Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরের চিঠি

৪ (ক) ফর্ম ফিলাপ করে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে জমা দিলে ১৫ দিনের মধ্যে MGNREGA-এর ‘একশো দিনের কাজ’ পাওয়া যায়। কাজ না হলে আবেদনকারীকে ‘ভাতা’ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৫০
Share: Save:

বেদন করে কাজ পাওয়া প্রায় বন্ধের মুখে

৪ (ক) ফর্ম ফিলাপ করে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে জমা দিলে ১৫ দিনের মধ্যে MGNREGA-এর ‘একশো দিনের কাজ’ পাওয়া যায়। কাজ না হলে আবেদনকারীকে ‘ভাতা’ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আর্থিক বর্ষে একশো দিন কাজ পাওয়াটা একটা জবকার্ডধারী পরিবারের আইনি অধিকার। এই তথ্যটুকু উপযুক্ত প্রচারের অভাবে অজানা থাকায় বহু পরিবার একশো দিনের কাজ থেকে বঞ্চিত। কোচবিহার জেলায় এই প্রকল্পের দুর্নীতি মহামারীর রূপ নিয়েছে। এর জন্য দায়ী সরকারি আমলাদের বাঁকা মেরুদণ্ড। পঞ্চায়েত জোরালো ভাবে প্রচার করে যে, পঞ্চায়েত যাকে ‘সিলেক্ট’ করবে, সে-ই কাজ পাবে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা বিডিও কারও অধিকার বা ক্ষমতা নেই কাউকে কাজ দেবার। কাজ পেতে হলে কর্মপ্রার্থীকে ১৫ দিন পরপর আবেদন করে রিসিপ্ট সংগ্রহ করতে হবে। কাজ পাবার পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে পঞ্চায়েতে চলছে দলতন্ত্র আর লাগামহীন দুর্নীতি। কাজের জন্য মানুষ সারা বছর পঞ্চায়েত সদস্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। এমনকী ‘প্রিয়জন’দের হয়ে পঞ্চায়েত জাল সই করে আবেদন জমা দেয়, যেটা জানতে পারে না সেই ‘প্রিয়জন’ও। আবার কেউ কেউ একের পর এক স্কিমে কাজ পেয়ে যায়। অন্যদিকে সহায়সম্বলহীন, বিধবা, ভিটেমাটিহীন অনেকেই বছরের পর বছর বঞ্চিত থাকে। চিত্রটা হলদিবাড়ি ব্লকে প্রকট। আবেদন করে কাজ নেওয়ার নিয়মটা এখানে প্রায় উঠে যেতে বসেছে। পঞ্চায়েত সদস্যরা ঘরে বসে ঠিক করে কে কাজ পাবে, কে পাবে না। বিরোধী দলগুলিও উল্লেখযোগ্য ভাবে চুপ। একমাত্র সাধারণ মানুষের সচেতনতা দুর্নীতি কমাতে পারে। ব্লক প্রোগ্রাম অফিসার মাইক সহযোগে গ্রামে গ্রামে প্রচার অভিযানের ব্যবস্থা করতে পারে।

আব্দুল জলিল সরকার, বক্সীগঞ্জ, হলদিবাড়ি।

বিভ্রাট তৈরি করছে ডাকবাক্স

দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি শহরের প্রধান ডাকঘরে ৫টি বড় ডাকবাক্স আছে। এর মধ্যে ২টি লাল, ২টি নীল, ও ১টি সবুজ রঙের। কিন্তু কোন ডাকবাক্স কোন জায়গার তার উল্লেখ নেই। ফলে পত্রপ্রেরকরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। আবার ডাকবাক্সগুলির সামনে রিকশা স্ট্যান্ড ও আবর্জনা জমে থাকায় চিঠি ফেলতে সমস্যা হয়। শিলিগুড়ির রথখোলা মোড়ের ডাকবাক্স নিয়মিত খোলা হয় না।

সুভাষ দে, শিলিগুড়ি

ভোটের রাজনীতি দেশের পক্ষে বিপজ্জনক

কথায় বলে ‘খাঁটি দুধের গাওয়া ঘি’। এখন প্রশ্ন হল ‘গরু খাঁটি হলে তবেই ঘি খাঁটি হওয়া সম্ভব’ আবার ‘ঘি খাঁটি নাও হতে পারে’। উদাহরণ টেনে বলতে হচ্ছে বিহারের মহা জোটের জয়, এটা যেমন অশুভ আঁতাতের জয়, যার মূলে লালুর আরজেডি ও কংগ্রেস দল। গাঁধী ময়দানে শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে লালু পুত্রের শপথবাক্য পাঠে ভুল উচ্চারণ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি যে দফতরের মন্ত্রী হবেন, সেই দফতর যেন ‘চারা ঘোঁটালায়’ পরিণত না হয় সেটা দেখার বিষয়। আরজেডি-র প্রতীক লণ্ঠনের আঁচে নীতীশজির অনুতপ্তবোধ জাগ্রত হবে এবং বিহারের মসনদে একদা এনডিএ-র শরিক হয়ে বসা নীতীশজি ভুলে গেলেন অটলজির আদর্শগত দল বিজেপি-র বন্ধুত্বকে। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির মহানায়ক লালুপ্রসাদ এবং কংগ্রেস—এই দুই দলের বন্ধুত্ব কত দিন সঙ্গ দেয় সেটাই ভাবাবে জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশকুমারকে।

২০১৬ তে বাংলায় মসনদে দ্বিতীয় বারের জন্য বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাঁচ বছরের উন্নয়নের জোয়ারে হাবুডুবু খাওয়া বাংলার মানুষ জন পুনর্নির্বাচিত করবেন কি তৃণমূলকে? দেশে মহাজোটের মেলায় মমতা-বিরোধী জোট হলে সেই জোটে বিজেপি ঠাঁই পাবে না এটা নিশ্চিত। কিন্তু সিপিএম, ফব, আরএসপি থেকে বিধায়ক, পুরপিতা, পঞ্চায়েত প্রধানরা যে ভাবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন স্বার্থসিদ্ধির জন্য, এটাও যেন এক অশুভ যোগদান যা তৃণমূলকে শেষ করার চক্রান্ত বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন কোচবিহারে আগে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল না। স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ভালই পরিচালনা করছিলেন কিন্তু উদয়ন গুহ তৃণমূলে যোগদান করা মাত্রই সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেল। যা তৃণমূলের পক্ষে অশুভ। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কি তাঁদের মাটি ছেড়ে দেবেন? বীজ কেলেঙ্কারির নায়ক উদয়নবাবু ও তার কর্মীরা তৃণমূলের জমিতে বীজ ফেলতে চাইছেন। ক্ষমতা দখলের লড়াই ইতিহাসের বহু পুরনো অধ্যায়। কিন্তু উন্নয়নের নামে বামফ্রন্ট ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান উদয়নবাবুর চাণক্য-চাল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে পঙ্গু করতেই বামফ্রন্ট ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করছেন এঁরা। আবার এ ভাবে এঁরাই এক দিন বামফ্রন্টকে ফিরিয়ে আনতে চলেছেন বলে মনে করেন রাজ্যবাসী অনেকেই। কিন্তু বামপন্থী নেতাদের রক্তে কখনওই ডানপন্থী ভাবধারা সহ্য হবে না। এঁরা তা বিশ্বাসও করেন না। অতএব ভোটঘোটের রাজনীতি রাজ্যের পক্ষে বা দেশের পক্ষে বিপজ্জনক। কথায় বলে এক গাছের ডাল অন্য গাছে লাগে না।

রাজু সরখেল, দিনহাটা।

বাইকবাহিনীর শিকার হওয়া ছাড়া উপায়?

আম্বিয়া, সাম্বিয়া সোহরাব, জনি, সনু, অভি প্রভৃতি মানুষের নাম, দামি ও বিলাসবহুল গাড়ির শব্দ-অহংকারে গণমাধ্যম পরিপূর্ণ। কিন্তু সেই বীর অভিমন্যুর বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর কে রাখে? কুচকাওয়াজের সামরিক মহড়ায় চরম অপ্রত্যাশিত ও অবাঞ্ছিত এই তাজা বীর সেনার মৃত্যু তাকে প্রজাতন্ত্র দিবসের বীর শহিদের স্তরে উন্নীত করেছে। এই মৃত্যুর ঘটনা শুধু নজিরবিহীনই নয়, দ্রুতবেগের বিলাসবহুল গাড়ি কতটা মারণ চেহারা নেয় তার দিকেও অঙ্গুলিনির্দেশ করে। ওই হাই সিকিওরিটি জোনেই যদি এত মারণবেগে গাড়ি চালানো সম্ভব হয়, তাহলে রায়গঞ্জ, ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ি, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জের মতো সাধারণ শহরে লক্ষ লক্ষ মানুষকে দ্রুতগতির বাইকবাহিনীর আক্রমণের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ না করে উপায় কী! এটা নিয়ন্ত্রণবিহীন, পারমিসিভ সোসাইটিতে পরিণত হয়েছে যেখানে কোনও আইনকানুন, পথনিরাপত্তা বিষয়ক নির্দেশ কোনও কাজেই আসে না। দেশের ভেতর যত পথদুর্ঘটনা ঘটে, তার শতকরা ৭০ ভাগই ঘটে বেপরোয়া গাড়ি ও বাইক চালানোর কারণে। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতায় চার মত্ত যুবক মাঝরাতে এত উদ্দাম গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিল যে, রোড ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে গাড়িটি উল্টে যায়। দু’জন যুবককে আধমরা অবস্থায় আরজিকর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে একজন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়। তার পর এই যুবকের সঙ্গীরা হাসপাতাল ভাঙচুর করে, জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রমণ করে। অভিষেক ঝা নামে এক জুনিয়র ডাক্তারকে এমন ভাবে মারা হয় যে তাকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। মফস্সলের রাজ্য ও জাতীয় সড়কে বেপরোয়া গুন্ডার দল ও বাইকবাহিনী গভীর রাতে রাস্তার পাশের ধাবা থেকে মাদকসেবনের পর গাড়ির রেসিঙে নামে। কেউ কেউ দুর্ঘটনায় মারাও যায়। উচ্চবিত্তদের বখাটে, বাউন্ডুলে, উগ্র, উন্মত্ত কিশোর-তরুণ-যুবক বাহিনীর হাতে বাইক, মোবাইল, আইফোন, হেডফোন, প্রভৃতি আধুনিক উপকরণ মারণ অস্ত্রে পরিণত। এই বাইকবাহিনী পরিবার, প্রশাসন, সমাজ, রাষ্ট্রের কাছে এক মূর্তিমান বিভীষিকা। পরিবারগুলি না পারছে এদের ঝেড়ে ফেলতে, না পারছে হজম করতে। রাষ্ট্রও না পারছে এদের বর্জন করতে, ন পারছে আত্তীকরণ করতে। এই বর্বর বাইকবাহিনীর অপরাধের জন্য আদালতেও মামলার পাহাড় জমছে। এদের বলা হচ্ছে সোশ্যাল মিনেস। কলেজের নির্বাচনকে এরা হিংসাত্মক করে তুলছে। মোবাইলে খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলে দলে বাইকবাহিনী কলেজ চত্বরে হাজির হয়ে শুরু করে মারামারি, লাঠালাঠি। প্রশাসন কার্যত অপারগ এদের নিয়ন্ত্রণে আনতে। হেলমেটবিহীন বাইকবাহিনীকে ধরপাকড় করলে রাজনৈতিক নেতারা ‘ছোট ছেলেদের’ ছাড়ার নির্দেশ দেয়। আনন্দবাজার পত্রিকার নদিয়া-মুর্শিদাবাদ সংস্করণে (১৭-১) একটি খবর চোখে পড়ল। ‘নগদে হেলমেট পরিয়ে হাতে গোলাপ’। রঘুনাথগঞ্জে হেলমেটবিহীন বাইক আরোহীদের হাতে লাল গোলাপ ধরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। হেলমেটও পরিয়েছে। রঘুনাথগঞ্জের পুলিশের এই গাঁধীগিরি সারা রাজ্যে দৃষ্টান্ত হওয়া উচিত। কিন্তু প্রশ্ন অন্যত্র। বাজার অর্থনীতির নিয়ম ও চাহিদা। যত বাইক বিক্রি হবে কোম্পানির তত মুনাফা বাড়বে। মুনাফার এই লেলিহান অগ্নিশিখার শিকার সকলেই। হাজার পাঁচ-দশ ক্যাশডাউন করলেই বাকিটা ফিনান্স কোম্পানি দেবে। গ্রাম-শহরের ৭০ ভাগ বাইকই এ ভাবে কেনা। ফলে সমস্যা মিটবে না। তাই মরবে পথচারী, বাইকচালকও।

শান্তনু বসু, মালদহ।

ঝুঁকি নিয়েই দিনহাটা স্টেশন সংলগ্ন এই রেলপথের ধার ঘেঁষে দু’বেলা বসছে বাজার। এর ফলে রোজ যানজট হলেও প্রশাসন নীরব। তথ্য ও ছবি: শুভাশিস দাস, দিনহাটা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE