নিজের জেলাতেই রাস উৎসব। আর সেই উৎসবের উদ্বোধনে ডাক না পাওয়ার অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। শাসক দলের হাতে থাকা পুরসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে খোদ মন্ত্রী ডাক না পাওয়ার অভিযোগ তুলতেই কোচবিহারে শাসক দলের দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এসেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় কোচবিহার রাসমেলার উদ্বোধন করেন বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু মঞ্চে হাজির ছিলেন না রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের নেতা বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মদনমোহন মন্দিরে শুরু হয় যায় বিশেষ পুজো। পুজোর পর ঘোরানো হয় রাসচক্র। ওই অনুষ্ঠানে অবশ্য হাজির ছিলেন বিনয়বাবু।
রাসচক্র ঘোরানোর অনুষ্ঠানে থাকলেও কেন তিনি মেলা উদ্বোধনের মঞ্চে ছিলেন না, সেই প্রশ্নের উত্তরে বিনয়বাবুর উত্তর, “আমি তো কোনও আমন্ত্রণের চিঠি পাইনি। এই অনুষ্ঠানে জেলাশাসক নিজে আমন্ত্রণ করেছেন তাই এসেছি। কোচবিহারের সব থেকে বড় উৎসবের প্রতি তো আমারও টান রয়েছে।” রবীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, পুরসভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সবাইকে আমন্ত্রণ করেছে বলেই জানি। বিনয়বাবুর বাড়িতেও কার্ড পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভার চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন।” পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভা যে কার্ড ছাপিয়েছে সেখানে অতিথির তালিকায় বিনয়কৃষ্ণবাবুর নাম রয়েছে। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রেবা কুণ্ডু বলেন, “বনমন্ত্রী-সহ সমস্ত প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।”
ওই মঞ্চে হাজির ছিলেন না জেলায় রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী হিসেবে পরিচিত সাংসদ রেণুকা সিংহও। তাঁর নামও বিশেষ অতিথিদের তালিকায় ছিল। রবীন্দ্রনাথবাবু উদ্বোধক থাকায় তাঁরা ওই অনুষ্ঠান কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রেণুকাদেবী অবশ্য বলেন, “আমি চিঠি পেয়েছি। ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে যেতে পারিনি।” দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূলের জেলা রাজনীতিতে বিনয়কৃষ্ণবাবু বনমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। একসময় মাথাভাঙার নেতা হিসেবে পরিচিত বিনয়বাবু রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের একজন ছিলেন। বিনয়বাবুর অনুগামীরা বরাবর অভিযোগ করেন, বিনয়বাবু বনমন্ত্রী হওয়াতেই চটে যান জেলা সভাপতি।
রবীন্দ্রনাথ অনুগামীদের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, বিনয়বাবু মন্ত্রী হওয়ার পরেই তাঁর ‘দম্ভ’ বেড়ে যায়। তিনি রবীন্দ্রনাথবাবুকে আর ‘আমল’ দিতে চাইছেন না। ওই অনুষ্ঠান ঘিরে সেটাই প্রকাশ্যে এসেছে। বিনয় অনুগামীদের একাংশের দাবি, বনমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে তিনি যদি কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন তো সেখানে তাঁকে দিয়েই উদ্বোধন করানোর কথা। কিন্তু অনেক জায়গাতেই এমনটা হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, পুরসভা মেলা উদ্বোধনের যে কার্ড ছাপিয়েছিল সেখানেও ওই একই সমস্যা তৈরি হয়।
উদ্বোধক হিসেবে রাখা হয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। সেখানে বিনয়বাবু ছিলেন বিশেষ অতিথি। প্রকাশ্যে অবশ্য দুই নেতা বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy