোলের পরে রাস্তাটি সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল না কেন?’

পুলিশ আমার কথার কোনও সন্তোষজনক উত্তর দেয়নি। পুলিশের বড় কর্তারা কেবল বলেন, তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন, ঠিক কী হয়েছে আমার সঙ্গে।

পরে জানলাম, আমার সঙ্গে ওই রাস্তায় অন্য যে যুবকেরা মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন, তাঁরা ছাত্র পরিষদের সমর্থক ও নেতা। এও জানতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া গণ্ডগোলের পরে তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ কোথাও লুকিয়ে ছিলেন। রাস্তা ফাঁকা হওয়ার পরে তাঁরাও নিজেদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাচ্ছিলেন।

আমার বাড়ি রসখোয়ায়। আত্মীয় অসুস্থ। রায়গঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি। আমি ভাবতেই পারিনি, তাকে দেখতে গিয়ে এমন অবস্থার মধ্যে পড়ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE