Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরের চিঠি

দিনহাটার বামনহাট রেল স্টেশন সমাজবিরোধীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। রেলস্টেশন চত্বরে চলছে মদ ও গাঁজার আসর। এলাকার মানুষ রেল দপ্তর এমনকী পুলিশ প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না বলে এমনই অভিযোগ উঠেছে।

এই স্টেশন চত্বরেই চলছে সমাজবিরোধীদের আড্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

এই স্টেশন চত্বরেই চলছে সমাজবিরোধীদের আড্ডা। —নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩০
Share: Save:

সমাজবিরোধীদের আড্ডা বন্ধ হোক

দিনহাটার বামনহাট রেল স্টেশন সমাজবিরোধীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। রেলস্টেশন চত্বরে চলছে মদ ও গাঁজার আসর। এলাকার মানুষ রেল দপ্তর এমনকী পুলিশ প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না বলে এমনই অভিযোগ উঠেছে।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বামনহাট রেলস্টেশন সমাজবিরোধীদের কব্জায়। মদ ও জুয়ার আসর নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সমাজবিরোধীদের ভয়ে সন্ধ্যার পরে রেলস্টেশন চত্বরে সাধারণ মানুষ যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। কারণ সন্ধ্যার পর ওই অ়ঞ্চল মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়। বিশেষ করে রাতের ট্রেন যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। কারণ সুযোগ পেলেই সমাজবিরোধীরা যাত্রীদের উপর চড়াও হয়। যাত্রীদের মারধর ছাড়াও টাকা-পয়সাও ছিনিয়ে নেয়। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছিল বামনহাটে। ট্রেনও অবরোধ করা হয়। পরে রেল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তা ওঠে। জানা গিয়েছে, সমাজবিরোধীদের দাপটে রেলকর্মীরাও ত্রস্ত। এর বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করার ক্ষমতা রেলকর্মীদেরও নেই।

অনল বসুনিয়া, দিনহাটা, কোচবিহার।

মেডিক্যালের পরিষেবার উন্নতি চাই

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সমগ্র উত্তরবঙ্গের মধ্যে বৃহৎ চিকিৎসাকেন্দ্র। কেন্দ্রীয় পরিষেবায় প্রচুর বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবা তলানিতে। এই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র পরবর্তী কালে চিকিৎসক এবং অধুনা শিলিগুড়ির বিধায়ক ডাঃ রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য। তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটিরও চেয়ারন্যানও। মন্ত্রী গৌতম দেবও রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান। এরা থাকতে তাহলে হাসপাতালের এই দশা হবে কেন? হাসপাতালের চারদিকেই জীবাণুযুক্ত নোংরা। ওয়ার্ডগুলোতে ঢোকার রাস্তা নেই। বাথরুমের অবস্থা নরক তুল্য। কর্তৃপক্ষের একটাই কথা, ঝাড়ুদারের অভাব। নিয়ম আছে ঠিকাদারের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ সুইপার নিয়োগ করে হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেন। কিন্তু তা না করে কর্তৃপক্ষ সেই বরাদ্দকৃত সেই টাকায় কিছু কেরানি ও কর্মচারী নিয়োগ করছেন।

এ ছাড়া কান পাতলেই শোনা যায় নানা দুর্নীতির কথা। প্রায় কোটি টাকার ওষুধের কোনও হিসাব নেই। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রচুর টাকার ওষুধ নাকি হাসপাতালের এখানে সেখানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। স্টোরকিপার অবসর নিয়েছেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু তিনি কোনও হিসাব বুঝিয়ে যাননি পরবর্তী কর্মচারীকে। কিন্তু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। আনন্দবাজারে প্রকাশিত খবরে প্রকাশ অনেক রোগী এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারাও গেছেন অনেকে। প্রতিদিন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন ৩০-৩৫ জন রোগী। রোগ নির্ণয়ের কিটের সংকুলান নেই। এ সব সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের কোনও শিক্ষা হচ্ছে না।

স্বাস্থ্য বিভাগের অধীশ্বর নির্মল মাঝির কাছে অনুরোধ, উত্তরবঙ্গের এই হাসপাতালটির ব্যাপারে আপনি একটু সক্রিয় হন।

প্রকাশ সরকার, দুর্গামন্দির, কদমতলা, দার্জিলিং।

সমাজের মূল্যবোধ কমে যাচ্ছে

বর্তমান সমাজে বর্ষীয়ান মানুষের সঙ্গে কত ঘটনাই না ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু তা প্রচারের আলোয় না আসায় আমাদের অজানাই থেকে যায়। আর এ সব ঘটনা বর্ষীয়ান লোকদের মনে আঘাত দিলেও আজকের প্রজন্মের সন্তানদের মনে কোনও রেখাপাত করে না। কিছু দিন আগের ঘটনা। আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা। বন্ধুটি কলকাতায় মেট্রো রেলে চেপে যাচ্ছিলেন তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে। ট্রেনটিতে প্রচুর ভিড় ছিল। বন্ধুটি বর্ষীয়ান লোকদের জন্য সংরক্ষিত আসনের দিকে এগিয়ে গেলেন। আসনটি দখল করে আছে কিছু অল্প বয়সি ছেলে। বন্ধুটি তাদের আসনটি ছেড়ে দিতে বলেন। আসনটি না ছেড়ে সেই ছেলেরা বন্ধুকে তাঁর সিনিয়র সিটিজেনের প্রমাণ দেখাতে বলেন, যা তখনই তার পক্ষে দেখানো সম্ভব ছিল না। বন্ধুটি ওই ছেলেগুলোর সামনেই দাঁড়িয়ে থাকেন। ছে্লেগুলো আসনটি না ছেড়ে নিজেদের মধ্যে গল্পগুজবে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশনে নেমে যায়। ইতিমধ্যে একজন মাঝ বয়সি ভদ্রলোক বন্ধুটিকে তার আসনটি ছেড়ে দেন। উপরোক্ত ঘটনাটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হামেশাই ঘটছে কোথাও না কোথাও। এফ ফলে উদ্বেগ বাড়ছে আমাদের। এই সব নৈতিক মূল্যবোধহীন যুবকের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ফলে অবক্ষয় হচ্ছে মূল্যবোধের এবং তার শিকার হচ্ছে বর্তমান বয়স্ক লোকেরা, যারা সরকারেও কাছেও যেমন ব্রাত্য, তেমনই বর্তমান প্রজন্মের কাছেও উপেক্ষিত। বর্ষীয়ান মানুষরাও হারিয়ে ফেলছেন তাদের প্রতিবাদের ভাষাও। এ সব ঘটনায় তাদের উদ্বেগ বাড়ছে। তাই প্রশ্ন এই অবক্ষয় কি রোখা যাবে না এই রাজ্যে?

অরবিন্দ কুমার সেন, মহামায়া পাড়া, জলপাইগুড়ি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE