আত্রেয়ী নদীকে বাঁচাতে এবার মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি উঠলো বালুরঘাটে।
আজ, বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা দিশারী সংকল্পের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফ্যাক্স করে ওই আবেদন করা হয়েছে। আসন্ন বাংলাদেশ সফরের আগে মুখ্যমন্ত্রীকে আত্রেয়ী নদীর সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি উত্থাপনের দাবি জানিয়েছে ওই সংস্থা।
বালুরঘাটে আত্রেয়ীর জলসঙ্কট নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর উদ্যোগে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল দিশারী সংকল্প। দিশারির সম্পাদক তুহিনশুভ্র মন্ডল বলেন, ‘‘উৎস মুখে আত্রেয়ী নদীতে বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর যে অভিযোগ উঠেছে সে সম্পর্কিত তথ্য সেচমন্ত্রীকে পাঠানো হয়। বালুরঘাটে ওই নদী শীর্ণ হয়ে পড়ার খবরে সেচমন্ত্রীও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বালুরঘাট সফরে এসে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন সেচমন্ত্রী। তাঁর বালুরঘাট সফর পিছিয়ে যায়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর সূচির খবরে আত্রেয়ীর বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার আশা করছেন জেলার মানুষ।’’
আঙিনা পাখি ও পরিবেশ সুরক্ষা সমিতির তরফেও ইতিমধ্যে আত্রেয়ী রক্ষার জন্য কুমারগঞ্জ এলাকায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে নামা হয়েছে। সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিত বসাকের বক্তব্য, অন্তত ১০ হাজার মানুষের সাক্ষর সহ স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর উদ্যোগ চলছে।
এ বছর গরমের শুরুতেই সহসা বালুরঘাটে আত্রেয়ী নদীর জল শুকিয়ে মরুভূমির চেহারা নেওয়ায় শঙ্কিত হয়ে ওঠেন নদীর অববাহিকা অঞ্চলে বসবাসকারী মৎস্যজীবী এবং কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, কুমারগঞ্জ সীমান্তের ওপারে নদী বরাবর কংক্রিটের সেচবাঁধ দিয়ে জল আটকে দেওয়াতেই আত্রেয়ী মরতে বসেছে। ওই পরিবেশপ্রেমী সংস্থার তরফে খোঁজ খবর নিয়ে আত্রেয়ীর উপগ্রহ ছবি দেখে ওই সন্দেহ আরও জোরালো হয়।
এর পরই জেলা জুড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে যায়। বিভিন্ন সংস্থা থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে ঐতিহ্যবাহী আত্রেয়ীকে বাঁচাতে তৎপরতা শুরু হয়। চারিদিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বালুরঘাটে নাগরিকরা মানবশৃঙ্খল তৈরি করে আন্দোলনের শপথ নেন। শহরের পড়ুয়ারা আত্রেয়ীর হারানো রূপ ফেরাতে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে সামিল হয়। বাংলাদেশ সফরে তিস্তা জল বন্টন নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ উঠতে পারে ভেবে বাসিন্দাদের আশা, দু’দেশের মধ্যে বয়ে চলা আত্রেয়ী নদীর ওই সংকটের বিষয়টি নিয়েও যেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় উঠে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy